বিশ্বকবি ও বিদ্রোহী কবি কে নিয়ে সপ্তাহ ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটি’র
সম্প্রীতি মোল্লা , কলকাতা
কবিপ্রণামে জোড়াসাঁকোর ‘রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটি’।উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটি গত ২২ শে মে থেকে ২৯ শে মে, এই আট দিন ধরে সাড়ম্বরে পালন করে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১ তম জন্মোৎসব সোসাইটির নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ রথীন্দ্রমঞ্চে। মাঝে ২৪ তারিখে পালিত হয় নজরুল জয়ন্তী – বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন স্মরণ করে। প্রতি সন্ধ্যায় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ববর্গের বর্ণময় উপস্থিতি, বক্তৃতামালা, সম্মেলক গান, সমবেত আবৃত্তি, একক আবৃত্তি, গান, নৃত্যালেখ্য, মঞ্চনাটক ইত্যাদি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কবিগুরুর প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সোসাইটির সভাপতি বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। মঞ্চে বিশিষ্ট অতিথি সমাবেশ ছিল প্রতিদিন। উপস্থিত ছিলেন শ্রী শিবাজী প্রতিম বসু (উপাচার্য্য বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়), চন্দননগর মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র শ্রী রাম চক্রবর্ত্তী, বন্ধন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী চন্দ্রশেখর ঘোষ, রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটির কার্যকরী সভাপতি ডঃ সুজিত কুমার বসু, কর্মপরিচালন সমিতির সদস্যা শ্রীমতী অমিতা দত্ত, বিশিষ্ট রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ শ্রী সত্যকাম বাগচী, বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত নজরুল বিশেষজ্ঞ জনাব শামসুল হুদা, কলকাতা মহানগরের উপ-মহানাগরিক শ্রী অতীন ঘোষ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়, ডাঃ জি পি সরকার, বিচারপতি শ্রী সৌমিত্র পাল, শ্রী ধীমান দাশ, অধিকর্তা কে.সি.দাশ, বিধায়ক শ্রী বিবেক গুপ্তা, স্থানীয় পৌরপিতা শ্রী রাজেশ সিনহা, প্রাক্তন বিধায়ক শ্রী দীনেশ বাজাজ প্রমুখ। প্রতি সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রারম্ভিক ভাষণ দিয়ে সূচনা করেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। আমন্ত্রিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা পরিবেশনা করেন সমবেত গান, আবৃত্তি, নৃত্য আলেখ্য, মঞ্চনাটক ইত্যাদি – সকলের নজর কাড়ে নৃত্যগুরু বন্দনা সেন পরিকল্পিত এবং শ্রীমতী সুচন্দ্রা ব্যানার্জী মিত্র পরিবেশিত “শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও গীতাঞ্জলি” শীর্ষক নৃত্যালেখ্যটি। আমন্ত্রিত অন্যান্য সংস্থা ছাড়াও রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটির শিল্পীকলাকুশলীরাও পরিবেশন করেন সমবেত সঙ্গীত ও আবৃত্তি বিভিন্ন দিনে। একক গানে ছিলেন গৌতম মিত্র, রাজেশ্বর ভট্টাচার্য্য, লোপামুদ্রা মিত্র, শিঞ্জিনী আচার্য্য মজুমদার, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য, সুস্মিতা গোস্বামী, শম্পা কুণ্ডু, সোনালী কাজী, সৈকত মিত্র, শৌণক চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, দীপাবলী দত্ত, অনুশীলা বসু, দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায়, এরিনা মুখোপাধ্যায়, সুমন পান্থী, অলোক রায়চৌধুরী, স্বপন সোম, দেবারতি সোম, মনোজ ও মনীষা মূরলী নায়ার, রীনাদোলন বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীতমা রায়, জয়ন্তী সরেন, পিয়া গুহ রায়, মালবিকা বোস, অধ্যাপক পার্থজিত সেনগুপ্ত, সৌমি বসু ও আরও অনেকে। কবিতা আবৃত্তি করেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, মধুমিতা বসু, ঈশিতা দাস অধিকারী, মেধা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ব্রহ্মচারী, স্বপ্না দে, কাজল সুর, ইন্দিরা ব্যানার্জী, দোলনচাঁপা সরকার, শ্রাবন্তী সাহা, মিতা ঘোষ, সলিল সরকার, সাবিনা ইয়াসমিন, শতানীক ভট্টাচার্য্য, অমল পাহাড়ী, বাসবী চৌধুরী, শম্পা বটব্যাল, বর্ণালী সরকার, রূপা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। শেষ সন্ধ্যায় শেষ আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটির নাট্যকলাকুশলী দ্বারা অভিনীত মঞ্চনাটক ‘মানভঞ্জন’ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটক। নাট্যরূপ দানে শ্রীমতী শ্যামলী বসু, নাট্যনির্দেশনায় প্রসেনজিত ঘোষ ও দেবাশীষ সেনগুপ্ত। আট দিন ধরে চলা কবিপ্রণাম শেষ হয় ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত “জন গণ মন” গানটি গেয়ে একযোগে একসাথে। সোসাইটির তরফে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়।