Spread the love

স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু দিবসে রক্তদান শিবির,

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

    ইচ্ছে ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্ম বা মৃত্যু দিনকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য কিছু একটা করার।  চেষ্টা চলছিল অনেক দিন ধরেই। আর্থিক বা অন্যান্য কিছু সমস্যার জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছিলনা। অবশেষে পরিবারের সদস্য ও এলাকার প্রতিটি মানুষের সক্রিয় সহযোগিতায় সফলতার মুখ দেখা গেল  ২১ সেপ্টেম্বর, স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু দিবসে । বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রথম অর্থমন্ত্রী যাদবেন্দ্র পাঁজার ৬১ তম মৃত্যু দিবস উপলক্ষ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্ম ভিটে গলসীর সাটিনন্দী গ্রামে আয়োজিত হয় এক রক্তদান শিবিরের। যাদবেন্দ্র পাঁজা স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই শিবির থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার পক্ষ থেকে প্রায় ৭৫ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সংগৃহীত রক্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ দেখা যায়। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে সবার রক্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। 
       এর আগে স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্মভিটেতে তাঁর আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এছাড়াও একটি অঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়। সঞ্চিতা, অনিকেত, দেবস্মিতা, শ্রেষ্ঠা, সায়ন, রাজেন্দ্রনাথ প্রমুখ স্হানীয় প্রায় ১৫০ জন ছেলেমেয়ে সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়াও উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে শতাধিক দুস্থের হাতে বস্ত্র ও জামা-প্যাণ্ট তুলে দেওয়া হয়। উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী অন্তরা মাকড়। শিশু শিল্পী নৈঋতা যশের সঙ্গীত উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্মৃতিচারণ করেন। যাদবেন্দ্র বাবুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা কয়েকজন ব্যক্তিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 
       রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন গলসী ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী, সাটিনন্দী পঞ্চায়েত প্রধান বৈশাখী পুইলে, সুভাষ পুইলে, শৈলেন হালদার, রূপালী হাঁসদা, সাবির আহমেদ, স্বাধীনতা সংগ্রামীর বংশধর কাঞ্চন পাঁজা সহ এলাকার বহু বিশিষ্ট সমাজসেবী এবং সাধারণ মানুষ। 
      বাসুদেব বাবু বলেন - এই শুরু, আশাকরি 'যাদবেন্দ্র পাঁজা স্মৃতি রক্ষা কমিটি' বর্ধমান জেলা তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সামনে 'বাংলার গান্ধী' যাদবেন্দ্র পাঁজার মহান কীর্তি তুলে ধরার জন্য সচেষ্ট হবেন। পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।
    অন্যদিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কাঞ্চন বাবু বলেন - যাদবেন্দ্র পাঁজার মত মানুষেরা শুধু একটা পরিবারের নয় সমগ্র গ্রামবাসী তথা জাতির গর্ব। উনার বংশধর হিসাবে আমি চাই এই ধরনের মহান মানুষদের কীর্তি কাহিনী সবার সামনে তুলে ধরার জন্য এলাকাবাসীরা সচেষ্ট হোক। এরফলে আগামী প্রজন্ম সমৃদ্ধ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *