Spread the love

মুখ্যসচিবের দারস্থ ত্রিপুরার ‘আক্রান্ত’ সিপিএম 

খায়রুল আনাম

পুলিশ কে বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা মিলেনি।এবার মুখ্যসচিবের দারস্থ হলো ত্রিপুরা সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের (এম)-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরি গত শুক্রবার  মুখ্যসচিব অলোক কুমারের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছেন,-‘ দলের একাধিক প্রবীণ নেতা ও বিধায়কদের যেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। তাদের উপর ক্রমাগত হামলা চালানো হচ্ছে’। এই সিপিআই(এম) নেতার অভিযোগ, গত ৮ সেপ্টেম্বর দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের পর থেকেই বিজেপি কর্মীরা বিরোধী দলগুলিতে কোনও দলীয় কার্যালয়ই খুলতে দিচ্ছে না।চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমের অফিস ছাড়াও রাজ্য জুড়ে সিপিআই(এম) রাজ্য় কমিটির অফিস মিলিয়ে মোট ৩৯টি দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালিয়েছে। ৪টি জেলা কমিটির অফিস, ৭টি সাব-ডিভিশনাল কমিটি অফিস, ২৭টি স্থানীয় কার্যালয় ও একটি শাখা অফিসে গত ৮ সেপ্টেম্বর ভাঙচুর চালানো হয়। অন্তত ৪টি জায়গায় বুলডোজ়ার ব্যবহার করে পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।তাছাড়াও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের গাড়িতে হামলার ঘটনাও উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। শাসক দলের উপর অভিযোগ এনে বলা হয়, “হিংসার ঘটনার পরও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। দুষ্কৃতীরা স্বাধীনভাবেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করা হচ্ছে না। মানিক সরকারের একাধিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক বাদল চৌধুরি, সুধন দাস, রতন ভৌমিক ও শ্যামল চক্রবর্তীর উপরও হামলা চালানো হয়েছে, তাদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।”এই ধরনের হামলা পূর্ব পরিকল্পিত বলেই অভিযোগ এনেছেন  সিপিআই(এম) নেতা। এই কাজে পুলিশও শাসকদলকে সাহায্য করেছে বলে তিনি চিঠিতে অভিযোগ করেছেন। বিরোধী দলের তরফে মুখ্যসচিবকে অনুরোধ জানানো হয়, ত্রিপুরার বিভিন্ন থানায় যে হামলার অভিযোগগুলি দায়ের করা হয়েছে, সেই মামলাগুলির তদন্ত যেন দ্রুত শুরু করা হয়। একইসঙ্গে দলীয় কার্যালয়গুলি খোলার জন্য জন্য পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। এছাড়াও রাজ্যে কোনও প্রকার কর্মসূচির জন্য দলের সভাপতি ও শীর্ষনেতাদের যেন পুলিশি নিরাপত্তা ও কনভয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা  হয়, তার দাবিও জানানো হয়েছে।এখন দেখার মুখ্যসচিব কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন? 

সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ত্রিপুরার ধনপুর এলাকায় মানিক সরকার যখন ঢুকতে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর কনভয়ে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এরপরই আগ্রাসী মেজাজ ধারণ করে এলাকার সিপিএম কর্মীরা। যা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে ধিক্কার মিছিল বের করা হয়। সেই ধিক্কার মিছিল চলাকালীনও ত্রিপুরার বেশ কিছু এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। অগ্নিসংযোগ করা হয় একাধিক সিপিএম কার্যালয় এবং সংবাদ মাধ্যমের গাড়িতে। ঘটনার সমালোচনা করা হয় তৃণমূলের তরফেও।

এ দিকে, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস অবধি এই ধরনের রাজনৈতিক হিংসা ও হামলার মোট ২০টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং এখনও অবধি ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *