Spread the love

‘এসএসসি যা খুশি তাই করতে পারে’ মামলা থেকে অব্যাহতি বিচারপতির 

মোল্লা জসিমউদ্দিন  
গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে বারবার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়েছে।রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এই মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্টে চলছে শতাধিক মামলা। তবে  কলকাতা হাইকোর্টের যে বেঞ্চে সবথেকে বেশি চলছে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা। সেই বেঞ্চের বিচারপতি রাজ্য সরকারের এসএসসির উপর তিতিবিরক্ত হয়ে এক মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন।বারংবার আদালতের কাছে শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা নিয়ে ভূল স্বীকার,  আদালতের নির্দেশ কে প্রতিনিয়ত  অবমাননা করা, সঠিক তথ্য সামনে না আনা বিষয়গুলিতে বিরক্ত হয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মামলার বিচারদান থেকে সরে দাঁড়ালেন। যা রাজ্য প্রশাসনের কাছে এক কলঙ্কিত অধ্যায় বলে মনে করছেন আইনজীবীদের বড় অংশ। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষক নিয়োগে এক মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ -‘ এসএসসি কে বিশ্বাস করতে পারছিনা, এরা যা খুশি তাই করতে পারে ‘। রাজ্যের এডভোকেট জেনারেলের শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকায় সঠিক তথ্য দানে অসন্তুষ্ট বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকেন।২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষায় ২০১৮ সালে মেধাতালিকা প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে গোবিন্দ মন্ডল ৬০% নম্বর পেয়েও নিয়োগপত্র পাননি।অথচ ৫৮.৬% পেয়ে একজন চাকরি পেয়েছেন। আরও একবার কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার শিকার এসএসসি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগের ভিক্তিতে এই কড়া অবস্থান কলকাতা হাইকোর্ট। কেন বারবার একই অভিযোগ উঠছে, কেনই বা চাকরিপ্রার্থীদের আসতে হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে।তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং বিচারপতি। আগের শুনানি তে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ নিয়ে মামলা। ২০১৬ সালে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে এই অস্বচ্ছতার অভিযোগ চাকরি প্রার্থীদের একাংশের।২৫৩ নং র‍্যাঙ্কের প্রার্থী এসএসসিতে চাকরি পেয়েছেন।অথচ তার থেকে টপার অর্থাৎ ২১৪ নং র‍্যাঙ্কের প্রার্থীর জোটেনি চাকরি। কোন রসায়নে এই নিয়োগ তা হলফনামা আকারে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। ৩১ আগস্টের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ ছিল।সম্প্রতি  সল্টলেকের এসএসসি ভবনের সামনে একদল চাকরি প্রার্থী বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকেন।তারা সেন্টার পার্কে অনশন করতে চাইলে পুলিশ অনুমতি দেয়নি।মহামারী আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে বিধাননগর পুলিশ শিক্ষক নিয়োগে চাকরি প্রার্থীদের হটিয়ে দিয়েছিল।গত ২০১৬ সালে রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগে যে পরীক্ষা হয়েছিল। সেখানে মেধাতালিকা প্রকাশ থেকে ইন্টারভিউ তালিকা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তুলেছে চাকরি প্রার্থীরা।আশ্চর্যের বিষয় – র‍্যাঙ্কের প্রার্থীদের টপারদের বাদ দিয়ে অনেকেই চাকরি পান।শিক্ষক নিয়োগের এই অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে এই মামলা।সেখানে ২৫৩ নং র‍্যাঙ্কের প্রার্থী এসএসসিতে চাকরি পেলে কেন ২১৪ নং র‍্যাঙ্কের প্রার্থী চাকরি পাননি।তার জবাবদিহি চেয়েছিল হাইকোর্ট। আজ এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে যথাযথ উত্তর না পেয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন স্বয়ং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *