Spread the love

থ্যালাসেমিয়া শিশুকে রক্ত দিল তরুণী

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিংয়ের রিয়া অধিকারী, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্লাড সোর্স এর সদস্যা। বয়স আর কত হবে, খুব বেশি হলে বছর কুড়ি। এইটুকু বয়সেই সেবার জামা গায়ে দিয়ে নেমে পড়েছে সেবার জগতে। কখনো পাশে থেকেছে অসহায় দুস্থদের পাশে, কখনো বা রুগীর পাশে। কেউ বিপদে পড়লেই ডাক পড়ে তার বা তাদের গ্রুপের সদস্য-সদস্যাদের।

থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপদে পড়ে গ্যাছেন ক্যানিংয়ের রাখী মণ্ডল। তার সন্তান রাজের জন্য দরকার রক্ত। সময়মত রক্ত দিতে না পারলে মায়ের কোল শূন্য করে দিয়ে আদরের রাজ চলে যাবে 'না ফেরার দেশে'। অসহায় মায়ের যন্ত্রণা কে আর বুঝবে! সন্তানের জন্য হন্যে হয়ে রক্ত খুঁজছেন তিনি। কিনে নেওয়ার মত আর্থিক সামর্থ্য তার নাই। খবরটা যায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্লাড সোর্স এর কাছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের স্থানীয় সদস্যা ক্যানিংয়ের রিয়া অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। অপ্রস্তুত রিয়া কর্তব্যের টানে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় ক্যানিং হাসপাতালে। শিশুটির জন্য প্রয়োজনীয় রক্তদান করে। এতক্ষণ ধরে হাসপাতালের বারান্দায় অপেক্ষারত শিশুটির মা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। দু'হাত তুলে আশীর্বাদ করেন রিয়াকে। তৃপ্তির হাসি খেলে যায় রিয়ার মুখে।

 বিবেকানন্দের আদর্শে বড় হওয়া কলেজ ছাত্রী রিয়ার বক্তব্য - বিশাল কিছু করিনি, একটা শিশুর প্রাণ বাঁচানোর জন্য রক্ত দিয়েছি। এটাতো আমাদের সবার কর্তব্য। ঐ মা যখন চোখভরা জল নিয়ে অসহায় ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন খুব কষ্ট লাগছিল। অবশেষে মায়ের মুখে তৃপ্তির হাসি দেখে মনটা ভরে গ্যালো। 

অন্যদিকে রিয়ার মা-বাবার বক্তব্য - এইভাবেই আমার মেয়ে যেন আপদে বিপদে মানুষের পাশে থাকে। প্রসঙ্গত একটা সময় রিয়ার মা-বাবাও একই পথের পথিক ছিলেন।

 ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্লাড সোর্সের অন্যতম সংগঠক দেবাশীষ দাস বললেন - এটাই আমাদের কাজ। আজ রিয়া গ্যাছে, কাল অন্য একজন যাবে। তিনি আরও বললেন - বিভিন্ন জেলার ব্লক অনুযায়ী ব্লাড ডোনার ব্যাংক করার ইচ্ছে আছে। যদি সফল হতে পারি তাহলে হয়তো রাজের মত শিশুর মা-বাবাকে সমস্যায় পড়তে হবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *