Spread the love

রজঃধর্ম চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিধান সম্পর্কিত সচেতনতা শিবির পরিচালনা করল মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ

রাজকুমার দাস

অলাভজনক বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ’-এর পরিচালনায় ‘রজঃস্রাবকালীন পরিচ্ছন্নতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিধান’ সম্পর্কিত দুই দিনের এক কর্মশালা শুরু হল কোলকাতার ডিহি এন্টালী এলাকার ‘শ্রী গান্ধী বিদ্যালয় কো-এড’ প্রাঙ্গণে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা কিষেনকুমার অগ্রবাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “সর্বজনীন স্থলে রজঃধর্ম সম্পর্কিত আলোচনার ক্ষেত্রে মহিলাদের স্বভাব সুলভ লজ্জা, জড়তা, অজ্ঞতা বোধ এখনো প্রধান অন্তরায়।
ঠিক সেই কারণে আমরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে কিশোরী ও তরুণীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছি।”

‘শ্রী গান্ধী বিদ্যালয় (কো-এড)’-এর প্রধান শিক্ষক অলোক সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া সমাজের ১৫০ ছাত্রীকে ‘মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ’-এর তরফ থেকে ‘রজঃধর্ম চলাকালীন শারীরিক পরিচ্ছন্নতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিধান’ সম্পর্কিত সচেতনতা মূলক শিক্ষা যেমন দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনি আয়োজক সংস্থার তরফ থেকে এই ছাত্রীদের হাতে একটা করে কিটস প্যাকেটও তুলে দেওয়া হবে।”

‘মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, “কিটস প্যাক-এর ভেতরে থাকছে চারটে করে স্যানিটারি ন্যাপকিন (প্যাড), একটা চকলেট ও পৌষ্টিক পানীয়-এর একটা ছোটো প্যাকেট।”

একটা সময় ছিল যখন গ্রামীণ ভারতের পাশাপাশি শহরাঞ্চলের অনেক পরিবারেই অজ্ঞতা ও কুসংস্কার বশতঃ রজঃধর্ম চলাকালীন মহিলাদের ঠাকুর ঘরে ঢোকার ছাড়পত্র মিলত না, এমনকি ঘরের মহিলাদের সাথে সেই সময় একঘরে থাকা বা একসাথে খাওয়ার দৃশ্যও ছিল বেশ দুর্লভ। আজ সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই দৃশ্য কিছুটা পালটালেও এখনো পুরোপুরি দূরীভূত হয়নি।

একদিকে যেমন লজ্জাজনিত কারণে এখনো কিশোরী, তরুণী এমনকি ঘরের গৃহবধূরাও স্থানীয় ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র’ থেকে মাত্র ১ টাকা খরচ করে স্যানিটারি প্যাড কিনতেও দ্বিধা বোধ করেন, অন্যদিকে তেমনই রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষিত লোকেরাও অজ্ঞানতা জনিত কারণে জানেনই না ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন ঔষধি কেন্দ্র’গুলো থেকে মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যায়।
‘মি অ্যাণ্ড মাই ফ্রেণ্ডজ’ শুধু যে ছাত্রীদের মধ্যে ‘রজঃধর্ম সম্পর্কিত পরিচ্ছন্নতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিধান’-এর জ্ঞান বিতরণ করেছেন তাই নয়, এরা জনগণকে এটাও জানাচ্ছে কোথায় গেলে অতিস্বল্প মূল্যে স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যাবে।

আজ ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের ‘রজঃধর্ম সম্পর্কিত পরিচ্ছন্নতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিধান’-এর জ্ঞান বিতরণ করার সময় বন্দনা গর্গ জানিয়েছেন, “রজঃধর্ম চলাকালীন অনেক কিশোরী, তরুণী বা মহিলাই বিভিন্ন রকমের ব্যথা বা শারীরিক সমস্যার শিকার হন, প্রত্যেকদিন নিয়ম করে যদি ‘বদ্ধকোণাসন’ ‘ঊষ্ট্রাসন’এবং ‘মার্জারী আসন’/ ‘বিড়ালাসন’ রপ্ত করা যায় সেক্ষেত্রে রজঃস্রাব চলাকালীন ব্যথা বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা অনেক কম হবে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ‘শ্রী গান্ধী বিদ্যালয়’-এ সচেতনতা বৃদ্ধি জনিত অনুষ্ঠান করার আগে আয়োজক সংস্থা ‘গণ্ডা পাড়া শাস্ত্রী হিন্দী হাইস্কুল’, ‘ডন বস্কো অ্যালুমনি লিলুয়া’ এবং ‘ছাত্র কল্যাণ সংঘ’-র মতো পঠনপাঠন কেন্দ্রে সচেতনতা শিবির চালিয়ে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *