শিয়ালদহে অনুষ্ঠিত হলো পঞ্চবিন মহাসম্মেলন
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
একজন হলেন বিশিষ্ট সাহিত্য সংগঠক 'সাহিত্য বন্ধু' সোমনাথ নাগ। কার্যত মেঘনাদের মত অন্তরালে থেকে দীর্ঘদিন ধরেই একের পর এক নবীন প্রতিভাকে তুলে আনছেন। অপরজন হলেন বাংলা সাহিত্য জগতের বিশিষ্ট সাধক তথা বাংলা কাব্য জগতের নতুন ঘরানা 'পঞ্চবান' এর স্রষ্টা সুশান্ত ঘোষ। দু'জনের যৌথ প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক পঞ্চবান মহা সম্মেলন-২০২১ এর সাক্ষী থাকল দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ১৫০ জন কবি-সাহিত্যিক।
গত ৩১ শে আগষ্ট 'আন্তর্জাতিক পঞ্চবান কাব্যচর্চা পর্ষদ' এর উদ্যোগে শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে শতাধিক কবি-সাহিত্যিক ও কাব্য প্রেমী সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে সকাল এগারোটা থেকে আন্তর্জাতিক পঞ্চবান মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সুন্দর ভাবে সুসজ্জিত হলটি বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। যদিও করোনা বিধি অমান্য করা হয়নি।
অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চবান ঘরানার স্রষ্টা সুশান্ত ঘোষ, আন্তর্জাতিক পঞ্চবান কাব্য চর্চা পর্ষদের স্রষ্টা তথা বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক 'সাহিত্য বন্ধু' সোমনাথ নাগ, কবি-সাহিত্যিক দেবপ্রসাদ বসু , সাংবাদিক তথা কবি-সাহিত্যিক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য, কবি-সাহিত্যিক ও অসংখ্য সাহিত্য বাসরের আয়োজক 'মেঘদূত' পত্রিকার সম্পাদক সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়, আনন্দ প্রকাশনীর কর্ণধার সাহিত্য-বন্ধু নিগমানন্দ মণ্ডল, কবি মনোরঞ্জন আচার্য্য সহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। লক ডাউন জনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে উপস্থিত থাকতে না পারলেও বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়াল ভাবে লাইভে এসে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি মহঃ আবু তাহের চৌধুরী, কবি আহাদুজ্জামান, কবি অনন্ত বিকাশ ও কবি সুস্থির রঞ্জন সরকার। পঞ্চবান ঘরানার স্রষ্টা কবি-সাহিত্যিক সুশান্ত ঘোষের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা ঝরে পড়ে ওদের কণ্ঠে। আমন্ত্রণ করার জন্য তারা উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলা কাব্য-সাহিত্যের নতুন ঘরানা 'পঞ্চবান' সৃষ্টির জন্য সুশান্ত বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সুশান্ত বাবু নতুন ঘরানার নানা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন এবং নবীন প্রতিভাদের এই ঘরানায় কাব্য লেখার জন্য উৎসাহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রত্যেককে নতুন ঘরানা সৃষ্টি করার জন্য মননিবেশ করার পরামর্শ দেন। তার আশা সবার মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলা কাব্য জগত নতুন করে সমৃদ্ধ হবে। নবীন-প্রবীণের আলোচনায় প্রায় চার ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠান মঞ্চে যূথিকা সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ থেকে ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে ৯১ জন কবির একক পঞ্চবান কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয় । আনন্দ প্রকাশনীর পক্ষ থেকে ২০৮ জন কবির কলমে সমৃদ্ধ পঞ্চবান শারদীয়া পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
এর আগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সোমনাথ নাগ, সুশান্ত ঘোষ, সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়, দেবপ্রসাদ বসু প্রমুখ।
সুদূর বার্ণপুর থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি মুনমুন মুখার্জ্জী। পঞ্চবান শারদীয়া পত্রিকায় তার লেখা কবিতা স্হান পাওয়ায় তিনি সুশান্ত বাবুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন শুধু পত্রিকায় কবিতা স্হান পাওয়া নয় এই ধরনের অনুষ্ঠানে এলে বহু বিশিষ্ট কবির সান্নিধ্য পাওয়া যায়। এটাই সবচেয়ে বড় পাওনা।
অন্যদিকে সোমনাথ বাবু বলেন - প্রবীণদের সাহচর্যে এসে নবীনরা যাতে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পায় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য থাকে। বাংলা কাব্য জগতকে নতুন ঘরানা উপহার দেওয়ার জন্য তিনি সুশান্ত বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন।