Spread the love

অরিজিৎ দে,

ছবি—দহন বেলায় ডোম।

গল্পকার— প্রদীপ বিশ্বাস।

বড়লোকের একমাত্র ছেলে আকাশ, প্যমার তাঁর কোনো অভাব ছিল না, বিলাসবহুল ছেলে সব ধরণের নেশার প্রতি আকৃষ্ট ছিল। মাঝে মধ্যেই, বিভিন্ন মেয়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতো সে।বাবা মায়ের কথা মতো, বাবার বন্ধুর মেয়ের সাথে, আগে থেকে একটা এনগেজমেন্ট হয়েই দিল।সম্পর্ক টা সম্পর্কের জায়গায় রেখে দিয়ে অন্য মেয়েদের সাথে গোপনে শারীরিক সম্পর্ক করা ছিল তাঁর নেশা কোনো একদিন এই সম্পর্ক জানতে পারে মেঘমা। সম্পর্কের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়। উভয়ের বাবা মা একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, ওদের বিয়ে খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দেবে এবং এটাও ভাবে দুটো মনকে আরো কাছাকাছি আনার জন্য তাদের বাইরে কোথাও পাঠানো। উচিত। আকাশ ও মেঘমর সম্পর্ক যদিও বা ঠিক হয়, হঠাৎ আকাশ অসুস্থ হয়ে পরে, ডক্টর চেকআপ করে রিপোট দেন, আকাশ এইডস পজিটিভ। ডক্টর এটাও জানতে পারে, আকাশের সাথে মেঘমার শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার ফলে মেঘনা ও এইডস আার। উভয়েই মানসিক ভাবে ভেঙে পরে, সিদ্ধান্ত নেয় তারা নিজেদের জীবন শেষ করে দেবে। কাকড়নীয় ভাবে, তাঁরা দুজনেই আত্মহত্যার জন্য একই জায়গায় একই সময়ে উপস্থিত হয়। একে অপরের ভুল বুঝতে পার এবং সিদ্ধান্ত নেয়, তাঁরা দূরে কোথাও চলে যাবে। প্রভাব গ্রামের এক শ্মশানে এক অন্ধ লোক, একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে ভিক্ষা করছে। মেঘমা ও আকাশ সেখানে পৌঁছায়, অন্ধ কানুর জীবনের কথা শুনতে চায়। অন্ধ কানু, তাদের তার কুঁড়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁর করুন জীবন কাহিনী শুনায়। দারিদ্রতা ঘেরা ভাঙা ঘরে শ্মশানে মরা পোড়ানো তার জীবিকা। পেশায় সে ডোম। সমাজে অবহেলিত একটি মানুষ, প্রতিদিন সুখের স্বপ্ন দেখে। কোনো এক রাতে, একটি মহিলার বাঁচার জন্য করুন আর্তনাদ শুনতে পায়। তৎক্ষণাৎ সেখানে পৌঁছে মহিলাটি কে খারাপ লোক দের থেকে উদ্ধার করে নিজের কুটিরে নিয়ে আসে। সেই অপরাধে, প্রধানের বিচারে অপরাধী হয় ডোম। অপরাধীর জীবন নিয়ে ধর্ষিতা নারীকে নিজের জীবনসঙ্গী করে নেয়। প্রধানের রোষ গিয়ে পড়ে ওর উপর, ঘর বাড়ি জানিয়ে দিলে শ্মশানে তার ঠাই হয়। কিছু দিন পরে, একটি সন্তানের জন্ম দিয়ে ডোমের বউ এর মৃত্যু হয়। দুধের শিশু কে বড় করার জন্য, শ্মশানের মরা পোড়াতে শুরু করে। প্রধান সাহেবের ছেলে জোড়করে শ্মশানের মাটি দখল করে মদের ভাটি তৈরি করার চিন্তা করে। বাঁধা দিলে চিতার কাঠ দিয়ে মেরে ডোমের চোখ নষ্ট করে দেয়। এরপর শুরু হয় গান গেয়ে ভিক্ষা করা। গল্পটি বলে শেষ করার পর তার একমাত্র ছেলেকে দায়িত্ব নিতে বলে। ডোমের মৃত্যু হয়। মেঘমা আকাশ বুঝতে পারে জীবন কি অসহায় ডোমের বাচ্ছা কে নিজেরা বাঁচার অবলম্বন হিসেবে ডোমের সন্ত্রানকে গ্রহণ করে নিজেরাও নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *