সন্দেশখালি ঘটনায় গ্রেপ্তার মাত্র চার জন? বিস্ময় প্রকাশ বিচারপতি সেনগুপ্তের
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে শুনানি চলে সন্দেশখালি মামলার। কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি অফিসারদের ওপর হামলার ঘটনার পর দশ দিন কেটে গিয়েছে। স্থানীয় থানার পুলিশের ভূমিকা প্রশ্ন উঠেছে। আর এবার পুলিশের পদক্ষেপ দেখে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। যে ঘটনায় প্রায় তিন হাজার মানুষ অভিযুক্ত, সেই ঘটনায় মাত্র ৪ জনকে কেন গ্রেফতার করা হল, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য পুলিশকে।শেখ শাহজাহানই বা আত্মসমর্পণ করছেন না কেন? সেই প্রশ্নও তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন রাজ্যকে। এদিকে, নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেস ডায়েরি না নিয়ে যাওয়ায় ভর্ত্সনার মুখে পড়তে হয় তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কে। এদিন ইডি আবেদন জানিয়েছে, -‘গোটা ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআই-কে’। এদিন এই মামলার কেস ডায়েরি না আনায় সিঙ্গেল বেঞ্চের ক্ষোভের মুখে পড়তে হল রাজ্য পুলিশকে। এর আগের শুনানিতে কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছিল।সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তে বলেন, “পুলিশ এতদিন ধরে কী করেছে, সেটা কেস ডায়েরি দেখেই বোঝা সম্ভব। মঙ্গলবার কেস ডায়েরি আনতে হবে পুলিশকে।” ইডি অভিযোগ করেছিল, ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন শাহজাহান শেখ। বিচারপতি এদিন পুলিশের কাছে জানতে চান, -‘ঘটনার পরে কি পুলিশ শাজাহানের বাড়িতে ঢুকেছিল?’বিচারপতি এদিন শাহজাহানের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, আপনার মক্কেল কেন আত্মসমর্পণ করছেন না? বিচারপতি এজি-কে বলেন, “সত্ ভাবে বিচার দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুন। তিন হাজার অভিযুক্ত, আর চার জন গ্রেফতার? ৩০৭ ধারা কেন যোগ হয়নি? এখনও কেন ন্যাজাট থানার পলিশকে তদন্তে রাখা হয়েছে? এতদিনেও মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার করা হয়নি কেন?” এর প্রতুত্তরে রাজ্যের এজি জানান, -‘ ৩ হাজার নয়। ৮০০ থেকে ১০০০ লোক ছিল। আহত ইডি অফিসাররা বলেছেন, ‘তাঁদের ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল, তাই ৩০৭ ধারা দেওয়া হয় নি।’ এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে ইডি-র আইনজীবী এস ভি রাজু জানিয়েছেন, -‘ শঙ্কর আঢ্য ও শেখ শাহজাহানের নাম পাওয়া যায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে। রেশন দুর্নীতির আর্থিক নয়ছয়ের তদন্ত করতে গিয়ে। সেখানে তাল্লাশিতে গেলে হামলা হয় ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে। উল্টে ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়’। এই গোটা ঘটনার তদন্ত সিবিআই-কে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে ইডি। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ফের শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে।