Spread the love

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা মুখবন্ধ খামে কেন? প্রশ্ন হাইকোর্টের 

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

, বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চে উঠে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা।এদিন রাজ্যের তরফে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া হয় আদালতে। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ একপ্রকার ভৎসনার সূরে রাজ্য কে জানায় – ‘ মুখবন্ধ খামে কেন? এখানে লুকাবার কি আছে?’ এদিন আদালতের হাতে সমস্ত নথি তুলে দেওয়া হয়। যদিও মামলাকারীর দাবি-  চলতি বছরে নিয়োগ করা হয়েছে আরও ১৬ হাজার ৫০০ প্রাথমিক শিক্ষককে।  এদিন যে নথি জমা পড়েছে তা মামলাকারীকে খতিয়ে দেখার সুযোগ দেবে আদালত। বলা হয়েছে, সবকিছু খতিয়ে দেখে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে জানাতে হবে নথিতে কিছু ত্রুটি পাওয়া গেলো কিনা? মামলাকারীর আইনজীবী শুভ্র লাহিড়িকে এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । যদিও নথি দেখে তদন্তের জন্য কোনও এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল মামলাকারীর পক্ষ থেকে, তবে তা করা হচ্ছে না। হাইকোর্ট জানিয়েছে নথি খতিয়ে দেখার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।চলতি মাসে  এসএসসির অবস্থানে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সরে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে  কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা।এই মামলায় রাজ্য সরকারের উপর চরম অসন্তুষ্ট হয়ে  ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গত ২০১৪ সালে ১৫ হাজার সফল টেট পরীক্ষার্থীদের রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাস।সেখানে সফলদের যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।বড়সড় শিক্ষক নিয়োগের পর্দাফাস হতে পারে বলে মামলাকারীদের দাবি।হাইকোর্ট এই মামলাটি কে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে মান্যতা দিয়েছে। সফল ১৫ হাজার শিক্ষকদের মাত্র ১৩ দিনে যাবতীয় তথ্য পেশের নির্দেশ অনেকটাই চাপে ফেলে দিয়েছে  রাজ্য কে। যদিও রাজ্যের তরফে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়েছিল।তবে আদালত তা মানেনি।চলতি মাসের ২২ তারিখের মধ্যে তালিকা জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ ছিল।শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে  আগেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। বর্তমানে প্রাথমিক টেট  মামলা গুলি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা চলবে বলে জানা গেছে । প্রধান বিচারপতি এই মামলাটিকে এই জনস্বার্থ মামলায় মান্যতা দেন । তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগ সংক্রান্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তলব করা হয় হাইকোর্টের তরফে।উল্লেখ্য, গত ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটে অন্তত লক্ষাধিক  পরীক্ষার্থী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ হাজার সফল । তাঁরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। তাঁদের যাবতীয় তথ্য তলব করেছে হাইকোর্ট। ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তথ্য জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ ছিল।রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ওই তালিকা যথেষ্ট দীর্ঘ হবে, তাই তালিকা জমা দিতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে হাইকোর্টের তরফে ২২ সেপ্টেম্বরের পর অতিরিক্ত সময় দেওয়ার আরজি খারিজ করে দেয়।  প্রাথমিকভাবে হাই কোর্টের তরফে তথ্য তলব করা হচ্ছে। যদি রাজ্য সরকার সেই তথ্য দিতে না চায় তবে পরবর্তীকালে নির্দেশ জারি করা হবে। নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য হাতে পাওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেই জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।গত ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে টেট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যার জেরে শতাধিক মামলা রুজু হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।আজ ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে চাকরি প্রার্থী দের তালিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *