Spread the love

আনন্দপুর পুলিশের নিস্ক্রিয়তা রাজ্য পুলিশের সক্রিয়তার গাইডলাইন ; কলকাতা হাইকোর্ট 

মোল্লা জসিমউদ্দিন

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে গনধর্ষন বিষয়ক মামলায় কড়া নির্দেশ আদালতের।রাজ্যের সমস্ত পুলিশ সুপারকে সতর্ক করেছে হাইকোর্ট । কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, -‘ আদালতের নির্দেশের পরও কর্তব্যে গাফিলতি হলে পুলিশ ডিরেক্টরেট অটোমেটিক ভাবে  বিভাগীয় তদন্ত শুরু করবে’। আর কর্তব্যে গাফিলতির জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে সাবধানবাণী দিতে হবে ডিজিকে এবং তার সার্ভিস বুকে তা উল্লেখ করতে হবে।  আনন্দপুর ধর্ষণ মামলায় এসপির কর্তব্যে গাফিলতির কথা উল্লেখ করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেন ডিজি। তারপরই এই কঠোর নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার।তবে এই নির্দেশের পাশাপাশি আরও বেশকিছু নির্দেশ এসেছে হাইকোর্টের তরফে । ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – ‘  রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপারদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি করা হয়েছে’।  আদালতের পক্ষে জানান হয়েছে, -‘ এখন থেকে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ এলে কোনও রকম দেরি না করে দ্রুত এফআইআর  করে তদন্ত শুরু করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে গাফিলতি হলে তত্‍ক্ষণাত্‍ জেলা পুলিশ সুপার বা বিভাগীয় কমিশনারদের বিরুদ্ধে স্বত:প্রণোদিত ভাবে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে রাজ্যকে। একই সঙ্গে আদালতের এই নির্দেশের কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বা নির্দেশ জারি করে সব এসপি’দের জানাতে হবে ডিজিকে বলে নির্দেশ।আরও বলা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ রাজ্য মেনে নেওয়ায় তাকে সতর্ক করবে রাজ্য। যদিও আনন্দপুরের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই আদালতের নির্দেশে ওই থানার ওসি এবং বিভাগীয় ডিএসপির বিরুদ্ধে এফআইআর  দায়ের হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।শুধু তা করলেই হবে না। আদালত বলেছে, তাঁকে যে সতর্ক করা হল তা তাঁর সার্ভিস বুকে উল্লেখ করতে হবে। তবে আনন্দপুর ধর্ষণের ঘটনায় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এদিন সারা রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকেও বার্তা দিতে চেয়েছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে ধর্ষণ বা ওই ধরনের যে কোনও গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ এলে কোনও রকম দেরি না করে দ্রুত এফআইআর করে তদন্ত শুরু করতে হবে।শুধু এই নির্দেশই নয়, আদালত জানিয়ে দিয়েছে, যদি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরুর ক্ষেত্রে কোনও রকম গাফিলতি হয়, সেই ক্ষেত্রে তত্‍ক্ষণাত্‍ জেলা পুলিশ সুপার বা বিভাগীয় কমিশনারদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে রাজ্যকে।একইসঙ্গে আদালতের এই নির্দেশের কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বা নোটিস জারি করে সব এসপি-দের জানানোর জন্য অর্ডার দেন ডিজিকে। বিচারপতি  বলেন, সেই নির্দেশ যেন তাঁরা নিজেরা পড়ে, তাতে স্বাক্ষর করে, ফের জেলা পুলিশ সুপারের ডিজির কাছে পাঠাবেন।বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এই নজিরবিহীন এই নির্দেশকে তাত্‍পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আইন হল। ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ রাজ্য মেনে নিয়েছে। আনন্দপুরের ওই গণধর্ষণে অভিযোগ না নেওয়ার ঘটনায় আদালতের নির্দেশে থানার ওসি এবং বিভাগীয় ডিএসপির বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানা এলাকায় কয়েক মাস আগে জমি বিবাদকে ঘিরে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ ছিল, ওই মহিলার অভিযোগ নিতে দেরি করেছিল পুলিশ। এর আগে ওই ঘটনার পর আনন্দপুর থানার ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।  আনন্দপুর পুলিশের নিস্ক্রিয়তার ঘটনা রাজ্য পুলিশের সক্রিয়তাদানে গাইডলাইন বেঁধে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *