১৯৪৬ সালে ফরেন আইন নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের,
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠে সিএএ সংক্রান্ত এক মামলা। সেখানে আদালত জানায় – ‘ ১৯৪৬ সালের বিদেশ আইনে কেন বাংলাদেশের অমুসলিমদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে? ‘ তা রাজ্য কে রিপোর্ট আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে হাইকোর্টের তরফে।২০১৯-এর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা এ দেশে নাগরিকত্বের সুযোগ পেতে পারেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা জানতেই রাজ্যের জবাব তলব করেছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আদালতের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে অ-মুসলিম নাগরিক ভারতে এলে তাঁর প্রবেশের পর তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না তাঁর বিরুদ্ধে।এদিন হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, ‘হাইকোর্টের তরফ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে একটি নোটিস দেওয়া হোক। রাজ্যকে ফরেনার্স অ্যাক্ট প্রয়োগ করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে যাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কেন ফরেনার্স অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হল, সেই ব্যাখ্যাই তলব করা হয়েছে রাজ্যের কাছে।আদালতের তরফে জানানো হয়েছে যে, অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪/১৪ সি ধারায় আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে, এ রাজ্যে। এই মামলায় বাংলাদেশ থেকে আসা এক অ-মুসলিম নাগরিকে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। দু’সপ্তাহ পর জবাব দিতে হবে রাজ্যকে।২০১৯-এ নাগরিকত্ব বিলে কিছু সংশোধন আনা হয়। তৈরি হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। সংশোধনীর ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অ-মুসলিমরা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন। হিন্দু, শিখ, জৈন সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের সদস্যরা ভারতের নাগরিকত্ব নিতে পারবেন। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।১৯৪৬-এ অর্থাত্ ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে এই আইন তৈরি হয়। এই আইন অনুসারে সরকারের হাতে বিদেশ নাগরিকদের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। ভারতের নাগরিকত্ব নেই এমন ব্যক্তিকেই এ ক্ষেত্রে ‘ফরেনার’ বা বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হবে। যদি অন্য কোনও দেশের নাগরিক ভারতে প্রবেশ করে কোনও বৈধ কাগজ ছাড়া বসবাস করতে থাকে অথবা বৈধ কাগজপত্রের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও যদি ভারতে বসবাস করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার। সে নিজের দেশে না ফিরে যাওয়া অবধি তাকে আটক করা যেতে পারে।এক্ষেত্রে পশ্চিমবাংলায় ১৯৪৬ সালের আইনে বাংলাদেশের অমুসলিম ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশরা প্রায়শই গ্রেপ্তার করে থাকে। কেন এই গ্রেপ্তার ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু থাকা সত্বেও, তা জানতে চেয়েছে আদালত।