Spread the love

‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ থেকে সাহায্য করলেন গুসকরার লক্ষীরা,

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

           মহিলাদের সম্বন্ধে একটা কথা খুব চালু আছে - হাতে টাকা পেলে তারা হয় গহনা কিনবে নাহলে শাড়ি কিনবে। কিন্তু এই মহিলারাই যে আবার 'মা অন্নপূর্ণা' হয়ে দুস্থদের মধ্যে অন্ন বিতরণ করতে পারে ১৯ শে নভেম্বর সন্ধ্যায় সেই অভূতপূর্ব দৃশ্যটা দেখা গেল গুসকরা শিরিষতলা বয়েজ ক্লাবের সৌজন্যে।

            বিধানসভা ভোটের আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী ভোটের পর হাত খরচের জন্য প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের হাতে কিছু করে টাকা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রকল্পের নাম দেন 'লক্ষীর ভাণ্ডার'। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সম্প্রতি অনেক মহিলার অ‍্যাকাউণ্টে সেই টাকা ঢুকতেও শুরু করে। সেই টাকায় শাড়ি বা গহনা না কিনে শিরিষতলা সংলগ্ন ৭ নং ওয়ার্ডের ববিতা, মিতা, ছায়া, রিঙ্কু, মৌসুমী, অঞ্জু, সোমা, শিউলি, ডলি, প্রিয়াঙ্কা, নীলম, রঞ্জু প্রমুখ ক্লাব সম্পাদক সওগত মল্লিকের হাতে সেই টাকা তুলে দেন। উদ্দেশ্য অন্তত একদিনের জন্য এলাকার দুস্থ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া। শীতের সন্ধ্যায় গরম গরম ভাত, চিকেন ও মিষ্টি পেয়ে এলাকার মানুষ খুব খুশি। প্রসঙ্গত বেশ কিছুদিন ধরে প্রতি শুক্রবার সহৃদয় মানুষের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট ক্লাব এলাকার প্রায় ৬০-৭০ জন দুস্থ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। 

          খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী, যুব সভাপতি উৎপল লাহা, তৃণমূল আইটি সেলের রবিনাথ আঁকুরে,  ক্লাব সম্পাদক ও সভাপতি সহ অন্যান্য সকল সদস্য এবং মহিলা সদস্যরা।

         ববিতা দেবী বললেন - আমাদের পাড়ার ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতি সপ্তাহে দুস্থ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতদিন আমরা শুধু রান্নার কাজে সাহায্য করেছি। আর্থিক সাহায্য করার মত সামর্থ্য আমাদের নাই। 'লক্ষীর ভাণ্ডার' প্রকল্পে টাকা পাওয়ার পর আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সেই টাকার কিছুটা অংশ স্বেচ্ছায় ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আজ সত্যিই খুব আনন্দ হচ্ছে। শাড়ি, গহনা কিনেও হয়তো এত আনন্দ পেতাম না। তিনি আরও বললেন আগামী দিনেও মাঝে মাঝে কিছু করে অর্থ সাহায্য করার চেষ্টা করব।

           ক্লাব সম্পাদক সওগত মল্লিক বললেন - এই সপ্তাহে দুস্থদের খাওয়ানোর জন্য কিভাবে টাকার সংস্হান করা যাবে সেটা ভেবে যখন চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম ঠিক তখনই পাড়ার মহিলারা যখন আমাদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেন চমকে উঠেছিলাম। মহিলাদের কেন 'মা অন্নপূর্ণা' বলা হয় সেটা বুঝতে পারলাম। উনাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করবনা।

               অন্যদিকে কুশল বাবু বললেন- এই এলাকার মহিলাদের অবদানের কথা শুনে এখানে ছুটে এসেছি। এদের কথা ভেবে সত্যিই গর্ব হচ্ছে। এরাই হয়তো পথপ্রদর্শক। আগামী দিনে দেখা যাবে শুধু গুসকরার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাবেই 'লক্ষীর ভাণ্ডার' থেকে পাওয়া অর্থের একটা অংশ দিয়ে মহিলারা দুস্থদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন। অন্তত একদিনের জন্যেও তো তারা খাবার পাবে। সেটাই বা কম কিসের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *