Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন,


বীরভূমের বগটুই কান্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই যখন অত্যাধুনিক মাত্রায় তদন্ত প্রক্রিয়া  চালাচ্ছে। ঠিক তখনি আগামী ৬ এপ্রিল বহু চর্চিত গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডল কে ফের তলব করলো সিবিআই। এই নিয়ে ছয়বার তলব করা হলো বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল কে । অনুব্রত বাবু আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।প্রসঙ্গত আগামী ১২ এপ্রিল রাজ্যের দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। বালিগঞ্জ বিধানসভার পাশাপাশি আসানসোল লোকসভা আসনে উপনির্বাচন রয়েছে। তাই নির্বাচনে ব্যস্ততা জানিয়ে সিবিআইয়ের তলব এড়াতে পারেন বলে অনেকেই আশংকা করছেন। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে অনুব্রত মমন্ডলের আইনী রক্ষাকবচ পাওয়ার আবেদন টি খারিজ হয়েছে গত ২৯ মার্চ।তাই আইনী ভাবে লড়াইয়ে যেতে গেলে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন আইনী পথ নেই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত ২৯ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বড়সড় আইনী ধাক্কা খেয়েছিলেন বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মন্ডল। ওইদিন  গরু পাচার মামলায় আইনী রক্ষাকবচ চাওয়ার আবেদন টি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বগটুই আবহে গরু পাচার মামলায় আইনী রক্ষাকবচ খারিজ বীরভূমের দাপুটে নেতা কে আরও অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও তিনি কলকাতা হাইকোর্টের এই বহাল রাখার ( সিঙ্গেল বেঞ্চের)  নির্দেশ  সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। গরু পাচারকাণ্ড মামলায় আরও  চাপ বাড়লো অনুব্রত মণ্ডলের। কলকাতা হাইকোর্টের আইনী রক্ষাকবচ পেলেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা  সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে  অনুব্রতকে যেতে হবে। অনুব্রত মণ্ডল আইনী রক্ষাকবচ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  আর্জি জানিয়েছিলেন।ওইদিন  প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলেছিল ।হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় কে বহাল রাখে।  আদালতের এই নির্দেশ অত্যন্ত তাত্‍পর্যপূর্ণ বীরভূমের বগটুই আবহে । গত ৪ মার্চ গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তৃতীয়বারের জন্য নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। ১৫ মার্চ সকাল ১১টায় তাঁকে নিজাম প্যালেসে হাজির হতে বলা হয়। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সিঙ্গল বেঞ্চে রক্ষাকবচ চেয়ে মামলা করেন। গত ১১ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ অনুব্রতর আর্জি খারিজ করে দেয়।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, -‘ এই মামলায় এখনই আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। বিকল্প আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে আগাম জামিনের আবেদন তিনি করতে পারেন’। তবে সিবিআইয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব মেটানোর যে আর্জি অনুব্রতর ছিল, তা খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। যেহেতু বীরভূমের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে দেখা গিয়েছে, তাই আদালত প্রাথমিকভাবে মনে করেছে অনুব্রত এতটাও অসুস্থ নন যে গৃহবন্দি থাকতে হবে। সে সময় অনুব্রত মণ্ডল এসএসকেএম হাসপাতালে ছিলেন। সেখান থেকে নিজাম প্যালেসের দূরত্ব  অত্যন্ত কম।কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, – ‘সমস্ত তথ্য, বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে আবেদনকারী বোলপুরের বাইরেও যাচ্ছেন। তাঁকে হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে। শারীরিক কারণে কলকাতাও গিয়েছেন তিনি’। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ই মার্চ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে যান অনুব্রত মণ্ডল। শুনানিতে তাঁর আইনজীবীরা আর্জি জানান, -‘ আগামিদিনে সিবিআই যদি বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে তলব করেন, তাহলেও তাঁর সঙ্গে যেন আদালতের রক্ষাকবচ থাকে’। গত ১৬ মার্চ সেই মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে রায়দান স্থগিত রাখা হয়। গত ২৯ মার্চ তারই রায়দান করল আদালত।অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের আইনী রক্ষাকবচ খারিজ নির্দেশ টি বহাল রাখলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।এখন দেখার রাজ্যের দাপুটে নেতা অনুব্রত মন্ডল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন কিনা? এরেই মধ্যে আগামী ৬ এপ্রিল সিবিআইয়ের তরফে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডল কে ষষ্ঠবারের মত নিজাম প্যালেসে তলব করা হলো। এখন দেখার সিবিআইয়ের এই তলবে নিজাম প্যালেসে যান কিনা অনুব্রত? আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হিসাবে আইনজীবী মারফত নির্বাচনী ব্যস্ততা দেখাতে পারেন কিংবা কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হতে পারেন অনুব্রত? এখন সবটাই সম্ভাবনা… 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *