Spread the love

শিরোনাম :- খোল মনের দোর
কলমে :- রুমা মন্ডল
তারিখ :- ১৯/১১/২০২২

বন্ধ করো দোর
শীতের বাতাস ঢুকবে
খোল মনের দোর
অনুরাগের ছোঁয়া লাগবে।

হিমেল হাওয়ার পরশ
শরীর করে শীতল
উদাস বাউল সুরে
মনটা আজি উতল।

কুয়াশা ঘেরা পথে
শিশির বিন্দু ঝরে
মন হারিয়ে যায়
স্বপ্নের পারাবারে।

গোধূলির রক্তিম রঙ
কত কথা বলে
আকাশের শেষ সীমানায়
সূর্য যখন ঢলে।

বন্ধ করো দোর
শীতল বাতাস ঢুকবে
খোল মনের দোর
ব‍্যকুল হৃদয় জাগবে।

শিরোনাম :- শিশুদের কলতান
কলমে :- রুমা মন্ডল
তারিখ :- ১৯/১১/২০২২

শৈশব হোক আনন্দ মুখরিত সকলের,
ভরে উঠুক প্রাঙ্গণ শিশুদের কলতানে।
নিশ্চিন্তে হেসে খেলে কাটুক সবার শৈশব,
বন্দী যেন না হয় কঠোর শাসনের বেড়াজালে।

বই এর ভারে শৈশব আজ নুব্জ, নতজানু,
চঞ্চলতা হারিয়েছে প্রতিযোগিতার আসরে।
একাকিত্ব ঘিরে ধরেছে অণু পরিবারের আড়ালে,
আধুনিকতা মুছে ফেলেছে রূপকথার গল্প।

কুমিরডাঙা,রুমালচুরি খেলুক কচিকাঁচারা,
ফড়িং ধরতে ছুটুক মাঠে বিষণ্ণ শৈশব।
অনাবিল আনন্দে মেতে উঠুক শিশুরা,
পরিণত মনের জটিলতা না আসে ওদের জীবনে।

শিশুরা প্রাণভরে উপভোগ করুক শৈশবের উৎফুল্লতা,
কোমল মনে লাগে না যেন পঙ্কিলতার দাগ।
শৈশবের সকল আনন্দ, উচ্ছ্বাস নিক লুটেপুটে,
মুখরিত হোক ধরা শিশুদের সুন্দর কলতানে।

শিশু দিবস শিশুদের জন‍্যে বয়ে আনুক শুভ বার্তা,
অভুক্ত থাকেনা যেন কোন শিশু,বন্ধ হোক শিশুশ্রম।
শিশুদের জীবনে প্রজ্বলিত হোক জ্ঞানের আলো,
অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণ হোক প্রতিটি শিশুর।

শিরোনাম :- প্রতিশোধের আগুন
কলমে :- রুমা মন্ডল

প্রতিশোধের আগুন অনেকসময় মনের মধ‍্যে জ্বলে ওঠে,
প্রতিশোধ স্পৃহা কখনও ধিকিধিকি জ্বলে, কখনও বা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
রাগে,ঘৃণায় শরীর ও মন টগবগ করে ফুটতে থাকে জ্বলন্ত চুল্লির প্রতিশোধের গনগনে আগুনে,
মনের সব ভালবাসাটুকু জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।

প্রতিশোধের আগুন মনের যা কিছু ভালো সব গ্রাস করে নেয়,
চেতনা, বিবেক,বুদ্ধি সেই আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলতে থাকে ক্রমাগত।
আর সেই দহন জ্বালায় মানবিকতা বিসর্জিত হয় বারবার,
জ্বলতে,জ্বলতে সেই শিখা মনের কোমলতাকে কঠিন ইস্পাতে পরিণত করে।

প্রতিশোধ স্পৃহা, ঘৃণা,রাগ, মানুষের জীবনে বুদ্ধির বিনাশ ঘটায়,
প্রতিশোধের আগুনে না পুড়ে সেই আগুনে জল ঢেলে দহন জ্বালা প্রশমিত করতে হয়।
প্রতিশোধের আগুনে মনকে না পুড়িয়ে অবহেলা, অবজ্ঞা, দূরত্বের দ্বারা প্রতিশোধ নেওয়া যায়।
জীবনে আরও ভালো কাজ করে
জ্ঞান, বুদ্ধি প্রসারিত করে নিজের উন্নতি ঘটিয়ে মোক্ষম প্রতিশোধ নেওয়া যায়।

শিরোনাম :- মুক্ত বিহঙ্গ
কলমে :- রুমা মন্ডল
তারিখ :- ২০/১১/২০২২

বন্দী জীবন চাইনা আমি আর
চাই পেতে মুক্তির স্বাদ,
ডানা মেলে উড়ে যেতে চাই
যতই হোক বাদ,প্রতিবাদ।

পাখির মতো উড়বো নীল আকাশে
আশ্রয় নেবো গাছের ডালে,
মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে আমি তখন
গাইবো গান ছন্দে,সুরে,তালে।

পেরিয়ে যাবো সাগরের নোনা জল
তরঙ্গেরা চলবে আমার সাথে,
ক্ষণিক অবসরে থামবে ক্লান্ত ডানা
সন্ধ‍্যে নামা সূর্যাস্তের রাতে।

শিকল ভেঙে যাবো উড়ে দূরে
মানবো না আর কোনই মানা,
অচীনপুরে হারিয়ে যাবো আমি
পথটি যতই হোক না অজানা।
[

বিভাগ :- গদ‍্য কবিতা
শিরোনাম :- একরাশ অভিমান
কলমে :- রুমা মন্ডল
তারিখ :- ২১/১১/২০২২

মনের গভীরে জমে থাকা একরাশ অভিমান
যখন নিভৃতে আগলে রাখি বুকের খাঁচায়,
একটু ভালোবাসার ছোঁয়া ও যত্ন পেলেই
অভিমান কান্না হয়ে ঝরে আঁখি হতে ।

প্রতিশ্রুতিরা হারিয়ে যায় যখন ক্রমশ ,
একরাশ অভিমান বাসা বাঁধে হৃদয়ের অলিন্দ, নিলয়ে,
বোঝা না বোঝার খেলায় পরাজয় ঘটে
অভিমানের পাহাড়ে চড়াই উৎরাই পথ দুর্গম।

হৃদস্পন্দনে ব‍্যাঘাত ঘটায় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের আঘাত,
সেই কঠিন আঘাতের তলোয়ার, হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করে
রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত করে হৃদয়ের চারটি প্রকোষ্ঠকে
রাগ,অভিমান,ক্ষোভ মনের বন্ধ ঘরে থরেথরে
সুসজ্জিত থাকে।

হৃদয়ের গোপন ঘরে অভিমান রয় লুকিয়ে
সময় তখন বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে হাতটি ধরে ,
বলে, চলো আমার স্রোতে ভেসে ,ভুলে যাও
সব অভিমান
জীবন তরঙ্গে ভেসে যেতে হয় অভিমান ভুলে।

অভিমান বুকে জমা রেখে জীবন তরি বাইতে হয়
সময়ই সাক্ষী থাকে সব অভিমান ভঙ্গের,
অভিমান ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় হৃদয়ের কক্ষপথে

কর্তব্যে অবিচল থেকে অভিমানকে দিতে
হয় বিসর্জন চিরতরে।

বিষয় :-শিশিরের শব্দ

টুপটাপ ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু
রয়ে যায় শব্দের আড়ালে
আকাশ হতে ঝরে রাতের শেষে
ভালবাসা ছড়ায় প্রতিটি পলে।

বেদনা বিধুর হৃদয়ের হাহাকার
নিঝুম নিশিথের গভীর যন্ত্রণা,
একলা বয়ে চলে নীরবে নীরবধি
বুকের পাঁজরে ব‍্যথার জলকণা।

কান্নাভেজা শিশিরের কলতান থামে
রবির উষ্ণতা ধরণীতে ছড়ায়,
ব‍্যাকুল বেদনা অন্তরে নিয়ে
শিশির ধরণীর বক্ষ‍ে হারায়।

মুক্ত ঝরা প্রভাতের শিশিরবিন্দু
নীরবে, নিশ্চুপে অন্তরালে ঝরে,
গভীর ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়ে
মিলিয়ে যায় সকলের অগচরে।

হতাশার গ্লানি

রুমা মন্ডল

হতাশা যখন ঘিরে ধরে মানব জীবনে
বিষাদের গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খায় মানুষ,
বাঁচার ইচ্ছেটুকুও চলে যায় তার মন থেকে
গহীন অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে ক্রমশ।

হতাশা, বিষাদ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে
নিজেকেই নিজে ঘৃণ্য বলে বোধ হয়,
মেরুদণ্ড ক্রমশ ঝুঁকতে থাকে হতাশার ভারে
ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে যায়।

হতাশ জীবন দূরে হারিয়ে যেতে চায়
লোকালয় তার কাছে অসহ‍্য মনে হয়,
সব বন্ধন ছিন্ন করে পালিয়ে যেতে চায়
মুক্তির স্বাদ পেতে সে মরিয়া হয়ে ওঠে।

কালের স্রোতে ভেসে যেতে থাকে ক্রমশ
হতাশার গ্লানি বিষাদকে প্রলম্বিত করে
খড়কুটো আঁকড়ে ধরেও বাঁচার তাগিদ নেই
আত্মহননকেই শ্রেয় বলে মনে করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *