শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের ৩৫ তম বার্ষিক সম্মেলন শুরু কলকাতায়
রাজকুমার দাস
শুধুমাত্র দূষণের কারণে কলকাতা, দিল্লি সহ বেশিরভাগ শহর মফঃস্বলের অর্ধেকের বেশি শিশু (৫২.৮ শতাংশ) ক্রনিক সর্দিকাশি, হাঁপানির মত শ্বাসনালীর অসুখে ভুগছে। এর থেকে বাড়ছে হাঁপানির / অ্যাজমার প্রকোপ। বিশেষ করে শীতের শুরুতে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায়। ৩ – ৫ নভেম্বর শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের ৩৫ তম বার্ষিক সম্মেলন RESPICON 2023 RPM, SPM -এ এই ব্যাপারে সচেতন হবার ডাক দিলেন দেশের নানান প্রান্তের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা। ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমিক অফ পেডিয়াট্রিক্স ( IAP)-এর রেসপিরেটরি চ্যাপ্টার আয়োজিত এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাতশ জনেরও বেশি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে কলকাতার বাতাসে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড , সালফার ডাই অক্সাইডের মত ক্ষতিকর গ্যাসের পাশাপাশি RPM, SPM রেসপিরেবল পার্টিক্যুলেট ম্যাটার ও সাসপেন্ডেড পার্টিক্যুলেট ম্যাটারের মত বাতাসে ভাসমান কণার পরিমাণ এতোটাই বেশি যে শিশুদের সংবেদনশীল শ্বাসনালীর প্রদাহের ঝুঁকি খুব বেড়ে যায়। এর ফলেই বাচ্চাদের মধ্যে শ্বাসনালীর ও ফুসফুসের অসুখের ঝুঁকি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। ডা পল্লব চট্টোপাধ্যায় জানালেন যে গবেষণায় প্রমাণিত যে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড শ্বাসনালীর প্রদাহের পাশাপাশি ব্রঙ্কাইটিস ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের শ্বাসকষ্টজনিত মৃত্যুর জন্য দায়ী নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড। ডা পল্লব চট্টোপাধ্যায়, ডা অরুণ মাঙ্গলিক, ডা শুভাশিস রায়, ডা গৌতম ঘোষ এবং ডা শান্তনু ভক্ত সকলেই এই ব্যাপারে একমত যে বাচ্চাদের শ্বাসনালীর ও ফুসফুসের অসুখের সঙ্গে যুঝতে একদিকে যেমন মাল্টি ডিসিপ্লিনারি চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্যে নিতে হবে তেমনই পরিবেশ বিদ ও রাষ্ট্রপ্রধানদের দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গেছে যে কলকাতা ও দিল্লির প্রায় ৫২.৮ শতাংশ শিশু বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের অসুখের পাশাপাশি অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার (ADHD) নামক মনের সমস্যায় ভুগছে। সম্প্রতি স্টেট অফ গ্লোবাল এয়ার (SOGA) –র এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে নির্ধারিত সময়ের আগে শিশুর জন্ম এবং স্বাভাবিকের থেকে কম ওজনের বাচ্চার জন্মের এক অন্যতম কারণ বায়ু দূষণ। পলিউশনের কারণে শিশুদের ৫৩% নাক কান গলার সমস্যায় কষ্ট পায়, ৪৬% অ্যালার্জি ও ত্বকের সমস্যায় ভোগে, ৫৪% শিশুর হাঁপানির হয়, ২% শতাংশ বাচ্চার ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে। এই বিষয়টি নিয়ে সকলের সচেতন হবার সময় হয়েছে।