হাইকোর্টে বিক্ষোভ – অবস্থানে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ বৃহত্তর বেঞ্চের, কলকাতা পুলিশ কমিশনারের রিপোর্ট তলব
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসের সামনে অশান্তির ঘটনায় হালকা ভাবে নিচ্ছেনা কলকাতা হাইকোর্টের নব নিযুক্ত বৃহত্তর বেঞ্চ।মঙ্গলবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের স্বতঃস্ফূর্ত আদালত অবমাননা মামলায় শুনানি চলে।এদিন বিচারব্যবস্থা কে মজবুত করতে হাইকোর্টে বিক্ষোভ অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাস বয়কট এবং তাঁর বাড়ির সামনে পোস্টারিংয়ের ঘটনায় কড়া আদালত। কারা এভাবে পোস্টার দিল? কীভাবে এই পোস্টার ছাপা হল?কোথা থেকেই বা ছাপানো হল? তা সবই জানতে চান হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতি।কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে? তাও জানতে চায় বৃহত্তর বেঞ্চ । এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট তলব করা হল। পুলিশ কমিশনার রিপোর্ট দিয়ে জানাবেন কীভাবে এই পোস্টার ছাপা হল? আগামী ২ ফেব্রুয়ারিতে ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে । এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট-সহ এই বিষয়ে কোথাও কোনও বিক্ষোভ অবস্থান করা যাবে না, স্লোগান, ব্যানার দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিল তিন বিচারপতির বেঞ্চ। বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের ঘটনায় তিন বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করে দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই বেঞ্চে আছেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস। তাঁরাই এদিন এই নির্দেশ দেন। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে লেক থানার কাছ থেকেও।এভাবে এজলাস বয়কট করে বিক্ষোভ দেখানো, বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার দেওয়া কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ এদিন জানায়, -‘ কারা সেদিন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের শনাক্ত করতে হবে’। এর পাশাপাশি শাসকদলের নেতাদের নামও অভিযোগের খাতায় উঠে এসেছে, যাঁরা বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর মন্তব্য’ করেছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কড়া পথে হাঁটতে পারে আদালত। মঙ্গলবারের শুনানিতে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।প্রথমে এটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হিসাবে গ্রহণ করা হয়।প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশেই গঠিত হয় তিন বিচারপতিকে নিয়ে বেঞ্চ। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল। শুরুতেই রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ডেকে পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, কী কী ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ৯ জানুয়ারি থেকে যে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, তা ১০ জানুয়ারি, ১১ জানুয়ারিও চলে। এমনকী গত সোমবার ‘বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র সদস্যদের সামনেও পোস্টার নজরে আসে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই পোস্টার, ব্যানার মঙ্গলবারও রাখা ছিল । সেগুলিকে হঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত। এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট তলব করা হল। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি তারিখে তা জানাতে হবে আদালতকে। এমনকী এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট-সহ কোথাও কোনও বিক্ষোভ অবস্থান করা যাবে না, স্লোগান, ব্যানার দেওয়া যাবে না।এদিন এই বিষয়ে নির্দেশ দিলেন তিন বিচারপতির বেঞ্চ।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে যেভাবে আদালতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ, বয়কট এবং পোস্টার সাঁটা হয় তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সারা দেশ জুড়ে । তার জেরে তিন বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করে দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই বেঞ্চে আছেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস। তাঁরাই এদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন। যা নিয়ে এখন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। এদিন শুনানি পর্বে বৃহত্তর বেঞ্চ জানায় ,- ‘খবরের কাগজে পড়লাম যে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ করা হয়েছে। তিনজন আইনজীবীকে দেখেছি প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে। এটা ঠিক নয়। সবার আগে এটাই আপাতত মাথায় রাখা দরকার।’ এভাবে এজলাস বয়কট করে বিক্ষোভ দেখানো এবং বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার দেওয়া নজিরবিহীন বলেই মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এদিন জানিয়ে দেয়, কারা সেদিন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের শনাক্ত করতে হবে।অন্যদিকে এই মামলার শুনানিতেই রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ডেকে পাঠানো হয়। আর জানতে চাওয়া হয়, কী কী ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। গত সপ্তাহের সোমবার থেকেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান একাংশ আইনজীবীরা। পোস্টারে বিচারপতির নাম উল্লেখ করে লেখা ছিল, ‘বিচারের নামে কলঙ্ক।’, মঙ্গলবার এই পোস্টার নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় বৃহত্তর বেঞ্চ। তিন বিচারপতির নির্দেশ, ‘কার নির্দেশে, কে বা কারা বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার দিয়েছে সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে। দেখতে হবে কোথায় সেই পোস্টার ছাপা হয়েছে?’হাইকোর্ট চত্বরে কোনও মিটিং-মিছিল করা যাবে না। পোস্টারও মারা যাবে না। এই নির্দেশ কার্যকর করার ভার দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কে। কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার মারার ঘটনায় তদন্ত কত দূর এগুলো।আগামী ২রা ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানি।তাঁর আগে লেক থানা এবং কলকাতা হাইকোর্টের এসি কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে । এদিন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসের সামনে ৯ জানুয়ারির ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে কিনা? তা জানতে তলব করা হয় রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। রেজিস্ট্রার জেনারেল জানিয়েছেন ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারির ফুটেজ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।বৃহত্তর বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ, -‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং স্টিল ছবি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে’।বিচারপতি মান্থার যোধপুর পার্কের বাড়ির সামনে পোস্টারিংয়ের ঘটনায় লেক থানার পুলিশকে তদন্তের যাবতীয় রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে।যে পোস্টার হাইকোর্ট চত্বর ও বিচারপতির বাড়ির সামনে লাগানো হয়েছিল সেসব কোথায় ছাপা হয়েছে, কারা তা লাগিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও রিপোর্ট আকারে জমা দিতে হবে পুলিশকে।ইতিমধ্যেই ‘বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিদল হাইকোর্ট এবং যোধপুর পার্কে বিচারপতি মান্থার বাড়ির আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছে। তারপর এদিন আদালত যে সব নির্দেশ দিল তাতে কলকাতা হাইকোর্টের ১৩ নং ঘরের সামনে বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের উপর চাপ বাড়লো বহুগুণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।