‘কলকাতা ৭১ -এ মৃণাল’
শতবর্ষের শ্রদ্ধা
কলকাতা, ১৪ মে: সিনেমার অন্যতম দুই মহীরুহ সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক ঘটকের এক সঙ্গে উচ্চারিত হয় যাঁর নাম তিনি মৃণাল সেন। ১৯৫০-এর দশকে প্রায় সত্যজিতের সঙ্গেই রুপোলি পর্দায় যাত্রা শুরু মৃণালের। রোমান্টিক মানবতাবাদ থেকে তাঁর পা পড়েছে দ্রোহকালের দুনিয়ায়। মৃণাল নিজে বলেছেন, ‘কলকাতার ৭১-এর লিট-মোটিফ হচ্ছে এ কথা বলা যে, আমাদের ইতিহাস হচ্ছে শোষণের ইতিহাস, আমাদের ইতিহাস দারিদ্রের ইতিহাস। শেষ পর্যন্ত আমরা বলতে চাই যে এই শোষণের অবসান একমাত্র হতে পারে প্রতিরোধে, রাজনৈতিক সংগ্রামে।’
সত্তর দশকের উত্তাল ও উচ্ছল সময়। সাদাকালো ছবিতে বাঙালি মধ্যবিত্তের স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ এবং প্রতিবাদের কাহিনি বুনে দিলেন মৃণাল সেন–‘ইন্টারভিউ’, ‘কলকাতা ৭১’, ‘পদাতিক’। তিনটি ছবিই সময়ের ইস্তাহার। যেন কলকাতার বুকে স্টেথোস্কোপ বসিয়ে তুলে আনা! সিনেমার ন্যারেটিভ ধাঁচা ভেঙে পরিচালক তুলে আনছেন বাংলা-কলকাতার নাড়িভুঁড়ি–অসম্ভব দারিদ্র আর ভয়ঙ্কর শোষণ। গণতন্ত্রের বকলমে পুলিশ-প্রশাসন-সরকারের সশস্ত্র সন্ত্রাস।
সমসাময়িক ইতিহাসের ওই ওলটপালট দর্শককে টেনে এনেছিল ‘কলকাতা ৭১’-এর মতো আভাঁ-গার্দ ছবির দিকে। উত্তাল নকশাল আন্দোলনের ঘূর্ণিতে পরিবার থেকে চিরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কোনও প্রিয় জনকে এক ঝলক দেখার আশায় কী ভাবে সাধারণ মানুষ ভিড় করেছিলেন মেট্রো সিনেমায়, সেই স্মৃতিচারণও করেছেন মৃণাল। ইন্টারভিউ, কলকাতা ৭১ আর পদাতিক– মৃণালের কলকাতা ট্রিলজি-তে এমন বেশ কিছু ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে, যা পরিচালক তুলেছিলেন একেবারে জ্বলজ্যান্ত বাস্তব, প্রতিবাদের কলকাতা থেকে। বেপরোয়া, রাগী, আত্মত্যাগী যৌবন দিয়ে গড়া আগুনে সময়ের মধ্যে দিয়েই তখনকার মৃণালের সিনেমা সফর। বারুদের গন্ধমাখা মৃণালের সেই সফর এবং তার সেলুলয়েডি স্মৃতি নিয়েই এবার TV9 বাংলার নিউজ সিরিজ ‘কলকাতা ৭১ -এ মৃণাল’।
দেখুন ১৪ মে, রবিবার, মৃণালেরই ১০০ বছর পূর্তির দিনে। TV9 বাংলায় রাত ১০টায়।