Spread the love

সঞ্জয় হাল্দার,

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা, বিজেপির অপপ্রচার, কুৎসার প্রতিবাদে পুরুলিয়া ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত একটি বিশাল জনসভা সুসম্পন্ন হলো। সংবিধান দিবস উপলক্ষে ভারতের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্য দান করে, তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এই সভা শুভারম্ভ হয়।এই জনসভায় উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া তার বক্তব্যের মাধ্যমে জানান ভারতীয় জনতা পার্টির একটাই লক্ষ্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী এবং সরকারের প্রতি কূৎসা রটনা করা, কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার করে রাজ্যের মা ,মাটি মানুষের সরকারকে বিব্রত করা। একদিকে কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাওনা 1 লক্ষ 18 হাজার কোটি টাকা আটকে রেখে রাজ্য সরকারের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করা, অন্যদিকে সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজকর্ম যাতে বন্ধ হয়ে যায় সেই চেষ্টা করা। পশ্চিমবঙ্গের মা মাটি মানুষের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের কোন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বন্ধ হতে দেননি। এই দিন এই মহতী জনসভার অন্যতম বক্তা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী ডাক্তার মানস রঞ্জন ভূঁইয়া তার বক্তব্যে সম্প্রতি হুড়া থানার লধুড়কা ময়দানে বিজেপির জনসভায় মিঠুন চক্রবর্তীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেন ,”মিঠুন চক্রবর্তী প্রথমে নিজেকে নকশাল সমর্থক পরিচয় দিতেন, তারপরে সিপিআইএমের হাত ধরে নিজেকে মার্কসবাদী প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন, বামফ্রন্ট সরকারের পতনের পরে মিঠুন চক্রবর্তী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন, স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ করে পাঠান । তারপরে মিঠুন চক্রবর্তীর কি এমন যন্ত্রণা হলো যে সরাসরি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করতে হলো? “উনি বলেন “মিঠুন চক্রবর্তী পুরুলিয়াতে এসে বড় বড় কথা বলে গেছেন এখানে নাকি কোন উন্নয়ন হয় না, ওনার সাথে উদ্দেশ্যে বলতে চাই ,আপনি পুরুলিয়াতে একটি ক্যাম্প করুন এবং ক্যাম্পে উপস্থিত মানুষকে এসে জিজ্ঞাসা করুন যারা যারা কন্যাশ্রী পাচ্ছেন, লক্ষীর ভান্ডার পাচ্ছেন, স্বাস্থ্য সাথী সুবিধা পাচ্ছেন, লোকশিল্পী ভাতা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ,তারা কি সবাই তৃণমূলের? তার মধ্যে কি কোন বিজেপির কেউ নেই? উন্নয়নের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতি, ধর্ম , রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে সকলের জন্য তার উন্নয়নের প্রকল্প গুলি জনগণের সামনে এনেছেন, যার সুবিধা অন্যান্য পার্টির লোকেদের মত ,ভারতীয় জনতা পার্টির লোকেরাও পাচ্ছেন, এর চেয়ে সত্যি কথা আর কিছু হয় না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বঞ্চনার কথা বলতে গিয়ে উনি জানান পশ্চিমবঙ্গের 100 দিনের কাজের বকেয়া 6750 কোটি টাকা বিগত এক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে মেটাচ্ছে না, বিভিন্ন প্রকল্পের পাওনা বাবদ এক লক্ষ আঠারো হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র সরকার পশ্চিমবঙ্গকে দিচ্ছে না। ভারতের সংবিধান দিবসে দেশের পবিত্র সংবিধানকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে ভারতীয় জনতা পার্টি । এর থেকে বড় লজ্জা আর কিছু হয় না। কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি গুলিকে কাজে লাগিয়ে ,অপব্যবহার করে অভিষেক ব্যানার্জি এবং তার পরিবারকে ক্রমশ বিব্রত করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাননীয়া মন্ত্রী সন্ধ্যা রানী টুডু তার বক্তব্যে জানান “ভারতীয় জনতা পার্টি শুধু কুৎসা করতেই জানে, উন্নয়নের প্রশ্নে তারা নিশ্চুপ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তার মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দিয়ে যাচ্ছেন, রাজ্য বাসীর জন্য জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত জনমুখী প্রকল্পের ব্যবস্থা করে দিয়েছে মা মাটি মানুষের সরকার।”
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে জানান “যখন মাওবাদীদের লাল সন্ত্রাসে পুরুলিয়ার মাটি রক্তাক্ত হচ্ছিল তখন মিঠুন চক্রবর্তী আপনি জঙ্গলমহলে আসেননি কেন?পুরুলিয়া জেলায় আসেন নি কেন? ভারতীয় জনতা পার্টির নেতারা ধনী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন করেন। গরিব মানুষের অধিকারের কথা তাদের মনে পড়ে না গরিব মানুষের কষ্ট তারা দেখতে পান না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা মাটি মানুষের সরকার রাজ্যের সকল মানুষের জন্য ফ্রি রেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গরিবদের জন্য ফ্রি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করুক।”
এই দিন উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাননীয়া মন্ত্রী সন্ধ্যা রানী টুডু,পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় ব্যানার্জি, বিধায়ক রাজীব লোচন সোরেন, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, প্রাক্তন সাংসদ ডঃ মৃগাঙ্ক মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সহ-সভাপতি বিষ্ণু চন্দ্র পাল, রথীন্দ্রনাথ মাহাতো, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভানেত্রী সুমিতা সিংহ মল্ল, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদিকা নমিতা সিং মুড়া, আই এন টি টি ইউ সি র পুরুলিয়া জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমার,পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মেন্টর অঘোর হেমব্রম, কো-মেন্টর জয় ব্যানার্জী, পুরুলিয়া জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেঘদূত মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি কিরিটি আচার্য, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল এসটি সেলের সভাপতি কলেন্দ্র মান্ডি, জয় হিন্দ বাহিনীর পুরুলিয়া জেলা সভাপতি মানিক মিশ্র, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল হাই স্কুল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি বিমলকান্ত মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল ওবিসি এবং এস সি সেলের সভানেত্রী মীরা বাউড়ী, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শেখ রহিমামিম,বঙ্গ জননী কমিটির পুরুলিয়া জেলা সভানেত্রী নিয়তি মাহাতো, পুরুলিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি, ভাইস -চেয়ারম্যান ময়ূরী নন্দী, রঘুনাথপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান তারিনী বাউরী, প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ী, তৃণমূল কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা হাজারী বাউড়ী, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হলোধর মাহাতো, পুরুলিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ঋতুরাজ দে এবং সৈয়দ ফয়জল কামাল (শাহী), পুরুলিয়া শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গৌরব সিংহ, পুরুলিয়া শহর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী ববিতা ওঝা এবং সহ -সভানেত্রী কাকলি ভট্টাচার্য, পুরুলিয়া পৌরসভার বিশিষ্ট কাউন্সিলার বৈদ্যনাথ মন্ডল, ইন্দ্রানী দে, দুর্বা দত্ত, রবি শঙ্কর দাস,সমীরণ রায়,প্রদীপ ব্যানার্জি সহ পুরুলিয়া পৌরসভার বিভিন্ন কাউন্সিলার, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের , মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের , আই এন টি টি ইউ সি, তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস আইটি সেলের সমস্ত ব্লক সভাপতি/সভানেত্রী, জেলা নেতৃত্ব, সমস্ত শাখা সংগঠনের নেতা এবং নেত্রীর গৌরবময় উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এদিন সভাতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *