Spread the love

লালার বিরুদ্ধে সিবিআই? মতামত  পেশে রাজ্যের দু’দিন সময়সীমা

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,  
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে উঠেছিল কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝী ওরফে লালার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলাটি।এদিন বিচারপতি এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে অর্থাৎ বুধবার দিন শুনানির সময় কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী অতিরিক্ত সলিটর জেনারেল কে থাকতে বলেছেন। পাশাপাশি রাজ্য কে তার মতামত জানাবার জন্য দুদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন বিচারপতি। অর্থাৎ বুধবারই রাজ্য কে তার অবস্থান জানাতে হবে।এবার কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝী ওরফে লালার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দাখিল হয়েছিল মামলা।সোমবার তার ছিল প্রথম শুনানি। দাখিল পিটিশনে শুধু কয়লা মাফিয়ার বিরুদ্ধে নয়, রয়েছে রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ। অভিযোগ,  গত ২০১৫ সালের পর থেকে হাজার কোটি টাকার কয়লা লুট হয়েছে। ভূগর্ভস্থ কয়লা লুটে ভুক্তভোগী ঘর-বাড়ি, জমি মালিক এই মামলাটি দাখিল করেছেন গত মাসে। বাঁকুড়া জেলার মেজিয়া এলাকার ঘটনা এটি।ইতিমধ্যেই সিবিআই ইসিএলের জায়গায় কয়লা পাচারে তদন্ত চালাচ্ছে।পাশাপাশি আরেক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডিও আর্থিকগত তদন্ত চালাচ্ছে।বাঁকুড়ার এক আইসি পদমর্যাদা পূর্ণ অফিসার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তবে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝী ওরফে লালা শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন। তবে এবার বেআইনীভাবে  কয়লা তোলার ফলে  ক্ষতিগ্রস্ত কোন জমি মালিক সরাসরি লালার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মামলা দাখিল করেছেন।সেখানে স্থানীয় থেকে রাজ্যস্তরের পুলিশ ও প্রশাসন কে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।তবে সিবিআই একবার এই মামলাকারীকে তথ্য প্রমাণ দেওয়ার জন্য নিজাম প্যালেসের অফিসে ডেকেছিল।পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাই বাধ্য হয়ে কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝি ওরফে লালার  বিরুদ্ধে তদন্তভার সিবিআই  এর হাতে তুলে দিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বাঁকুড়ার মেজিয়ার বাসিন্দা  কালিদাস ব্যানার্জী। মামলাকারীর আইনজীবী বৈদুর্য্য ঘোষাল জানিয়েছেন -” মামলাকারীর বাড়ি বাঁকুড়ার  মেজিয়ার কালিকাপুর অঞ্চলে। তার বাড়ির নিচেই আছে  কয়লাস্তর। যেখান থেকে গত ১৯৯১ সাল  থেকে কয়লা মাফিয়ারা কয়লা তোলা শুরু করে।  ১৯৯৪ সালে রাজ্যসরকার সেখানে এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প বসালেও ২০১৫  সালে  পুলিশ ক্যাম্প তুলে নেওয়া হয়। এরপর অনুপ মাঝি ওরফে লালা ও তার সহযোগী কয়লা মাফিয়াদের দৌরাত্ব  বহুগুণ বেড়ে যায়। তারা ওই এলাকায়  অত্যাধিক ডিনামাইট ব্যবহার  করার জন্য মামলাকারী ও তার আশেপাশের বাড়ি গুলি ও কৃষিজমিতে সম্পূর্ণ ধস নামে ও বাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বারংবার পুলিশে জানানোর পরেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকে বলে অভিযোগ ও পুলিশের উপস্থিতিতেই কিছু রাজনৈতিক নেতাদের মদতে অনুপ মাঝি ওরফে  লালা ও তার সহযোগীরা কয়লা পাচার চালাতে থাকে।  দৈনিক প্রায় কয়েকশো কোটি টাকার কয়লা চোরাচালান কারীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায়”। মামলাকারীর আইনজীবী বৈদুর্য্য ঘোষাল  আরও  জানান  -“হাইকোর্ট ও নিম্নকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বারবার রাজ্যসরকারের সমস্ত পুলিশ  মহলের দ্বারস্থ হয়ে কোনো সুরাহা না পেয়ে অবশেষে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করেছেন “। কয়লা লুট আটকাতে মেজিয়ার এই পুলিশ পিকেট কেন সরালো রাজ্য পুলিশের কর্তারা, তা জানতে চেয়েছেন মামলাকারী। বাঁকুড়ার মেজিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জ এলাকায় এই কয়লা সিন্ডিকেট নিয়ে ফের চাঞ্চল তৈরি হয়েছে পৃথক অভিযোগে সিবিআই তদন্ত চেয়ে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে উঠে এই মামলা।সেখানে আগামী বুধবার কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিটর জেনারেল কে থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য কে ওইদিন তাদের অবস্থান লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানান -“সিবিআই ও কয়লা মাফিয়া সংক্রান্ত মামলাটি আজকে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে শুনানির জন্য ওঠে। মামলা শুনানি কালে সব পক্ষই এজলাসে উপস্থিত ছিল। মামলা চলাকালীন রাজ্য সরকার রিপোর্ট জমা দেবার জন্য ২ দিন সময় চান। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও বিচারপতি অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে সিবিআই এর হয়ে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। সেই মোতাবেক ওনার কে মামলার কপি দেওয়া হলো। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বুধবার বিচারপতি বসাকের এজলাসেই হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *