Spread the love

নাড়া পোড়ানোর সমস্যা চলছেই

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

       পরিস্থিতির কোনোরকম পরিবর্তন নাই। ব্লক ও স্হানীয় প্রশাসনের সতর্কবার্তা, কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ  উপেক্ষা করে 'ধানের গোলা' পূর্ব বর্ধমানের প্রায় সর্বত্রই চলছে নাড়া পোড়ানোর কাজ। এরফলে চাষের জমির ক্ষতি তো হচ্ছেই, একইসঙ্গে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

        বর্তমানে যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা হয়। ফলে ধান গাছের গোড়ার অংশ এবং টুকরোগুলো মাঠের মধ্যেই পড়ে থাকে। যন্ত্র ব্যবহারের আগে ধান গাছের টুকরো বা শেষাংশ  লাঙল দিয়ে চষে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হতো এবং এগুলো পচে গিয়ে জৈব সার হিসাবে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করত।

     এখন সেই অংশগুলি জমিতেই পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরফলে মাটিতে বসবাসকারী ও চাষের পক্ষে উপকারী জীবগুলি মারা যাচ্ছে। ইঁদুর ক্ষেতের ফসল যতটা খেয়ে বা অন্যভাবে নষ্ট করছে তার থেকে বেশি উপকার করে। মাটির বেশ কিছুটা গভীরে জমিতে সৃষ্ট ইঁদুরের গর্তে জল ও অক্সিজেন প্রবেশের ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়ছে।  নাড়া পোড়ানোর ফলে, শুধু ইঁদুর কেন অন্যান্য উপকারী জীবগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং জমির স্বাভাবিক উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছেনা। এছাড়া নাড়া পোড়ানোর ফলে জমির উপরের অংশের মাটি পুড়ে যাচ্ছে এবং সেগুলি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। মাটির তৈরি হাঁড়ি, কলসি পোড়ানোর পর সেগুলি ভেঙে যেমন পুনরায় মাটি ফেরত পাওয়া যায়না তেমনি নাড়া পোড়ানোর ফলে ক্ষেতের মাটির অবস্থা একই হয়। 

        চাষীদের বক্তব্য - ধান গাছের টুকরোগুলো সরাতে গেলে অতিরিক্ত খরচ হবে। যারজন্য তারা সেই চেষ্টা করেনা। জমিতেই সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয় । 

         অভিজ্ঞদের বক্তব্য - বছরে একবার মাইকে করে বা ফ্লেক্স টাঙিয়ে প্রচার করলে নাড়া পোড়ানোর সমস্যা দূর হবেনা। পঞ্চায়েত স্তরে বুথে বুথে নিয়মিত প্রচার করলে হয়তো এই সমস্যা দূর হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *