আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো ‘আমরা দশভূজা’ পত্রিকার,
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,
সাহিত্যকে ভালবেসে সাহিত্যের টানে সুদূর জামশেদপুর থেকে কলকাতায় ছুটে এলেন বাংলার মেয়ে কৃষ্ণা চক্রবর্তী। গত ১৯ শে সেপ্টেম্বর শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ ট্রাস্ট মেমোরিয়াল ভবন -এ তারই সম্পাদনায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো 'আমরা দশভূজা' পত্রিকার বৈশাখ ও শারদ সংখ্যার। নবীন-প্রবীণ কবি-সাহিত্যিক মিলিয়ে প্রায় ১৩৫ জনের কবিতা বইটিতে স্হান পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে কবি অসীম দাস, শ্রীসদ্যোজাত, ক্ষমা মুখার্জী, তপন কুমার বিশ্বাস, সুনীল সরকার, প্রদীপ আচার্য, অভিজিৎ চ্যাটার্জী,রঞ্জনা কর্মকার, মন্দিরা মুখার্জী প্রমুখ প্রায় সত্তর জন কবি সাহিত্যিককে গলায় উত্তরীয়, হাতে স্মারক ও মানপত্র দিয়ে সম্মান জানানো হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক অসীম দাস।
অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণীয় অংশ ছিল শিল্পী দাস, শ্রাবনী পন্ডিত, মধুছন্দা গাঙ্গুলী, রষ্মিতা দাস, রুমকী দত্ত, শ্রাবনী মুখার্জী , নন্দিতা চ্যাটার্জী, মনীষা বন্দোপাধ্যায়, মিঠু মন্ডল ও কাকলী দত্ত প্রমুখ দশজন মহিলা কবিদের নিয়ে দর্শকদের সামনে প্রকাশ্য মঞ্চে আয়োজিত প্রতিযোগিতা। বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর দিয়ে শেষপর্যন্ত এই দশজনের মধ্যে দশভূজার শিরোপা জিতে নেন কবি মণীষা বন্দোপাধ্যায়।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অতিথিদের স্বাগত জানান পত্রিকার সম্পাদিকা কৃষ্ণা চক্রবর্তী, সহ সম্পাদক বিপ্লব ভট্টাচার্য ও সহ সম্পাদিকা রাখী চক্রবর্ত্তী। স্বরচিত কবিতা পাঠ, সাহিত্য সম্বন্ধে প্রবীণদের আলোচনা ইত্যাদিতে ভরপুর এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পত্রিকা গোষ্ঠীর সভাপতি শ্রাবণী ঘোষ ও সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট কবি শুভাশিস সরকার । সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সহ-সম্পাদিকা রাখী চক্রবর্তী, সহ সম্পাদক বিপ্লব ভট্টাচার্য, স্বাতী মুখার্জি ও ববি সরকার। সবার মিলিত প্রয়াসে এটি একটি উচ্চ মানের মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।
প্রসঙ্গত ছোট থেকেই বাংলার মেয়ে তথা বর্তমানে জামশেদপুরের গৃহবধূ কৃষ্ণা চক্রবর্তীর সাহিত্যের প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ ছিল। বিয়ের পরও তিনি তার সাহিত্যচর্চা চালিয়ে যেতে থাকেন। স্বামীর দেওয়া হাত খরচের টাকা দিয়েই তিনি পুরোপুরি মহিলা দ্বারা পরিচালিত 'আমরা দশভূজা' পত্রিকা প্রকাশ করেন। প্রথমে স্বামীর আপত্তি থাকলেও পরে তিনিও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে পত্রিকার পরিচালনা গোষ্ঠীতে পুরুষ কবিরাও স্হান পান।
কৃষ্ণা চক্রবর্তীর প্রতিটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন গুড়াপের বিশিষ্ট কবি তথা সমাজসেবী মন্দিরা মুখার্জ্জী। তিনি বললেন কৃষ্ণার আন্তরিকতার জন্যই এবারও অসুস্থ শরীর নিয়ে ছুটে এসেছি। একজন গৃহবধূ হয়েও বাংলা সাহিত্যকে ভালবেসে যেভাবে তিনি জামশেদপুর থেকে ছুটে এসেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
অন্যদিকে উপস্থিত কবি-সাহিত্যিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে কৃষ্ণা দেবী বললেন- সাহিত্যের প্রতি আমার টান ছোট থেকেই ছিল। ইচ্ছে ছিল মেয়েদের জন্য একটি পত্রিকা প্রকাশ করার। সবার সহযোগিতায় সেটাও পেরেছি। আশাকরি আগামী দিনে এটি বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পত্রিকায় পরিণত হবে।