রাস্তা দখল মুক্ত করল গুসকরা পৌর কর্তৃপক্ষ
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
ভারতের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা জবরদখল। রাস্তার দু'পাশে, রেললাইনের ধারে, ড্রেন বা সেচখাল বুজিয়ে একের পর এক গড়ে ওঠে স্হায়ী বা অস্হায়ী কাঠামো । মুষ্টিমেয় কয়েকটি ভোটের লোভে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিপদে ফেলে শাসক বা বিরোধী উভয় দলই নীরব থাকে। উভয় পক্ষের নীরবতার সুযোগে জবরদখলকারীদের সাহস বেড়ে যায়। স্হানীয় প্রভাব বা ক্ষমতাশালী নেতা নিজে যেমন সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ গড়ে তোলে তেমনি একই কাজে অপরকে উৎসাহিত করে। শোনা যায় এরফলে তাদের নাকি কিছু প্রাপ্তিও ঘটে। মাঝ থেকে বিপত্তি ঘটে সাধারণ মানুষের। দুর্ঘটনা হয়ে ওঠে নিত্য সঙ্গী। এই চিত্র ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যের সর্বত্র।
রাজ্য বা জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত যাদেরই হোক রাস্তার পাশ থেকে জবরদখলকারীদের সরিয়ে দিয়ে অন্তত একটা ক্ষেত্রে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে গুসকরা পৌর কর্তৃপক্ষ, বকলমে স্হানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যতইহোক পৌরভোট দরজায় কড়া নাড়ছে এবং দিনের শেষে বিক্ষোভকারীদের সমস্ত বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হবে স্হানীয় নেতৃত্বকে। পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে বিরোধীরা।
গুসকরা শহরের কেন্দ্রস্থলে আসার জন্য মোট ছ'টি রাস্তা আছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গুসকরা স্কুলমোড় থেকে স্টেশনগামী রাস্তা। বাসস্ট্যান্ড, একাধিক ব্যাংক, ওষুধের দোকান, ডাক্তারের চেম্বার ইত্যাদির অবস্থানের জন্য রাস্তাটি সবসময় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু কিছু দিন ধরে জবর দখলকারীদের সৌজন্যে রাস্তাটি সঙ্কীর্ণ হতে থাকে। শুধু স্হানীয় মানুষজন নয় কর্মসূত্রে শহরে আসা মানুষজনও এর বিরুদ্ধে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে চাপ বাড়তে থাকে কর্তৃপক্ষের উপর। নড়েচড়ে বসে তারা। প্রথমে মালপত্র নিয়ে সরে যাওয়ার জন্য দখলকারীদের আটচল্লিশ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরে না যাওয়ার জন্য কিছুটা বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষ দখলকারীদের সরিয়ে দেয়। তবে এক্ষেত্রে লোডার দিয়ে কাঠামোগুলো ভাঙচুর না করে মালপত্র পৌর কর্তৃপক্ষ তুলে নিয়ে যায়। জানা যায় সেগুলো পরে মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
জবরদখলকারীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ খুব খুশি। তাদের আশা গুসকরার অন্যান্য স্হানগুলো দখল মুক্ত করা হবে। প্রায় কুড়িটি কাঠামো সরিয়ে দেওয়া হলেও আপাতত বিক্ষোভের কোনো খবর নাই।
পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কুশল মুখার্জ্জী বললেন – মানুষের মঙ্গল করাই আমাদের উদ্দেশ্য, ক্ষতি করা নয়। কিন্তু অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুজোর আগেই আমরা সমস্ত রাস্তা দখল মুক্ত করব। দখলকারীদের কাছে তার আবেদন তারা যেন অবিলম্বে স্বেচ্ছায় দখল করা জায়গা ছেড়ে দেয়।