Spread the love

চিত্রকলা প্রদর্শনের মাধ্যমে ঘটলো দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়

দীপঙ্কর সমাদ্দার :

বাংলাদেশের যশোর শহরে প্রাচ্যস়ংঘে অনুষ্ঠিত হলো “মৈত্রী চিত্রভাষ” নামাঙ্কিত একটি চিত্র প্রদর্শনী ।এই প্রদর্শনীর আয়োজক ছিল সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি পরিষদ। পরিষদের এটা ছিল তৃতীয় আন্তর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে সদ্যপ্রয়াত চিত্রশিল্পী সোহেল প্রাননের মা সালেহা বেগম। পরিষদের পক্ষে  সম্মানিত করা হয় সালেহা বেগমকে।  স্বাগত ভাষণ দেন সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি পরিষদের সহ-সম্পাদক ডক্টর শান্তনু সেনগুপ্ত ,উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী সুশান্ত সরকার , অধ্যাপক শিল্পী এ এফ এম শিপু মনিরুজ্জামান ,  যশোর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম , প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমানসহ দু’দেশের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ। উদ্বোধনের দিন আবৃত্তি পরিবেশন করলেন চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার,  গান, ও নৃত্যে সমাদৃতা সরকার অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল দর্শকবৃন্দের মন জয় করে নিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনসমাগম চোখে পড়ার মতো,উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশের গুণী মানুষেরা চিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং উচ্ছাস প্রকাশ করে জানালেন এমন একটি শিল্প বন্ধন তৈরি হল দুই দেশের মধ্যে এর জন্য ধন্যবাদ জানালেন সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি ও পরিষদ ও বেনজিন খান মহাশয় কে । অনুষ্ঠানের শেষে সংস্থার পক্ষ থেকে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান সাহেবের উপরে একটি তথ্য মূলক সিনেমা দেখানো হয়।যশোর এবং যশোর কেন্দ্রিক আশপাশ শহর থেকে প্রচুর শিল্প প্রেমী মানুষদের আগমন ঘটেছিল প্রদর্শনের প্রথম দিন থেকেই।। শিল্প শিবিরে উপস্থিত হলেন স্থানীয় চিত্রশিল্পীরা তারা অভিভূত হয়ে জানালেন ভারতবর্ষের চিত্রশিল্পীদের ছবির চিন্তাধারা এবং বাংলাদেশের শিল্পীদের চিন্তাধারা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাস বাংলাদেশের একটা ভাষার আবেগের মাস একথা মাথায় রেখে ভারতের চারজন চিত্রশিল্পী ভাষাকে ছবির বিষয়বস্তু করে অসাধারণ ছবি এঁকেছেন ।।

ভারতীয় প্রতিটি চিত্রশিল্পী বাংলাদেশে প্রদর্শনী করতে এসে সমস্ত স্তরের মানুষের ব্যবহারে আবেগে আপ্লুত,বাংলাদেশের আপামর মানুষদের সুন্দর আন্তরিকতার অভিজ্ঞতা জানালেন, বললেন সমগ্র পৃথিবীতে সমস্ত বাঙালিরা যেন একটা মালাতেই গাথা ফুল, কেউ কেউ জানালেন বাংলাদেশকে তারা বিদেশ বলে ভাবতেই পারছেন না কারণ বাঙালির সংস্কৃতি মিশে আছে বাংলাদেশের বুকে।   দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ের অন্য নজির হয়ে থাকলো বাংলাদেশে প্রাচ্য সংঘে “মৈত্রী চিত্রভাষ” চিত্র প্রদর্শনী। প্রাচ্য সংঘের প্রাণপুরুষ বেনজিন খান জানালেন ভারতীয় চিত্রশিল্পীদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা খুবই খুশি। বাংলাদেশের সংস্কৃতির ইতিহাসে এই চার দিনের চিত্র প্রদর্শনী নজির হয়ে থাকলো। চার দিন প্রদর্শনীর শেষ দিনে শিল্পশিবিরে ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক শিল্পীকে মানপত্র ও মেমেন্টো দিয়ে সম্মানিত করলেন পরিষদের পক্ষে শান্তনু সেনগুপ্ত ও বেনজিন খান, সাথে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী স্বপন দেবনাথ ও প্রাচ্য সংঘের সম্মানীয় ব্যক্তিত্বরা। সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি পরিষদের সম্পাদক কাজল সেনগুপ্ত ও সহ-সম্পাদক ডক্টর শান্তনু সেনগুপ্তর সংস্কৃতি মেলবন্ধনের মানসিকতা র জন্যে সমগ্র চিত্র প্রদর্শনী জুড়ে ভারত বর্ষ ও বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে যে শিল্প ও সাংস্কৃতিক মানসিকতার বিনিময় ঘটলো ইতিহাস সেটা মনে রাখবে।শিল্প-শিবিরের বেশ কিছু ছবি বাংলাদেশের গুণী মানুষেরা সংগ্রহ করে রাখলেন ।। প্রদর্শনীতে উল্লেখযোগ্য ছবি র শিল্পীরা হলেন স্বপন দেবনাথ,অনুসূয়া চক্রবর্তী ,সুশান্ত সরকার , ঈশান প্রতীক,শংকর তরফদার, দীপঙ্কর বিশ্বাস, জয়দীপ ভট্টাচার্য, বেণীমাধব সরকার, ইন্দ্রজিৎ নারায়ন, সমীর কর্মকার ,বিশ্বনাথ দাস, বিনয় দোলুই, কাঞ্চন মিস্ত্রি , সুদেষ্ণা বোস, দেবাশীষ পাল, তৃষ্ণা সরকার, বিবেকানন্দ মন্ডল, জিৎ অধিকারী, আফতার আলী, দীপঙ্কর সমাদ্দার, রামানুজ বিশ্বাস । ভাস্কর্য শিল্পী প্রবীর পালের রবীন্দ্রনাথের উপরে কাজটি নজর কেড়েছে।আন্তর্জাতিক চিত্রশিল্পী বিশ্বনাথ দাস এর ছবিটি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে, বিশ্বনাথ বাবু জানালেন  তার আঁকা ছবির মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীজুড়ে শিল্পী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি মেলবন্ধন গড়ে তুলতে চান। বিশ্বনাথ বাবু খুব একটা দামী কথা বললেন ছবি হলো একটা এমন ভাষা যা পৃথিবীর সমস্ত মানুষ বুঝতে পারে অনুভূতির মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *