গ্রুপ ডি মামলায় বেআইনী নিয়োগের তালিকা তলব বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা গুলিতে একের পর এক নজিরবিহীন নির্দেশ যেমন জারি করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।ঠিক তেমনি কলকাতা হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু একের পর এক যে নির্দেশ দিচ্ছেন, তাতে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের কাছে মেধা তালিকা অনুযায়ী চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বাড়ছে।মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় রাজ্যের কাছে বেআইনী নিয়োগের তালিকা চাইলেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি-তে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই, এমন অভিযোগ উঠে।কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কয়েক টি মামলা দাখিল হয়েছে । এবার গ্রুপ ডি-র প্যানেলে থাকা কতজন বেআইনিভাবে চাকরি করছেন? তার তালিকা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু।এদিন বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর এজলাসে গ্রুপ ডি-তে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি ছিল সেই শুনানিতেই বিচারপতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানতে চান, -‘ গ্রুপ ডি-র প্যানেলে থাকা কতজন চাকরি করছেন?’ মামলাকারীদের অভিযোগ , -‘ এসএসসি গ্রুপ ডি-তে নিয়োগের জন্য যে ১৬৯৮ জনের প্যানেল তৈরি হয়েছিল তাতে অনেকেই বেআইনিভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। শুধু তাই নয় তাঁদের মধ্যে অনেকে চাকরি করছেন’।মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বসু সেই অবৈধ নিয়োগের তালিকা চাইলেন রাজ্যের থেকে। বিচারপতি নির্দেশ দেন -‘ সংশ্লিষ্ট জেলা ভিত্তিক ডিআইরা প্যানেলের তালিকা ধরে বেআইনি সুপারিশপত্র প্রাপকের নাম ও তাঁদের মধ্যে কারা চাকরি করছেন তা খুঁজে বের করবে’। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের থেকে ১৬৯৮ জনের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাস।প্রসঙ্গত , গত ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের প্যানেলে নাম থাকা কতজন বেআইনি ভাবে চাকরি করছে, তা খুঁজে বার করতে রাজ্যকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু এই বিষয়ে রাজ্যের থেকে তথ্য চেয়েছেন।আদালত সুত্রে জানা গিয়েছে, -‘ গ্রুপ ডি প্যানেলে থাকা ১ হাজার ৬৯৮ জনের নামের তালিকা তৈরি করে দেবে সিবিআই’। তবে অভিযোগ, এদের মধ্যে অনেকেই বেআইনিভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এবং চাকরি করছেন। তাই প্যানেলে নাম থাকা কতজন চাকরি করছেন? এই বিষয়ে জানতে চাইছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই তথ্যই রাজ্যকে খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সংশ্লিষ্ট জেলা ভিত্তিক ডিআই’রা তালিকা ধরে খুঁজে বার করবেন বলে নির্দেশ এসেছে। কিছুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টে গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই দাবি করেছিল -‘ এখনও পর্যন্ত ২১ হাজার পদে দুর্নীতি হয়েছে’। ওএমআর শিট নিয়েও বড় তথ্য সামনে আসে।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই সিবিআই জানায়, -‘ প্রথমে ভাবা হয়েছিল মেধাতালিকায় গোলমাল রয়েছে। কিন্তু পরে দেখা যায় দুর্নীতি আরও অনেক বড়! সব নথি এসএসসি-কে দেখানো হয়েছে’। এখন তাদের ঠিক করতে হবে, তারা কী ভাবে ত্রুটি সংশোধন করবে। বাংলার স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওমএমআর শিট সংক্রান্ত হার্ড ডিস্ক কীভাবে গাজিয়াবাদে পৌঁছল, তা বড় অবাক হওয়ার বিষয়। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এ ব্যাপারে আরও গভীর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।রীতিমতো হাইকোর্টের কড়া নজরদারিতে চলছে সিবিআই তদন্ত।