এবার বাংলায় শুনানি হবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
মাতৃভাষার প্রতি প্রত্যেকেরই টান থাকে।ইংরেজিতে মামলার শুনানি হলে অনেক মক্কেলই বুঝতে পারেন না মামলার গতিপ্রকৃতি। তাই উকিলবাবু যা বোঝান,তাই বুঝে থাকেন কেউ কেউ।সোমবার এক মামলার শুনানি পর্বে এক বিচারপ্রার্থীর আবেদনে সাড়া দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন নিজের এজলাসে তিনি মাতৃভাষায় শুনানি চালু করবেন বলে জানালেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।সোমবার একটি মামলার শুনানিতে একথা জানিয়েছেন বিচারপতি। সোমবার এজলাসে তিনি বলেন, ‘যাঁরা রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চল থেকে হাইকোর্টে আসেন তাঁরা ইংরেজি ভাষা ভাল বুঝতে পারেন না। তাই এবার আমার এজলাসে মাতৃভাষা বাংলাতে শুনানি হবে।’ আদালত সুত্রে প্রকাশ, এক যুবক বোনের বিয়ের জন্য আড়াই লাখ টাকা জমিয়েছিলেন। একটি মামলায় তার কাছ থেকে আইনজীবী ভুল বুঝিয়ে মামলার ফাইলিং করার জন্য এক লাখ টাকা নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। আবার আদালতের নির্দেশের কপি নেওয়ার জন্যও ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এদিনে এজলাসে উপস্থিত থাকা এক আইনজীবী কে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “গরিবমানুষগুলোর ভুলটা কী? তাঁরা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ নয় বলেই পদে পদে হোচট খেতে হবে?”এরপরই বিচারপতি বলেন, “কারও যদি ইংরেজিতে কথা বলতে অসুবিধা থাকে তাহলে আমি বাংলাতেই শুনানি শুনব। বাংলা ভাষার কথা বলাটা অত্যন্ত জরুরি। এখন থেকে আমার এজলাসে বাংলাতেও শুনানি হবে।” এদিন এজলাসে এক যুবককে হাতজোড় করে থাকতে দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, “আপনি হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?” এর প্রতুত্তরে ওই যুবক বিচারপতি কে জানান, -‘তিনি ইংরেজি বোঝেন না। বোনের বিয়ের জন্য আড়াই লাখ টাকা জমিয়েছিলেন। একটি মামলায় তাঁর কাছ থেকে আইনজীবী ভুল বুঝিয়ে মামলা ফাইল করার জন্য এক লাখ টাকা নেয়। আদালতের নির্দেশের কপি তোলার জন্য পরে আরও এক লাখ টাকা নেওয়া হয়’। তারপরেও মামলায় সুবিচার পাননি বলে বিচারপতির কাছে অভিযোগ জানান ওই যুবক।এরপরই ওই মামলার নির্দেশের কপি দেখতে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের সমালোচনা করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “সব ক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চ সঠিক নির্দেশ দিচ্ছে না।” এর পাশাপাশি বিচারপতি জানান, “কারও যদি ইংরেজিতে কথা বলতে অসুবিধা থাকে তাহলে আমি বাংলাতেই শুনানি শুনব। বাংলা ভাষার কথা বলাটা অত্যন্ত জরুরি। এখন থেকে আমার এজলাসে বাংলাতেও শুনানি হবে।” ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে -‘ অল্প শিক্ষিত সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের কাছে মামলার গতিপ্রকৃতি স্পষ্ট হবে’। একাংশ উকিলবাবুদের মক্কেল কে টুপি পড়ানোটা কঠিন হবে বলে কেউ কেউ মনে করছেন।