জীবনযন্ত্রণার অপর নাম সাহেবগঞ্জ লুপ-লাইন,
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
হাওড়া ডিভিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লাইন হলো বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন। প্রতিদিন বহু যাত্রী এই লাইনের ট্রেন ধরে যাতায়াত করে। এদের অনেকেই অফিস যাত্রী, কেউবা সাধারণ যাত্রী, ছাত্র-ছাত্রী। এই লাইনের ট্রেন ধরে যাওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী বোলপুর-শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ সহ একাধিক তীর্থস্থানে। এই লাইনের ট্রেন ধরেই পর্যটকরা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণে যায়।
গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও দিনের পর দিন অবহেলিত থেকে গেছে এই লাইনটি। এক্সপ্রেস বা সুপার ফাস্ট ট্রেনগুলো সময় সারণি মেনে চললেও লোকাল ট্রেনগুলো অধিকাংশ সময়েই দেরিতে চলাচল করে। প্রাক করোনকালে চলাচলকারি বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন এখনো চালু করা হয়নি। এমনকি কয়েকটি স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।সকাল ৯ টার পর আপ ও ডাউনে চলাচলকারি দুটি লোকাল ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। এরফলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারি সাধারণ মানুষদের। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা মাঝে মাঝে রেল অবরোধে সামিল হলে কেবল শুকনো প্রতিশ্রুতি মেলে কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়না। যাত্রীদের অভিযোগ বারবার রেল দপ্তরকে জানিয়েও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
গুসকরার বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী বৃষ্টি গড়াই, পূর্ণিমা পাল প্রমুখদের বক্তব্য - আমরা ১১.১৪ মিনিটের ০৩০৮০ ডাউন রামপুরহাট-বর্ধমান লোকাল ট্রেনটি ধরে বর্ধমানে গৃহশিক্ষকের কাছে যাই। প্রায় প্রতিদিনই ট্রেনটি দেরিতে চলাচল করায় আমরা চরম সমস্যায় পড়ে যাই। ট্রেনটি দেরিতে চলায় একইভাবে গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে প্রাতঃবিভাগে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরাও বাড়ি ফিরতে সমস্যায় পড়ে। আবার আপে সকাল ৯ টা নাগাদ বর্ধমানে একটি লোকাল ট্রেন ছাড়ার পর পরবর্তী লোকাল ট্রেন প্রায় আড়াই টা নাগাদ। সেক্ষেত্রেও সমস্যা হয় স্হানীয় যাত্রীদের।
গুসকরার বাসিন্দা রামদাস মণ্ডল, সুমন ঘোষ প্রমুখরা ০৩০৮০ ট্রেনটি ধরে কর্মস্হলে যায়। অথচ ট্রেনটি প্রতিদিন দেরিতে চলাচল করায় তাদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। সুমন বাবুর অভিযোগ - ট্রেনটি দেরিতে চলাচল করায় আমাদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। ফলে আমাদের বেশ সমস্যা হয়। জানিনা কবে ট্রেন সঠিক সময়ে চলাচল করবে।
হাওড়া ডিভিশনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য তিনি কথা বলেননি।