Spread the love

দেওঘর রোপওয়ের রোহর্ষক উদ্ধারকাজ শেষ ।উদ্ধার করতে গিয়ে পাথরে আছড়ে পড়ে মৃত আরও দুই

কাজল মিত্র :- ১০ এপ্রিল রামনবমীর বিকেলে ঝাড়খণ্ডের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই পর্যটন স্থলে একসঙ্গে অন্ততপক্ষে ২৬ টি ট্রলিতে যাত্রী চাপিয়ে রওয়না করিয়ে দেওয়া হয়েছিল । অতিরিক্ত এই ভার বহন করতে না পেরে রোপওয়ের কেবল ছিঁড়ে যায় । এর ফলে একটি ট্রলি সরাসরি পাহাড়ের পাথরে এসে ধাক্কা মারে । তাতে দুজনের মৃত্যু হয় । অন্যদিকে মাঝ আকাশে লটকে থাকেন অন্ততপক্ষে ৮০ জন । তাদের মধ্যে ৪০ জনকে ওইদিনই উদ্ধার করে আনে সেনাবাহিনী , বায়ুসেনা , জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

তবে সেদিন সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ চালানো সম্ভব হয়নি এবং তখনও ৪৮ জন যাত্রী তারে ঝুলে ছিলেন । ১১ এপ্রিল সকাল থেকে উদ্ধারকাজ আবার শুরু হয় । কিন্তু হেলিকপ্টার সেইভাবে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারছিল না কারন পাহাড়ের একদিক থেকে অন্যদিকে প্রচুর তার বিছানো আছে । দিনভর চেষ্টা করে ৩৪ জনকে নামিয়ে আনতে পারে উদ্ধারকারী দল । এদিনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায় যখন এক ব্যক্তিকে দড়ির সাহায্যে রোপওয়ের ট্রলি থেকে হেলিকপ্টারে উঠানো হচ্ছিল ঠিক হেলিকপ্টারের দরজার মুখ থেকে ওই ব্যক্তি হাত ফসকে নিচে পড়ে যান এবং তার মৃত্যু হয় । ১২ এপ্রিল সকাল ৬ টা থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে বাকি আরও ১৪ জনকে নামিয়ে আনা হয় কিন্তু এ দিনও ঘটে যায় ভয়ঙ্কর আরও একটি অঘটন । রোপওয়ের ট্রলির ভেতরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে ছিলেন এক মহিলা যাত্রী । তাকে দড়িতে বেঁধে নামানোর সময় সেই দড়ি ছিঁড়ে যায় এবং তিনি সবেগে নিচে পাথরে আছড়ে পড়েন । দেওঘর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় । উদ্ধারকারী দলের এই ব্যর্থতা সংশ্লিষ্ট মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে ।

মাটি থেকে প্রায় আড়াই হাজার ফুট উপরে রোপওয়ের আনন্দ এখন আতঙ্কে পতিনত । দেওঘর ত্রিকূট পাহাড়ের রোপওয়েতে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার খবর এখন সব মহলেই । মাঝ আকাশে আটকে থাকা রোপওয়ের ট্রলি থেকে উদ্ধার করার সময় দড়ি ছিঁড়ে এবং সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারীদের হাত ফসকে পড়ে গিয়ে এক মহিলা ও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে । দুর্ঘটনার প্রথম দিনেই এক মহিলা ও এক শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল । ফলে মোট চারজন এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন । এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে রোপওয়ে পরিচালনাকারী সংস্থার পক্ষ থেকে এত উঁচুতে রোপওয়ে চালু থাকলেও সেখানে কোন কারনে অঘটন ঘটলে দ্রুত উদ্ধার করার কোন ব্যবস্থা কেন রাখা হয়নি ।
যদিও ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন উদ্ধারকারী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন রোপওয়ে পরিচালনাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া তদন্ত এবং পদক্ষেপ করা হবে । এই সংস্থাকে ঝাড়খন্ড সরকার কালো তালিকাভুক্ত করেছে বলে জানা গেছে । অন্যদিকে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ঝাড়খন্ড রাঁচি হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে । মৃতের পরিজনদের ৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকারকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *