আসানসোলে পরিত্যক্ত খনিতে আগুন, উত্তেজনা
পারিজাত মোল্লা,
রবিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কেন্দা এলাকায় পরিতক্ত খনি গর্ভে ফের জ্বলে উঠল আগুন। মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে আগুনের লেলিহান শিখা। জামুড়িয়ার কেন্দা এলাকায় ঘটল এই ঘটনা।তাতে চাঞ্চল্য রয়েছে। রবিবার ভোররাত থেকে কেন্দা কোলিয়ারীর বন্ধ ২ নম্বর পিটে প্রচন্ড কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিলো। সেই ধোঁয়া রূপান্তরিত হল ভয়াবহ আগুনে। গত ২০১৭ সালে এইরকমই আগুন ও ধসের জেরে কেন্দা গ্রামের একাংশকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিলো নিকটবর্তী বিদ্যালয়গুলিতে। আগুন নিভতেই আবার তাঁরা ফিরে যায় নিজ নিজ বাড়িতে। বারবার আগুন ও ধসের জেরে আতঙ্কিত গোটা গ্রামের মানুষ। কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটি বারবার পুনর্বাসনের দাবি জানালেও মেলেনি পুনর্বাসন। তবে এবার যে জায়গায় আগুন লেগেছে সেটি বিস্তীর্ণ ফাঁকা এলাকা। তবে কাছেপিঠে রয়েছে শালডাঙ্গা গ্রাম। স্থানীয়দের আশঙ্কা মাটির তলের ওই আগুন হয়তো ওপর থেকে নিভিয়ে দেওয়া হবে। তবে আগুন নিভে গেলে ভূগর্ভস্থ কয়লা ছাই হবে এবং শূন্যস্থান তৈরি হবে। তখনই ধ্বস নামতে পারে এলাকায়। তবে ওই আগুন নেভানোর জন্য মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে ইসিএল কর্তৃপক্ষ।বলে জানা গেছে ।কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জানা গেছে , ‘এই আগুন নিত্য নৈমিত্যিক ঘটনা। প্রথমে আগুন জ্বলবে। তারপর আগুন নেভাতে মাটি চাপা দিয়ে দেবে। সেই কারণে দীর্ঘদিন পুর্নবাসন চেয়ে আসছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের মানুষজন। এই নিয়ে অনেক চিঠি করা হয়ছে। ২০১৭ সালে একই ঘটনা ঘটে। সেই সময় ওই এলাকার বাসিন্দাদের কেন্দা হাইস্কুলে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন ম্যানেজমেন্ট কোনও কথাই কানে তুলছে না’। এখানে প্রায় দেড়শো পরিবার রয়েছে।প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে জেলা থেকে আরও একটি মর্মান্তিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার স্টোর থেকে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য যেসব প্রাইভেট ট্রাক চলাচল করে সেই রকমই একটি ডাম্পারের চালক ছিলেন রঞ্জিত। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। ডাম্পারের সামান্য কিছু কাজ করাতে গ্যারাজে গিয়েছিলেন। বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন এসে স্নান খাওয়া করবেন। জেমারি থেকে ফিরে আসার পথে আল্লাডিতে ট্রাকের ডিজেল ট্যাঙ্কে আগুন লেগে গিয়েছিল। গাড়িতেই দগ্ধ হন তিনি। জলন্ত অবস্থায় রাস্তায় ছোটাছুটি করেছেন রঞ্জিত। সেই দৃশ্য ছিল শিউরে ওঠার মতো। পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।কেন্দা গ্রামে পরিত্যক্ত খনিতে আগুন লাগার পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ গ্রহণে আর্জি রেখেছেন কেন্দা এলাকার বাসিন্দারা।