৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতি পাচ্ছে কলকাতা হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে ৫ জন নিয়োগ পেলেন। যাঁদের কর্মকাল শুরু হচ্ছে ৪ মে ২০২২ সাল থেকে ২৩ জুন ২০২৩ পর্যন্ত। এই ৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতিরা হলেন কেশন দমা ভুটিয়া, রবীন্দ্রনাথ সামন্ত, আনন্দ কুমার মুখোপাধ্যায়, সুগত মজুমদার, বিভাস পট্টনায়েক।গত বছর ডিসেম্বর মাসে সর্বশেষ নুতন বিচারপতি পেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সময়ের গতিতে কলকাতা হাইকোর্টে বেড়েছে পাহাড় সমান মামলা, বিশেষত একুশে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তীতে গঠিত হয়েছে বেশকিছু বৃহত্তর বেঞ্চ। ঠিক এইরকম জায়গায় হাইপ্রোফাইল মামলার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা।তারিখের পর তারিখ মিলছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপ্রার্থীদের বলে অভিযোগ। অথচ মামলায় বিচারের গতি আনতে নিয়োগ করছেনা কেন্দ্র এইরকম ছিল অভিযোগ ।এই মুহুর্তে কলকাতা হাইকোর্টে অর্ধেকের বেশি বিচারপতির পদ খালি রয়েছে। পাহাড় সমান মামলা।। অথচ সেই হারে হচ্ছেনা মামলার নিস্পত্তি। নিদিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শুনানি শুরু হয়নি অনেক মামলার। নেই পর্যাপ্ত বিচারপতি। বাধ্য হয়ে সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের মিলছে শুধুই ‘তারিখ’।উল্লেখ্য, ভারতবর্ষে উচ্চ আদালত স্থাপনের ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট প্রাচীণতার ক্ষেত্রে অন্যতম। ১৮৬২ সালে স্থাপিত হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমান হিসাবে কলকাতা হাইকোর্টে সর্বমোট বিচারপতি থাকার কথা ৭২ জন।এঁদের মধ্যে ৫৪ জন স্থায়ী এবং ১৮ জন অস্থায়ী। সেইজায়গায় চলতি বছরের ১ জুলাই অবধি পরিসংখ্যান বলছে কলকাতা হাইকোর্টে রয়েছেন ৩১ জন বিচারপতি। এঁদের মধ্যে ২৯ জন স্থায়ী এবং ২ জন অতিরিক্ত বিচারপতি। তাহলে দেখা যাচ্ছে এখনও ৪১ জন বিচারপতি পদ খালি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।যা শতাংশ বিচারে ৫৬.৯% মতো।এরেই মধ্যে ৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ পেলেন কলকাতা হাইকোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হাইকোর্ট গুলির বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ দেয়।যা কেন্দ্র সরকার মেনে নেয়।তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার কলেজিয়াম কমিটির সুপারিশ কেন কার্যকর করছেনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কমিটি কলকাতা হাইকোর্টের জন্য ৭ জন বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ রেখেছে। এখন ৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ পেলেন । ‘বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলে’র শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির পদাধিকারী আনসার মন্ডল জানিয়েছেন – ” আমরা চাই কলকাতা হাইকোর্টে দ্রুত বিচারপতি নিয়োগ হোক। সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা দ্রুত বিচার পাবেন এতে”। দেখা যাচ্ছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে জম্মু ও কাশ্মিরের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডাল কে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে অনিরুদ্ধ রায় নামে একজন বিচারপতি কে নিয়োগ করা হয়। ৪১ জন বিচারপতি পদ শুন্য থাকায় দাখিল হওয়া মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানান – ” অনেক মামলায় শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে, মামলার নিস্পত্তি ঘটছে কম।আমরা চাই দ্রুত আরও বিচারপতি নিয়োগ হোক “।নুতন ৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতি আগামী বছর ৪ মে থেকে ২০২৩ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন কলকাতা হাইকোর্টে।