অরিজিৎ দে,
বিশ শতকের পর থেকে বাঙালির আর্থ সামাজিক অবস্থান যত দ্রুতগামী হতে থাকল ততই রেস্টুরেন্ট কালচার বাড়তে থাকল। এই মুহূর্তে তো কথাই নেই। বৃহত্তর কলকাতা জুড়ে বিশ্ব খাদ্য স্থায়ী মেলা বসে গেছে। নিত্য নতুন কর্পোরেট ধাঁচে হোটেল রেস্তোরাঁ গড়ে উঠছে। পূর্ব কলকাতার ছোঁয়া লাগা উপনগরী রাজারহাট চিনার পার্কের মোড় এখন জমজমাট। আমিনা হোটেলের বাড়ির তিনতলায় ক্লাব টুয়েন্টি ওয়ান আর ছ তলায় খোলা আকাশের নিচে কফি শপ সেভেন স্কাই পথ চলা শুরু করল । এই দুটি রেস্তোরাঁর কর্ণধার দেবনাথ দম্পতি। বিশ্বজিৎ দেবনাথ, শুক্লা দেবনাথ। স্কুল ও পরিবহন ব্যবসা সহ বিভিন্ন ব্যাবসায় সাফল্যের চূড়ায় দাঁড়িয়ে এই খানা খাজনার সৃষ্টি করলেন এই দম্পতি।
এই খাদ্য পরিষেবা ব্যাবসায় নতুন হলেও তাঁর পরিকল্পনা কিন্তু বেশ পেশাদার।আজকের প্রজন্মের কথা চিন্তা করে সাজিয়ে তুলেছেন এই দুটি রেস্তোরাঁ। ক্লাব টুয়েন্টি ওয়ান যেহেতু হুক্কা বার রেস্তোরাঁ সেহেতু আলো আঁধারির এক মোহময় পরিবেশ রাখা হয়েছে। রয়েছে ডি জে। চিরাচরিত টেবিল চেয়ারের পাশাপাশি গদিতে বসে আড্ডার বাদশাহী মেজাজে হুঁকোয় সুখটান এখানে বাড়তি আকর্ষণ। বাঙালি হুঁকো প্রীতি আজকের নয়। ছেলেবেলার সেই ছড়া। গড়গড়ার মা লো, তোর গড়গড়াটা কই! হালের গরু বাঘে খেয়েছে পিঁপড়ে টানে মই। গড়গড়ার মা অর্থাৎ ছেলের গড়গড়া প্রীতি থেকেই মায়ের এই পরিচয়। বাদশা আকবরের সৌজন্যে ভারতে হুঁকোর আগমন। সেযুগে হুঁকো জ্বালানি কাঠকয়লাকে বলা হতো কালো বাতাসা। জমিদারের হাত ধরে নারকেল মালার গড়গড়া এখন রহেশি হয়েছে। তামাকে হয়েছে বিপ্লব। ফল ফুলের নির্যাসে এখন হুঁকোর তামাক নতুন প্রজন্মকে আকর্ষণ করছে। ক্লাব টুয়েন্টি ওয়ান কম্বো অফারে যোগ করেছে হুঁকো। সব ধরনের সুগন্ধি ছাড়াও মেনুতে আছে নারকেল কোল, ম্যাজিক কোল । মকটেল সংস্কৃতি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে। ভারত তথা বাংলাতেও একই ধারা। এই রেস্তোরাঁতেও আছে হরেক মকটেল।
ছয়তলার সেভেন স্কাই কফি লাউঞ্জ এক খোলা আকাশের নিচে যেন একটুকরো ল্যান্ডস্কেপ। কৃত্তিম জলাশয় ঘিরে এক অনুপম পরিবেশ হরাহিকদের যে মানসিক তৃপ্তি দেবে সেটা বলাই বাহুল্য।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিত্বরা হাজির হন। এক সাক্ষাৎকারে কর্ণধার বিশ্বজিৎ দেবনাথ জানান,আমরা এই রেস্তোরাঁ দুটিতে একদিকে দাম রেখেছি হাতের নাগালে।তেমন খাদ্যের পরিমাণ ও মানের দিকে দৃষ্টি রেখেছি।আপাতত বেলা ১২ টা থেকে রাত বারোটা খোলা থাকলেও কিছুদিন পর থেকে রাত তিনটে পর্যন্ত খোলা থাকবে। পরিবেশ রচনাতেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।ক্লান্তি কাটাতে এই রেস্তোরাঁ দুটিতে কিছুক্ষন কাটিয়ে গ্রাহকরা পাবেন সব পেয়েছির তৃপ্তি।