তদন্তে সিবিআইয়ের গড়িমসি, শর্তসাপেক্ষে জামিন এমপিএস কর্তার
ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শর্তসাপেক্ষে অন্তবর্তী জামিন পেলেন এমপিএস কর্ণধার প্রমথনাথ মান্না । এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি ছিল এই মামলার।সেখানেই মঞ্জুর হয় অন্তর্বর্তিকালীন জামিন,তবে শর্তসাপেক্ষে ।আদালত সুত্রে জানা গেছে, বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ কড়া নির্দেশ দিয়েছে, -‘ এমপিএস চিটফান্ড কাণ্ডে সিবিআইকে তদন্ত শেষ করতেই হবে আগামী ১৬ই জানুয়ারি মধ্যে। তা না হলে পূর্ণ জামিন দিয়ে দেওয়া হবে প্রমথনাথ মান্নাকে’।এদিন শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছেন দুই বিচারপতি। শর্তগুলো হলো, -‘পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে প্রমথনাথ মান্নাকে, সিবিআইয়ের আইও-র সঙ্গেও দেখা করতে হবে সপ্তাহে একদিন করে। নির্দিষ্ট পুলিশ স্টেশনের বাইরে তিনি যেতেও পারবেন না’।উল্লেখ্য , ২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এমপিএস সংস্থা তার ব্যবসার বিরাট বিস্তৃতি ঘটিয়েছিল। বিশেষত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে প্রযুক্তির ব্যবহারে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল মান্নার এই সংস্থা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রামে এমপিএস ফুড পার্ক পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠেছিল। ঝাড়গ্রামের মাটিতে আপেল, কমলালেবু ফলিয়ে দেখিয়েছিল এমপিএস। এই শিল্পকে ঢাল করেই চিটফান্ডের জাল বিছিয়েছিল এমপিএস নামে ওই সংস্থা।প্রমথনাথ মান্নার সঙ্গে তত্কালীন বাম সরকারেরও সুসম্পর্ক ছিল। এমনকি পিএন মান্নার মেয়ের বিয়েতেও হাজির ছিলেন বিমান বসু। সিপিএম যেমন চিটফান্ড নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ে না, তেমন তৃণমূলও সুযোগ পেলেই বলে, প্রমথনাথ মান্নার মেয়ের বিয়েতে কেন গিয়েছিলেন বিমান বসু? এইরকম রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। তবে এই প্রশ্ন বারবারই উঠেছে, চিটফান্ড তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই বিলম্ব কেন? এদিন সেই প্রশ্নই তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নজরদারিতেই চিটফান্ড মামলার তদন্ত চলছে। সিবিআই সমস্ত চিটফান্ড মামলাকে এক জায়গায় করে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে, আইনি ভাষায় যাকে বলা হয় ক্লাব করে নেওয়া। তাতে সারদা, রোজভ্যালি, এমপিএস, সন্মার্গ- সবই রয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারির মধ্যে সিবিআই এমপিএস মামলার তদন্ত শেষ করতে পারে কিনা তার দিকে তাকিয়ে অনেকেই।