Spread the love

রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল পদ থেকে হঠাৎ ইস্তফা আইনজীবী কিশোর দত্তের

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

মেয়াদ ছিল দশবছরের,তবে সাড়ে চার বছরেই ইতি টানলেন কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী কিশোর দত্ত। মঙ্গলবার দুপুরে এক হেভিওয়েট মামলার শুনানি পর্বে অংশগ্রহণ করে পরবর্তীতে রাজ্যপাল, আইনমন্ত্রী, মুখ্যসচিব কে এডভোকেট জেনারেল পদে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েদেন।ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এই পদত্যাগ। তবে অত্যন্ত দ্রুততাই রাজ্যপাল তাঁর ইস্তফাপত্রটি সবার আগে গ্রহণ করে টুইট করে জানিয়ে দেন রাজ্যবাসী কে।২০১৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে এডভোকেট জেনারেল পদে যোগ দিয়েছিলেন আইনজীবী  কিশোর দত্ত। সাড়ে চার বছর ধরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদে ছিলেন তিনি। এদিন আচমকাই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন – ‘ব্যক্তিগত কারণে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হোক। পশ্চিমবঙ্গের অ্যাডভোকেট জেনারেল পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।’ তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাজ্যপাল। টুইট করে সেকথা নিজেই জানিয়েছেন তিনি।তবে রাজভবনকে দেওয়া চিঠিতে নিজের পদত্যাগের কারণ খোলসা করেননি আইনজীবী কিশোর দত্ত। বলেছেন ব্যক্তিগত কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এই পদত্যাগের কারণ নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে নানা মহলে।তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই নিয়ে চতুর্থবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনা ঘটল।যা রাজ্যের শাসক দলের আইনজীবী সেলের মধ্যে চাঞ্চল্য পড়ে গেছে।২০১১ সালে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে  ক্ষমতায় আসার পর অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন আইনজীবী  অনিন্দ মিত্র। তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দেন। এরপর ২০১৩ সালে হাইভোল্টেজ পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে যখন তোলপাড় চলছিল সেসময় এই পদ থেকে ইস্তফা দেন আইনজীবী বিমল চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তী অ্যাডভোকেট জেনারেল হয়েছিলেন  আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র। তিনিও এই পদে এক বছর কাটাতে পারেননি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে কিশোর দত্তই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন তৃণমূল আমলে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রাজ্যের মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই কিশোর দত্ত। মঙ্গলবার দুপুরেও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে যখন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদকের মামলা চলছিল কিশোর দত্তকে দেখা গিয়েছিল ভার্চুয়াল মাধ্যমে। তার পরেই হঠাত্‍ এই ইস্তফার সিদ্ধান্ত। কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনের আগেই অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ালেন কিশোর দত্ত। যা হাইকোর্টের আইনজীবী মহলের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজ্য সরকারকে আর খুশি করতে পারছিলেন না কিশোর দত্ত? না  কি তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল? বিশেষত সম্প্রতি একাধিক মামলায় হাইকোর্টে রাজ্য সরকারকে ধাক্কা খেতে দেখা গেছে। নন্দীগ্রাম মামলা থেকে শুরু করে নারদা মামলা, মুখ্যমন্ত্রীর জরিমানা করা হয়েছে একাধিকবার। অনেকেই মনে করছেন, এসব অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে কিশোর দত্তের বিরুদ্ধে গেছে। তার জন্য হয়তো  আজকের এই ইস্তফা এডভোকেট জেনারেল পদে থাকা কিশোর দত্তের।তবে যাইহোক আগামী কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে এই ইস্তফাপ্রদান আইনজীবীদের প্রচারে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *