Spread the love

সিবিআইয়ের পর বেতন বন্ধের নির্দেশ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য,

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

সিবিআইয়ের পর এবার বেতন বন্ধের নির্দেশ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দরবারে রাজ্য।আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত এর ডিভিশন বেঞ্চে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছে যে, কমিশনের পেশ করা তালিকার ৫৪২ জনের নিয়োগ খতিয়ে দেখা হোক। যদি দেখা যায়, তাঁদের নিয়োগ ২০১৯ সালের ৪ মে’র পর হয়েছে, তা ‘ভুয়ো’ হিসেবে বিবেচনা করে তাঁদের বেতন বন্ধ করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃপক্ষ ।হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে এই নির্দেশের পরই ৫৪২ জনেরই মধ্যে ৩ জন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা বিচারাধীন হওয়া সত্ত্বেও কেন সিঙ্গল বেঞ্চ বেতন বন্ধের নির্দেশ দিল? কেন সিঙ্গেল বেঞ্চে তাদের অভিযোগ শোনা হলো না? কলকাতা হাইকোর্টের  ডিভিশন বেঞ্চে আগামী  সোমবার শুনানি রয়েছে ।এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলা নিয়ে এই মুহূর্তে হাইকোর্টে দুটি মামলা বিচারাধীন। একটি বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে, আরেকটি বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে। এই বেঞ্চই রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই অনুসন্ধানের  নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিযুক্ত হওয়া কর্মীদের বেতন বন্ধের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কোনও আবেদন করেনি রাজ্য। সেই কারণে বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি চলছে। এবং সেই মামলায়  বৃহস্পতিবার সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায়, যদি ৫৪২ জনের নিয়োগ ২০১৯এর ৪ মে’র পর হয়ে থাকে, তাহলে কমিনকে তা অবৈধ চিহ্নিত করে নিয়োগ বাতিল করতে হবে। বন্ধ হয়ে যাবে তাঁদের বেতন।২০১৬ সালে গ্রুপ ডি কর্মী হিসাবে প্রায় ১৩ হাজার নিয়োগের সুপারিশ করে রাজ্য। সেইমতো পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ নেয় সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন । তারপর প্যানেল তৈরি করে। ২০১৯ সালে ওই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। অভিযোগ, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রচুর নিয়োগ করেছে কমিশন। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে মামলা করা হয় হাইকোর্টে। পরে দেখা যায় ২৫ জন নয়, প্রায় ৫০০ জনের নিয়োগে গরমিল রয়েছে।গত বৃহস্পতিবার এই তালিকা আরও দীর্ঘায়িত হওয়ায় নতুন নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।গ্রুপ ডি মামলায় রাজ্যের সাময়িক আইনী স্বস্তি চব্বিশ ঘণ্টাও পার হলোনা!  গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আপিল পিটিশনে ‘সিবিআইয়ের অনুসন্ধান’ নিয়ে তিন সপ্তাহের অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে থাকে। তবে মূল মামলায় কোন হস্তক্ষেপ করেনি।তাই গত বৃহস্পতিবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে গ্রুপ ডি মামলায় মামলাকারী ৫৪২ জন অবৈধ কর্মীর খতিয়ান তুলে ধরলে তাতে বিচারপতি এই ৫৪২ জন কর্মীর নিয়োগের  বৈধতা যাচাই করে বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন এসএসসি কর্তৃপক্ষ কে।পাশাপাশি মামলাকারীর আইনজীবীর আর্জি মেনে এই মামলায় রাজ্য অর্থ দপ্তর কে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে এই মামলায়। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১০ ডিসেম্বর। গত বুধবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত এর ডিভিশন বেঞ্চে তিন সপ্তাহের জন্য অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি হয় এসএসসি নিয়োগে সিবিআই অনুসন্ধান নিয়ে।কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য।তাতে সাময়িক আইনী স্বস্তি মিললো রাজ্যের।স্কুল সার্ভিস কমিশনের  গ্রুপ ডি  পদে নিয়োগের মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের  সিঙ্গল বেঞ্চ। গত বুধবার  এই নির্দেশিকার (সিবিআই অনুসন্ধান) ওপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।গত বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল। তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট।  আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ।প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ২৫ জনের নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ থেকেই এই মামলা দাখিল হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। স্কুল সার্ভিস কমিশন আদালত কে জানায়, ‘ ওই ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ করেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন ‘। তাহলে কিভাবে নিয়োগ হল সুপারিশ ছাড়া, কিভাবে ওই ২৫ জন দু বছর ধরে চাকরি করছে সেই প্রশ্ন এজলাসের শুনানি পর্বে আসে। এরপরই সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নির্দেশে  প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল ছিল সিবিআই এর অভ্যন্তরে । এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় স্কুল সার্ভিস  কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । তিন সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তাই প্রমাণ লোপাটের বিষয়টিও গুরত্ব দেন বিচারপতিরা।বুধবার  দুপুর তিনটে  মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের। প্রমাণ লোপাটের কথা মাথায় রেখে আদালতের তরফে বলা হয়েছে, কমিশন ও বোর্ড সব নথি জমা দেবে  হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসে।যে গুলি সিবিআই কে দেওয়ার কথা ছিল। সিল কভারে আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।এই মামলায় ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। যে ২৫ জনের বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছে বুধবার  তাঁদের আইনজীবী  আদালতকে জানান, ‘সিঙ্গল বেঞ্চ অভিযুক্তদের মামলায় বলতে না দিয়েই বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কোনও জনস্বার্থ মামলা নয়। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বলতে দিতেই হবে।’ওইদিন মামলার শুনানিতে  রাজ্যের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল  বলেন, – ‘৪ মে ২০১৯-এ প্যানেল মেয়াদ উত্তীর্ণ করে থাকে । দুটি সংস্থা দু ধরনের তথ্য দিচ্ছে। এখানে আপত্তি ওঠে। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে যাতে তদন্ত করানো যায়, এই আর্জি জানানো হয় রাজ্যের তরফে।উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট। পরে কমিশন জানায় তারা কোনও সুপারিশ করেনি। এদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ হল এই নিয়োগের ‘অ্যাপয়েন্টিং বডি’, আর কমিশন হল ‘রিক্রটমেন্ট বডি’। আদালতকে পর্ষদ জানায়, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তারা এই নিয়োগ করে। নিয়োগ নিয়ে দুই সরকারি দফতরের দ্বন্দ একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপর ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি। পরে ওই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।গত বুধবার  কলকাতা হাইকোর্ট এর ডিভিশন বেঞ্চ এই সিবিআই অনুসন্ধানের উপর তিন সপ্তাহের অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে থাকে।  কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তে আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের  সিঙ্গেল বেঞ্চে ডিভিশন বেঞ্চের মূল মামলায় কোন স্থগিতাদেশ না থাকায় মামলাকারীর তরফে ৫৪২ জন কর্মীর খতিয়ান তুলে ধরলে তাতে বিচারপতি এইসব কর্মীর বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন এসএসসি কর্তৃপক্ষ কে। পাশাপাশি রাজ্য অর্থ দপ্তর কে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে এই মামলায়। আগামী ১০ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এর ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি কর্তৃপক্ষ বেতন বন্ধের নির্দেশ নিয়ে আপিল পিটিশন দাখিল করে, যা আদালত গ্রহণ করে থাকে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *