Spread the love

রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল উত্তর চব্বিশ পরগণার ‘আমরা মানবিক’

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

  ওদের  সাধ অনেক কিন্তু সাধ্য সীমিত। সেই সীমিত সাধ্যকে পাথেয় করেই ওরা গত পাঁচ বছর ধরে বারবার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কারণ ওরা নব যৌবনের প্রতীক ছাত্রদলের প্রতিনিধি। কেউ কেউ হয়তো সদ্য কলেজের চৌকাঠ অতিক্রম করে বৃহত্তর কর্মজগতে প্রবেশ করেছে। ওরা উত্তর চব্বিশ পরগণার দত্তপুকুরের একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন 'আমরা মানবিক' এর সদস্য যারা সারা বছর মানুষের পাশে ও সাথে থাকার চেষ্টা করে। ওদের হাত ধরেই ৩০ শে অক্টোবর আমডাঙা মোড়ে আয়োজিত হয় এক স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের। এটি ওদের দ্বিতীয় প্রয়াস।

  অল ইন্ডিয়া ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের ভ্রাম্যমান রক্ত সংগ্রহকারী ভ্যানের মাধ্যমে শিবির থেকে প্রায় চল্লিশ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ছিল বেশি এবং রক্ত সংগ্রহকারী দলের জনৈক সদস্যের মন্তব্য - এটা খুবই ভাল লক্ষণ।সংগৃহীত রক্ত এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

   নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী রক্তদানের শেষে রক্তদাতাদের হাতে একটি করে ইকো ফ্রেন্ডলি কাগজের পেন যার কালি ফুরিয়ে গেলে তার মধ্যে থাকা বীজ থেকে নতুন গাছ হবে, সার্টিফিকেট ও একটি করে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। 

'আমরা মানবিক' এর সদস্যরা ছাড়াও বেশ কয়েকজন পথ চলতি মানুষ রক্তদান করতে এগিয়ে আসে। আকাঙ্খা, সৃজা, বরেন্দ্র, হৃদয়ের মত সদ্য আঠারো বছরে পা দেওয়া সাত জন তরুণ-তরুণী রক্ত দেওয়ার সুযোগ পেলেও নিয়মের বেড়াজালে আটকে যায় তার থেকে বেশি সংখ্যক সদস্য। ফলে স্বাভাবিক কারণেই একরাশ বিষণ্নতা গ্রাস করে তাদের। 

   রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক অরুণ কুমার ঘোষ, তপন ঘোষ, শিক্ষিকা ও বিশিষ্ট সমাজসেবী মমতা গাঙ্গুলি, পান্নালাল চক্রবর্তী, বাপি মালাকার, পায়েল দে সহ এলাকার বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।  উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি নলিনী হালদার  ও অন্যান্য  কর্মকর্তারা। ভয় ও কুসংস্কার ভেঙে মুক্ত মনে রক্ত দান করার জন্য তারা সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান। 

   সংস্হার পক্ষ থেকে  উপস্থিত ছিলেন-

পার্থ, প্রিয়া , সায়েরী , সুব্রত, সুনীতি, সৈকত, পিয়ালী, রিঙ্কু, প্রিয়াঙ্কা, বিদিশা, শর্মিষ্ঠা, সুস্মিতা, অদিতি, স্নেহা, শুক্লা, মিতু , প্রেম, সুজাতা, কৌশিক, সৃজা, সায়ন , মামন, হৃদয়, স্মৃতি , বিশাল, রুপম, সান্তা , আকাশ, আকাঙ্ক্ষা, নন্দনা , বীথিকা , নমিতা , তুলিকা , অঞ্জলী, পিণ্টু, অদিতি সহ প্রায় সমস্ত সদস্য-সদস্যরা।

  সদ্য কলেজের চৌকাঠে পা রাখা   'আমরা মানবিক' এর অন্যতম জুনিয়র সদস্যা অদিতি গাইন বলল -  আমাদের সামর্থ্য কম হলেও ইচ্ছে অদম্য। তবে  বহু সহৃদয় ব্যক্তিকে পাশে পাওয়ার জন্য আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। আশাকরি আগামী দিনে আরও বহু সহৃদয় মানুষ আমাদের পাশে থাকবেন এবং  আমরাও আরও বেশি সংখ্যক সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের হাতে খাদ্য-বস্ত্র তুলে দিতে পারব। 

 প্রসঙ্গত নিজেদের সীমিত সামর্থ্য ও সঙ্গে সহৃদয় মানুষের সহযোগিতায় পুজোর সময় তারা দুই শতাধিক অসহায় শিশুর হাতে নতুন পোশাক তুলে দেয়। ঐসব শিশুদের  জন্য 'মানবিক পাঠশালা' চালু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *