Spread the love

কলকাতা হাইকোর্টের প্রতি কেন ‘অনাস্থা’? ২৯ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে শুভেন্দু কে

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,  
সোমবার নন্দীগ্রাম  মামলার দুইজায়গায় শুনানি ছিল।সুপ্রিম কোর্টের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে ছিল এই শুনানি।কলকাতা হাইকোর্টে বিচারধীন মামলার উপর কোন স্থগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট বলে জানিয়েছেন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২৮ নভেম্বর। অপরদিকে আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে এই মামলার শুনানিতে আদালত শুভেন্দু অধিকারীর কাছ থেকে আগামী ২৯ নভেম্বর এর মধ্যে  লিখিত বক্তব্য জানতে চেয়েছে যে, ‘কেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রতি তাঁর অনাস্থা ‘। কলকাতা হাইকোর্টে।এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১ ডিসেম্বর। গত বিধানসভার নির্বাচনে রাজ্যের সবচেয়ে হেভিওয়েট আসন নন্দীগ্রামের ভোট গণনা মামলার আজ অর্থাৎ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলে। আবার একই ভাবে কলকাতা হাইকোর্টেও শুনানি চলে। তবে আইনজীবীদের মত – ‘যেহেতু শীর্ষ আদালতের শুনানি রয়েছে, তাই শীর্ষ আদালতের শুনানি পরবর্তী নির্দেশ দেখে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ গ্রহণ করবে’। উল্লেখ্য,  সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছেন নন্দীগ্রাম আসনে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাখিল পিটিশনেরই আজ শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে।সম্প্রতি  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে উঠেছিল নন্দীগ্রাম বিধানসভার পুন গননা চেয়ে মামলা। বিচারপতি সর্বপ্রথম মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রীর পিটিশন টি খতিয়ে দেখেছিলেন। আবেদনকারীর আবেদন যথাযথভাবে হয়েছে কিনা, তা দেখা হয়।কেননা নির্বাচনীর ফলাফল প্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যে মামলা দাখিল করতে হয় ভোটপ্রার্থী কে। বিচারপতি শম্পা সরকার এই মামলায় নিস্পত্তি না ঘটা পর্যন্ত সমস্ত নথি সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশনের সিইও কে।ভোট সংক্রান্ত সমস্ত নথি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম বিধানসভার কেন্দ্রে ভোট গণনার দিন ভিডিওগ্রাফি, ইভিএম, ভিভিপ্যাট সবকিছুই সংরক্ষণের আওতায় থাকবে এই মামলার চুড়ান্ত নির্দেশিকা জারি না হওয়া অবধি। কলকাতা হাইকোর্টের তরফে মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী, নির্বাচন কমিশন এবং নন্দীগ্রাম বিধানসভার রিটানিং অফিসার কে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।  ১২ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি ছিল বলে জানা গেছে। ফলাফল প্রকাশের দিন অর্থাৎ গত ২ মে দেখা যায় নির্বাচন কমিশন প্রথম পর্বে তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২০০ ভোটে জিতেছেন বলে ঘোষণা করা হয়। ওইদিন একটু রাতে আবার নির্বাচন কমিশন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর ১৯০০ এর বেশি ভোটে জয়লাভ ঘোষণা করে থাকে। আর এই নিয়েই শুরু হয় তর্কবিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনের ভোটে  পুনরায় গননা চেয়ে মামলা দাখিল করেন। তবে এই মামলার বিচারপর্বে প্রথমে থাকা বিচারপতি কৌশিক চন্দ কে ঘিরে প্রবল আপত্তি দেখা যায় তৃণমূল শিবিরে।তৃণমূল লিগ্যাল সেলের তরফে হাইকোর্টের সামনে কালো মাস্ক পড়ে বিক্ষোভ, বিভিন্ন নেতার বিচারপতির আইনজীবী পেশায় থাকার সময় বিজেপি নেতাদের সাথে ছবি পোস্ট করতে দেখা যায়।এমনকি বিচারপতির স্থায়ীত্ব নিয়ে বিরোধিতা করতে দেখা যায়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বিচারব্যবস্থা কে কলুষিত করার জন্য ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানা আদায় করার নির্দেশ দিয়ে গত ১২ জুলাই এই মামলা থেকে অব্যাহতি নেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। এরপর  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে উঠেছিল নন্দীগ্রাম মামলাটি।সেখানে সব পক্ষদের কে নোটিশ পাঠিয়ে এই বিধানসভার সমস্ত ভোট সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।  ১২ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি ছিল। এরেই মধ্যে কলকাতা বদল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি চললেও কোন নির্দেশ জারি করা হয়নি। তবে কলকাতা হাইকোর্ট এদিনকার শুনানিতে শুভেন্দু অধিকারীর কাছ থেকে কেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রতি তাঁর অনাস্থা, তা লিখিত ভাবে জানাবার নির্দেশ দিয়েছে আগামী ২৯ নভেম্বর এর মধ্যে। আগামী ১ ডিসেম্বর  কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *