Spread the love

বর্ধমানের হোমের ছেলেমেয়েদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা,

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,

 বড়দিনের আনন্দে সবাই যখন মাতোয়ারা ওদের তখন হোমের চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ পরিবেশে আনন্দ করতে হচ্ছে। ওরা পিতৃ-মাতৃহীন। এক কথায় মা-বাবার স্নেহ বঞ্চিত ওরা  অনাথ। ফলে আনন্দ সীমিত। কিন্তু এবার বড়দিনে অর্থাৎ ২৫ শে ডিসেম্বর সেই আনন্দকে আরও বৃদ্ধি করার জন্য নতুন শীতবস্ত্র নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ালো  কলকাতার লেকটাউনের এ.কে.বি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও গুসকরা রামধনু কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। তাদের যৌথ উদ্যোগে পূর্ব বর্ধমানের বামবটতলা  সংলগ্ন একটি সরকারি শিশু হোমের প্রায় ত্রিশ জন শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হলো নতুন সোয়েটার ও একটি করে কেক। প্রসঙ্গত হোমটি কেবলমাত্র মেয়েদের জন্য। যদিও হোমের নিয়মানুযায়ী শীতবস্ত্রগুলি সরাসরি শিশুগুলির হাতে তুলে দেওয়া যায়নি। সেগুলি হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

       দীর্ঘদিন ধরে সমাজ সেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের উপস্থিতির উজ্জ্বল ছাপ রাখলেও কলকাতার সংস্হাটির পক্ষে সর্বদা কলকাতা থেকে দূরবর্তী স্হানে সরাসরি হাজির হওয়া সম্ভব হয়না। সেক্ষেত্রে তারা স্হানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্হাগুলির সাহায্য নিয়ে থাকে। বিভিন্ন সূত্রে গুসকরার সংস্হাটির সেবামূলক কাজের খবর পেয়ে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য তাদের দিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কলকাতার সংস্হাটি। তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে গুসকরার সংস্হাটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে শীতবস্ত্রগুলি বিতরণের জন্য হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। একইসঙ্গে বড়দিনের প্রথা হিসাবে শিশুগুলিকে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের হাতে কেকও তুলে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত গুসকরার সংস্হাটি গত ১০-১২ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় দুস্থদের আহার, বস্ত্র বিতরণ সহ বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ করে চলেছে।

       এ.কে.বি সংস্হার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে রামধনু কমিউনিটির সম্পাদক বিপ্লব ভাণ্ডারী বললেন - আমাদের টিমের সদস্য আছে নয়জন। আমরা বিভিন্ন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সহৃদয় মানুষ পাশে থাকলে আরও বেশি সংখ্যক দুস্থ মানুষের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারব। 

         এ.কে.বি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যা বহ্নি দেবী বললেন - আমাদের লক্ষ্য বেশি সংখ্যক দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু কলকাতা থেকে দূরবর্তী এলাকার মানুষের পাশে সরাসরি দাঁড়ানোর সুযোগ আমাদের থাকেনা। তাই অনেক সময় স্হানীয় যেসব সংস্হা সত্যিকারের সেবার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে তাদের সহযোগিতা নিয়ে থাকি। যেমন নিলাম গুসকরার সংস্হাটির। আগামী দিনে অন্যান্য সংস্হার সাহায্য নেব। আমাদের বিশ্বাস সবার মিলিত প্রচেষ্টায় একদিন হয়তো শীত বস্ত্রহীন অসহায় মানুষগুলো নতুন শীতবস্ত্র পাবে।

        নিয়মের বেড়াজালে পড়ে হোম কর্তৃপক্ষ যে খুবই খুশি সেটা তাদের চোখ মুখের ভঙ্গি দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়। তবে দুই স্বেচ্ছাসেবী সংস্হার কর্ণধারদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ার পার্সন লিয়াকত আলি বললেন- বড়দিনে কেক ও নতুন সোয়েটার পেয়ে হোমের ছেলেমেয়েগুলি খুব খুশি। চার দেওয়ালের মধ্যে থেকেও ওরা এটা অনুমান করতে পারছে যে সমাজের একটা বড় অংশ ওদের কথা ভাবছে। মা-বাবার মত স্নেহ ভালবাসা দিতে না পারলেও নতুন বস্ত্রের মধ্যেই ওরা হয়তো মা-বাবার স্পর্শ পাবে। আমরা চাই আরও অনেক সংস্হা ওদের পাশে এসে দাঁড়াক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *