Spread the love

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাদিবসে আত্মোপলব্ধি কাজলের

মমতার শিক্ষায় সূচপুর গণহত্যার বদলা না নেওয়ার হিসাবি উচ্চারণ

       খায়রুল  আনাম

বোলপুর, ১ জানুয়ারি–এ রাজ্যে  বাম জামানায় যে সব হত্যা ও গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হয়ে রয়েছে নানুরের নওয়ানগর-কড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের  সূচপুরে ২০০০ সালের ২৭ জুলাই সিপিএমের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া ১১ জন ক্ষেতমজুরের খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি।  হাড়হিম করা সেই গণহত্যার ঘটনাটি যখন ঘটে তখন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তিনি দিল্লি থেকে চলে এসেছিলেন নানুরের বাসাপাড়ায়।  ময়নাতদন্তের পরে ওই ১১ জনের মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়েছিলো নানুরের বাসাপাড়ায়। সেখানেই  ওই শহীদদের স্মরণে তৈরী হয়েছে শহীদ বেদী। শহীদ ১১ জনের পরিবারের একজন করে ব্যক্তিকে রেলে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি বছর ২৭ জুলাই সূচপুর  গণহত্যা দিবসে শহীদ স্মরণে আসতেন বাসাপাড়ায়। পরবর্তীতে অবশ্য তাতে ছেদ পড়েছে।  সূচপুর গণহত্যা ছাড়াও বাম জামানায় নানুরে  সিপিএমের হাতে একের পর এক বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক কর্মীরা নৃশংসভাবে  খুন হয়েছেন।  নানুরের পাটনীল গ্রামকে সিপিএম  জ্বালিয়ে দেওয়া ছাড়াও সেখানে গণধর্ষণের  মতো ঘটনাও ঘটিয়েছিলো বলে অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে নানুরের তৎকালীন বিধায়ক সিপিএমের বনমালী  দাসকে  তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিলেন বোলপুরের তৎকালীন এসডিপিও নজরুল ইসলাম।  দাসকলগ্রাম, শেরপুর গ্রাম সেই সময় জ্বালিয়ে দিয়েছিলো সিপিএম। পাপুড়ী গ্রামের একই পরিবারের দুই ভাই ও তাঁদের বাবাকে খুন করেছে সিপিএম।  খুন হয়েছেন সোনা চৌধুরীর  মতো তৃণমূল কংগ্রেসের একনিষ্ঠ  কর্মী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের ছেলে।  কিন্তু  রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন  তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে সেইসব হত্যালীলার কোনও বদলা নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন–বদলা নয়, বদল চাই।

     এই ভাবনার পথেই যে তৃণমূল কংগ্রেস চলছে,  সেই কথাটিই  সোমবার ১ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মদিনে নানুরের বাসাপাড়ায়  মিলন মেলার উদ্বোধনী  অনুষ্ঠানে এসে জানিয়ে দিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি  পাপুড়ী গ্রামের শহীদ পরিবারের শেখ ফায়েজুল হক কাজল। এদিন তিনি  বাম জামানায় নানুরে সিপিএমের ধারাবাহিক হত্যালীলার উল্লেখ করে তাকে ‘সিপিএমের পৈশাচিক আচরণ’ বলে উল্লেখ করে জানিয়ে দেন যে, এই  এলাকা থেকেই তিনি প্রথমবার জেলা পরিষদের আসনে জয়ী হয়ে জেলা পরিষদের  সভাধিপতি হয়েছেন। তাই এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর  দুর্বলতা থাকাটাই স্বাভাবিক। জেলার সকল মানুষের সাথেনসাথে এখানকার মানুষের জন্য  তাঁর দরজা সব সময়ই খোলা বলে তিনি এদিন স্পষ্ট উচ্চারণে জানিয়ে দেন এবং ফিতে কেটে  মিলন মেলারও উদ্বোধন  করেন।।

ছবি : মিলন মেলার উদ্বোধন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *