Spread the love

হাইকোর্টের ‘লঘু পাপে গুরু দন্ড’ তোপে উপাচার্য 

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠেছিল বিশ্বভারতীর পঠনপাঠন সংক্রান্ত মামলা।সেখানে বিচারপতি বিশ্বভারতী দ্বারা বহিস্কৃত তিন ছাত্র কে বৃহস্পতিবার থেকেই ক্লাসে পড়াশোনা করবার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্বভারতীর উপাচার্য কে লঘু পাপে গুরু দন্ড দেওয়ার বিষয়ে কড়া ভৎসনা করেছেন বিচারপতি। গত ২৭ আগস্ট বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়া ফাল্গুনী পান,সোমনাথ সৌ, রুপা চক্রবর্তী কে তিন বছরের জন্য বহিস্কৃত করা হয়। এজন্য গড়ে উঠেছিল উপাচার্য এর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বভারতীর বহিস্কৃত করবার নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত সপ্তাহে  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠেছিল বিশ্বভারতীর আইনশৃঙ্খলা জনিত মামলা। গত বুধবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিল যাতে, বিশ্বভারতীর স্বাভাবিক ছন্দ ফেরে।গত বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করে থাকে। যার মধ্যে গত  শুক্রবার দুপুরে ৩ টের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের উপাচার্যের বাড়ির সামনে সরে যেতে হবে।বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাড়ির সামনে সর্বক্ষণ ৩ জন নিরাপত্তা রক্ষী থাকবে।বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিস খুলে দিতে হবে। বিশ্বভারতীর ৫০ মিটারের মধ্যে কোন বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবেনা। পাশাপাশি কোন মাইকের ব্যবহার চলবেনা বিক্ষোভকারীদের।ওইদিন মামলার শুনানির আগেই বিচারপতি বিক্ষোভকারীদের আইনজীবী কে জানিয়েদেন যে, আগে বিক্ষোভ সরাতে হবে।তারপর তিনি এই মামলার শুনানি চালাবেন। গত সপ্তাহ থেকে  বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তুঙ্গে ছিল।ছাত্র আন্দোলন চলছিল। শুধু দিনের বেলায় নয়, রাতের দিকেও উপাচার্যের সরকারি বাসভবনে চলছিল এই অবস্থান বিক্ষোভ। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় বিশ্বভারতী। ৩৮ পাতার রিট পিটিশনে বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কাটিয়ে ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর দাবিতে রিট পিটিশন টি দাখিল করা হয়েছে ।গত  বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেয়।দাখিল রিট পিটিশনে উল্লেখ রয়েছে যে, বিশ্বভারতীর বাড়ি ঘেরাও করে যে আন্দোলন চলছে, তা রাজনৈতিক মদতপুস্ট।দিনের পাশাপাশি রাতের দিকেও চলছে এই অবস্থান বিক্ষোভ। অভিযোগ, উপাচার্যের সরকারি বাসভবনে খাবারের পাশাপাশি জল পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা।সবকিছু জানিয়েও স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন নিস্ক্রিয়। তাই এই রিট পিটিশনটি।সম্প্রতি ১২ জন অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাদের কে সাময়িক সাসপেন্ড করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অর্থনীতি ও সঙ্গীত বিভাগের ৩ পড়ুয়া কে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। পরে তা বাড়িয়ে ৩ বছরের জন্য বহিস্কার করা হয়। এই সির্দ্ধান্ত এর প্রতিবাদ জানিয়ে চলছিল অবস্থান বিক্ষোভ। এতে কেন্দ্রীয় অফিস বন্ধ সহ ভর্তি প্রক্রিয়া এবং ফলাফল প্রকাশ বন্ধ ছিল বিশ্বভারতীতে।কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্ষুব্ধ হয় এই পরিস্থিতির জন্য। দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবার নির্দেশ দেওয়া হয় । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে বুধবার তিন পড়ুয়ার বহিস্কৃত করবার নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে কড়া ভৎসনা করে থাকে হাইকোর্ট। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *