Spread the love

একাধিক বকেয়া মামলার নিষ্পত্তি হলো হাওড়ার লোক আদালতে

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশে আদালতের সংখ্যা ও বিচারপতির সংখ্যা আদৌ বাড়ছেনা। ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি মামলার সঙ্গে সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, পারিবারিক বিবাদ, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরােধ সহ বিভিন্ন তুচ্ছ দেওয়ানি মামলার পাহাড় জমে যাচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া হয়ে যাচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি ও খরচ সাপেক্ষ। তাই কম সময়ে ও কম খরচে ভারতের বিচারব্যবস্থার বিরােধ নিষ্পত্তির এক অভিনব বিকল্প রূপ হলো লোক আদালত। লক্ষ্য দ্রুত ন্যায়বিচার দেওয়া ও বিচার ব্যবস্থার প্রসার ঘটানো। একইসঙ্গে অন্যান্য আদালতের উপর চাপ কম হবে। বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯৮২ সালে লোক আদালত গঠিত হয়। কিন্তু ১৯৮৭ সালে লােক আদালত স্বীকৃতি লাভ করে। সঠিক প্রচারের অভাবের জন্য সেভাবে জনপ্রিয়তা লাভ না করলেও ধীরে ধীরে লোক আদালতের প্রসার ঘটছে।

 গত ১১ ই ফেব্রুয়ারি সমগ্র দেশের সঙ্গে হাওড়া জেলা আদালতেও লোক আদালত বসে। হাওড়া জেলা দায়রা বিচারক তথা জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র কর্মকারের নেতৃত্বে জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রের সচিব সুপর্ণা সরকারের পরিচালনায় এই বিশেষ লোক আদালত শিবিরটি হয়। হাওড়া জেলা আদালতের ১০ নং বেঞ্চে আয়োজিত এই আদালতের সদস্যরা হলেন শ্রীমতী সমতা দাস ( বিচারক), অশোক সাহা; (আইনজীবী) ও মোল্লা জসিমউদ্দিন ( সমাজসেবী)।

হাওড়া জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্র সূত্রে জানা যাচ্ছে - এদিন ১৫৮৬ টি অভিযোগের মধ্যে ৯০০ টির নিষ্পত্তি ঘটেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো ছিল ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণ সংক্রান্ত। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও ঋণ খেলাপিদের সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতে ১৬ টির মধ্যে ১৫ টি মামলার নিস্পত্তি ঘটেছে এবং যার পরিমাণ প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। ঋণ মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ম্যানেজাররা খুবই আন্তরিক ছিলেন। 

লোক আদালতের অন্যতম সদস্য, পেশায় সাংবাদিক, মোল্লা জসিমউদ্দিন বললেন - সত্যি এএক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। একদিনে বিপুল সংখ্যক মামলার নিষ্পত্তি সাধারণ মানুষের সঙ্গে সঙ্গে আদালতের পক্ষেও সুখবর। আশাকরি আগামীদিনেও এভাবেই আরও অনেক মামলার নিষ্পত্তি হবে। প্রসঙ্গত এর আগেও জসিমবাবু লোক আদালতের সদস্য হিসাবে কাজ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *