মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যের আপিল পিটিশনের শুনানি। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে -‘ এই মামলার রায়দান হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ‘। অর্থাৎ রাজ্যের উপনির্বাচন হওয়ার দুদিন আগেই। যা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। একুশে বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশ পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ যে সিবিআই তদন্তর নির্দেশ দিয়েছে। তা নিয়ে কোন অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্যের আপিল পিটিশনের শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিনীত সারণ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে। আগের শুনানিতে এই মামলায় কোনও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাগুলিতে তদন্ত এখনও চলবে। প্রসঙ্গত, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পাশাপাশি তদন্ত চালাচ্ছিল স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তথা সিটও। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছিল, সেগুলো খতিয়ে দেখেই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আর একেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শীর্ষ আদালতে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দাখিল করেছিল রাজ্য। এই মামলায় রাজ্য সরকারের তরফে সওয়াল করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। রাজ্য সরকার, হাইকোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসায় জনস্বার্থ মামলাকারী ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।ওইদিনই রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার রায়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, খুন ও ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত করবে। এই নির্দেশ পাওয়ার পরেই জেলায় জেলায় ঘুরে নিহত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। ধরপাকড়ও করা হয়, তদন্তের রিপোর্ট তৈরি হয়। ইতিমধ্যেই ৫ টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। পাশাপাশি, অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। সেই পিটিশনে বলা হয় সিবিআই কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত করছে, নিরপেক্ষ তদন্ত হবে সে ভরসা কোথায়। তদন্তপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।চলতি মাসের গোড়ায় সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।বিচারপতি বিনীত সরন ও বিচারপরি অনিরুদ্ধ বসু উভয় পক্ষকেই নথিপত্র জমা দেওয়া প্রাক-শুনানির সমস্ত প্রক্রিয়া আগামী শুক্রবারের মধ্যে সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।এই মামলায় হরিশ সালভে, মহেশ জেঠমালানির মতো সংশ্লিষ্ট পক্ষের কয়েকজন আইনজীবী ক্যাভিয়েটের শুনানিতে হাজির ছিলেন। সংক্ষিপ্ত শুনানিতে আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান , -‘খুনের মামলাগুলির একটির শিকার জীবিত রয়েছেন’। বিচারপতি বসু জানতে চান এজলাসে ,-‘ সিবিআই ও বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্ত, না অনুসন্ধান করছে?।প্রত্যুত্তরে সিব্বল জানান ,-‘ সিবিআইকে খুন ও ধর্ষণের মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্য মামলাগুলির তদন্তভার এক প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে সিটকে দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে রাজ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিযুক্ত কমিটির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিল।আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কি রায় দেয়?তার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল।