নিজস্ব প্রতিনিধি –
“প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা”র সঙ্গে এবার হাত মেলাল কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট সংক্ষেপে সিএনসিআই।
যৌথ উদ্যোগে হয়ে গেল ক্যানসার সচেতনতা এবং পরীক্ষা শিবির দক্ষিণ ২৪পরগণার নামখানার গুড়িয়াঘেড়ি গ্রামে। সিএনসিআই-র পক্ষ থেকে তিন বিশিষ্ট চিকিৎসক। গাইনো অঙ্কোলজিস্ট – ডঃ শ্রেয়া বসু, স্তন ক্যানসারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক – ডঃ সন্তোষ মাধবাতুলা ও ইএনটি ক্যানসারের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ সুকন্যা নস্কর।
ছিলেন “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা”র পক্ষে সুমন্ত্র বসু ও মৈনাক ঘোষ। Gearles Club Bengal এর পক্ষ থেকে জয়দ্বীপ ব্যানার্জী। CNCI এর আধিকারিকদের তরফ থেকে ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য, পার্থ চক্রবর্তী, নবনীতা সাহা, রাকিবা বেগম ও অন্যান্যরা।
কোভিডের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আরও অনেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা”। প্রধান লক্ষ্য ছিল সব মুখে খাবার পৌঁছে দেওয়া। সঙ্গে অক্সিজেন আর প্রয়োজনীয় ওষুধ। কাজটা চলছিল পুরোদমে। সেই বসিরহাট থেকে বেহালা সুন্দরবনের বাদাবন পর্যন্ত। সঙ্গী নিজেদের বেতনের টাকা, একটা লড়ঝড়ে স্কুটি আর অসম্ভবকে সম্ভব করার তীব্র ইচ্ছা। পরে অবশ্য কিছু বন্ধু হাত বাড়িয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ মৃত্যু কমলেও মাথা থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভূতটা গেল না। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝেছিলেন সুমন্ত্র, মারণ রোগ ক্যানসারের বিরুদ্ধেও লড়াই সম্ভব। সুমন্ত্রর নিজের মা ক্যানসারে আক্রান্ত। কেমো চলছে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে। তাতেও ভীত নন সুমন্ত্র, লড়াইটা লড়ছেন। কিন্তু যাতে অন্য কেউ এই মহাব্যাধিতে আক্রান্ত না হন, এবং হলেও যাতে মানসিক ভাবে ভেঙে না পরে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতির দ্বারা দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারেন। তার জন্য প্রয়োজন পরীক্ষা ও সচেতনতা শিবির।
আর তাই নামখানার দক্ষিণ দুর্গাপুর ব্লকের গুড়িয়াঘেড়ি গ্রামে আমরা ক’জন ক্লাবের সভাপতি শ্রী সপ্তরঞ্জন পাত্র এবং তপন দিন্ডা মহাশয়ের আমন্ত্রণে সারা দিয়ে ” প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা” উদ্যোগে “চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট কলকাতা” এর একান্ত নিঃশর্ত সহযোগিতায় – “ক্যান্সার সচেতনতা এবং পরীক্ষা শিবির”-এ আয়োজন সভায় সহজ সরল ভাষায় সেই কথাই বললেন চিকিৎসক সুকন্যা নস্কর। নিজের সংক্ষিপ্ত অথচ ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ ভাষনে তিনি বলেন, ‘ক্যানসারকে ভয় পেলে চলবে না। শুরুতেই রোগ নির্ণয় করা গেলে দীর্ঘ সুস্থ জীবন পেতে পারেন ক্যানসার রোগীরা। সে কারণেই প্রয়োজন সচেতনতা, পরীক্ষা আর জীবন শৈলীর কিছু বদল। তাহলেই রুখে দেওয়া যায় ক্যানসারকে। সামান্য চিকিৎসার পর আক্রান্তরা পেতে পারেন সুস্থ স্বাভাবিক আর দীর্ঘ জীবন। আনসার আছে ক্যানসারেরও। সে আনসার বা উত্তর হল সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের।”
তবে শুধু নামখানায় একটা ক্যানসার সচেতনতা শিবির নয়, এখন থেকে রাজ্যের সর্বত্র ক্যানসার পরীক্ষা ও সচেতনতা শিবির করবে “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা”, এবং আগামী দিনেও ঠিক একই ভাবে নিঃশর্তে সহযোদ্ধার মত এই মহাব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত সিএনসিআই।
“প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা” এবং সিএনসিআই (কলকাতা) আশাবাদী এই মহাব্যাধির বিরুদ্ধে মহাযুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের সকল মানুষ পাশে থাকবে এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।
বিস্তারিত জানতে নজর রাখুন “Project অন্নপূর্ণা” এর ফেসবুক পেজে। সেখানেই হদিশ মিলবে ক্যানসার সচেতনতা আর পরীক্ষা শিবির নিয়ে কবে কোথায় কখন আসছে “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা”।
যদি সম্ভব হয়, আপনারা নিজেরাও উদ্দোগ নিন নিজ নিজ এলাকায় এই শিবির আয়োজন করার, আপনাদের পাশে থাকবে “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা” ও “সিএনসিআই”। নিজেরা আসুন, আত্মীয় বন্ধুদেরও বলুন। ক্যানসারে মৃত্যু ভয়ের আগে “প্রজেক্ট অন্নপূর্ণা” মানে মানুষের মন্দির, যেখানে পুজো হয় মনুষ্যত্বের, সঙ্গে সিএনসিআই।
আর এই মহাযজ্ঞে সকলের পাশে সামিল হয়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল “Gearless club Bengal”