দুস্থদের পাশে ঝাড়খণ্ডের স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা,
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
কথায় আছে -'যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে' এবং এটা মমতাময়ী মায়েদের পক্ষেই সম্ভব। নিজের অজান্তেই দুটি হাত হয়ে ওঠে শতহাত। বাস্তব জগতে তার উদাহরণ অসংখ্য আছে। দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যের সেবা করতে করতে 'আমরা দশভুজা' সাহিত্য পত্রিকা বছর দুয়েক আগে সাহিত্য জগতের নিজের পরিচিত গণ্ডি অতিক্রম করে দুঃস্থ মানুষদের সেবা করার অঙ্গীকার করে সেবার জগতে হয়ে ওঠে 'শতভুজা'। নিজেদের সাধ্যমতো বারবার দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের সদিচ্ছার পরিচয় তারা গত দু'বছর ধরেই দিয়ে চলেছে। করোনা অতিমারির জন্য ২০২০ সালে তাদের কর্মকাণ্ড কিছুটা থমকে গেলেও করোনার ভ্রকুটি কিছুটা কমতেই আবার জোরকদমে তারা তাদের সেবার কাজ শুরু করে দিয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। এদিকে বড়দিন দরজায় কড়া নাড়ছে। অথচ শীত নিবারণের মত ওদের না আছে উপযুক্ত পোশাক অথবা না আছে কেক কিনে আনন্দ করার মত আর্থিক সঙ্গতি। ওরা ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের অদূরে দলমা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত "তুরিয়াবেরা" গ্রামের বাসিন্দা।
গত ২৪ শে ডিসেম্বর এইসব দুস্থদের পাশে দাঁড়ালো জামশেদপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা 'শতভুজা'। সাতসকালেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্হার সদস্যরা হাজির হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট গ্রামে। তারপর একে একে দুশোর বেশী মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় শাড়ী, জামা, শীতবস্ত্র, কম্বল ইত্যাদি। একইসঙ্গে গ্রামের অসহায় মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয় কিছু খাবার।
সংস্হাটি এখানেই থেমে থাকেনি। গ্রামের প্রায় ৭৫ জন শিশুকে নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল 'বসে আঁকো' প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের সুযোগ পেয়ে গ্রামের শিশু এবং তাদের বাবা-মায়েরা খুবই খুশি। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের জন্য ছিল কাগজ, রং-পেন্সিল এবং নানাবিধ উপহার সামগ্রী।
'শতভুজা' স্বেচ্ছাসেবী সংস্হার কর্ণধার কৃষ্ণা চক্রবর্তী বললেন - দীর্ঘদিন ধরে শহরের পরিবেশে সাহিত্যচর্চা এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একটা সুপ্ত ইচ্ছে মনের মধ্যে ছিল। তাই গড়ে তুলেছি এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্হাটি। পাশে পেয়েছি অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী ও সহৃদয় মানুষকে। ফলে দুস্থদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের পক্ষে সহজ হয়েছে। আশাকরি আগামী দিনে আরও বেশি সহৃদয় মানুষকে পাশে পাব।