Spread the love

ইসিএল কে ভৎসনা করে আসানসোল সিপি কে তলব হাইকোর্টের 

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

বাংলায় পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়ার একাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে ভূগর্ভস্থ কয়লা ভান্ডার।এই কয়লা ভান্ডার লুটের অভিযোগ বিগত বাম জমানায় যেমন ছিল ঠিক তেমনি তৃণমূল আমলেও কয়লা লুটের অভিযোগ রয়েছে। সিবিআই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কয়লা পাচার মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বারো বছর পুরাতন এক জনস্বার্থ মামলায় ইসিএল কে ভৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি আগামী ১১ নভেম্বর  তলব করা হয়েছে আসানসোল পুলিশ কমিশনার সুধীর কুমার নীলিকান্তম কে।বুধবার এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। এদিন সিবিআইয়ের তরফে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে আদালতের কাছে।  পার্থ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি এই জনস্বার্থ মামলাটি গত ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্টে দাখিল করে থাকেন।রাজ্যে অবৈধ কয়লা খাদান, অবৈধ কয়লা সরবরাহ বন্ধের দাবি জানিয়ে গত ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। আদালতে জনস্বার্থ মামলাকারীর অভিযোগ, -‘বেআইনি কয়লা খাদান ও কয়লা পাচার অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে’। এই মামলায় প্রকৃত অবস্থা জানাতে এদিন বর্ধমান রেঞ্জের আইজি ভরত লাল মিনা ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির ছিলেন। তিনি অবশ্য আদালত কে  জানিয়ে দেন -‘. এই বিষয়টি তার এলাকায় আসে না। বীরভূম ও হুগলি জেলা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি তাঁর এলাকা নন’। এদিকে ইসিএল-এর তরফে আইনজীবী শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই দিয়ে সংশ্লিষ্ট মামলার দাবি জানিয়েছেন আদালতের কাছে । যার প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ভর্ত্‍সনার মুখে পড়ে ইসিএল।আদালত জানায় , ‘বেআইনি কয়লা খাদান মামলা ২০০৯ সালে দায়ের হয়। এতদিন ধরে কি ঘুমাচ্ছিলেন আপনারা? কেন পদক্ষেপ হয়নি? কেন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেননি?’এদিন অবশ্য বেআইনি কয়লা খাদান নিয়ে একটি সিল করা খামে রিপোর্ট দিয়েছে সিবিআই। রাজ্যের তরফেও রিপোর্ট পেশ করা হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনারকে আগামী  ১১ নভেম্বর আদালতে  হাজির থাকতে হবে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চ  ।প্রসঙ্গত, চলতি বছর কয়লা পাচার নিয়ে মামলার তদন্ত চালাচ্ছে  সিবিআই। এই জন্য ৩০ জন সিবিআই অফিসারকে নিয়ে গঠন করা হয় ‘স্পেশাল ৩০’ টিম। রানিগঞ্জ, জামুরিয়া, আসানসোলের বিভিন্ন খাদানে কীভাবে কয়লা তোলা হয় তা সরজমিনে ক্ষতি দেখেছে সিবিআই। অবৈধভাবে কত কয়লা পাচার করা হয়েছে, সেই হদিশ পেতেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তদন্তে নেমে সিবিআই জানিয়েছে।-‘ এ রাজ্যের বিভিন্ন খনি থেকে বেআইনিভাবে কয়লা তুলে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে পাচার করা হত’।সম্প্রতি  কয়লাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের কোনও প্রভাব পড়েছে কিনা ইসিএল-কে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিল সিবিআই। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে ইসিএল রিপোর্টে জানায়, তদন্ত শুরু হওয়ার পর অনেকটাই বেড়েছে কয়লা সরবরাহ। মাস খানেক আগে ইসিএল জানায়, ৪৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৩ শতাংশ হয়েছে কয়লা সরবরাহ। বেড়েছে কয়লা পাঠানোর পরিমাণও। ইসিএল জানিয়েছে, ৬৩ শতাংশ থেকে বেড়ে তা হয়েছে ৯০ শতাংশ। একইসঙ্গে ওই রিপোর্টে ইসিএল জানিয়েছে, কয়লা বুকিং বেড়েছে ৪৭৮ কোটি টাকার মতো ।এই জনস্বার্থ মামলায় গত ২০১৫ সালে রাজ্য কে রিপোর্ট দিয়েছিল ইসিএল।আগামী ১১ নভেম্বর আসানসোল পুলিশ কমিশনার আদালত কে কি তথ্য দেন?  তার দিকে তাকিয়ে অনেকেই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *