গোপাল দেবনাথ : বাগনান, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১। করোনা অতিকালীন সময়ে এবং তার পরবর্তী সময়ে ভারতীয় সিনেমা বিশেষ করে বাংলা সিনেমার বর্তমান হাল প্রায় সকলেরই জানা আছে।
এই সময়কালে রয়েজ মিডিয়া এন্ড এন্টারমেন্ট প্রোডাকশন প্রযোজিত এবং ফেস নিবেদনে অন্যধারার সিনেমা “অগ্নিমন্থন”। এই অগ্নিমন্থন নামের মধ্যেই যথেষ্ট কৌতূহল লুকিয়ে আছে। হয়তো বর্তমান সময়কালের সাথে এই সিনেমার চিত্রনাট্য মিলেও যেতে পারে বলে আমার ধারনা।
এই সিনেমার ভাবনায় ও পরিচালনায় আছেন বিশিষ্ট প্রযোজক এবং একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক প্রবীর রায়। প্রবীর বাবু কলকাতা দুরদর্শন কেন্দ্রের প্রায় জন্মলগ্ন থেকে বহু ভালো অনুষ্ঠান দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই প্রবীণ পরিচালক ‘অগ্নিমন্থন’ সিনেমার আগে বহু অর্থ ব্যয় করে মহানায়ক উত্তমকুমার এর জীবনী নিয়ে ‘যেতে নাহি দিব’ নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রবীর বাবুর কথা অনুযায়ী মহানায়কের পরিবারের আইনী ঝঞ্ঝাটের কারণে আজও যেতে নাহি দিব সিনেমাটি দর্শকদের সামনে পেশ করতে পারেন নি। আগের সিনেমায় বহু অর্থ ব্যয়ের ক্ষত নিয়ে এবং শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়েও সিনেমার টানে আবার নতুন করে সিনেমার শ্যুটিং নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। করোনার প্রকোপ একটু কমতেই ইতিমধ্যে ১১দিনের শ্যুটিংপর্ব শেষ করেছেন।
প্রযোজক সংস্থার আমন্ত্রণে এই প্রতিবেদক হাওড়া জেলার বাগনানে আনটিলা সান্তোষপুরে ‘আরণ্যক ইকো রিসোর্টে’ গিয়েছিলেন। প্রবীর বাবু এই রিসোর্টের মধ্যে রাত্রিবাস এবং আউটডোর শ্যুটিং এর আয়োজন করেছিলেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুরো শ্যুটিং ইউনিট পৌঁছে গিয়েছিল আরণ্যক ইকো রিসোর্টে। তিনদিন ধরে চললো অগ্নিমন্থন এর শ্যুটিং পর্ব। শ্যুটিং স্পট এর যাওয়ার রাস্তাটা সরু হলেও প্রাকৃতিক দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়।
শ্যুটিং এর জায়গায় গিয়ে দেখা গেল শিল্পী থেকে কলাকুশলী সকলেই ব্যস্ত তার মধ্যেই চলছে প্রাতঃকালীন আহার পর্ব। একমিনিট পর্য্যন্ত সময় নষ্ট করতে কেউ রাজি নন। চিত্রনাট্যকার অশোক রায় শিল্পীদের সংলাপ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শ্যুটিং স্পটে গিয়ে দেখা গেল প্রবীর বাবু খুবই ঠান্ডা মাথায় শিল্পী ও কলাকুশলীদের কাছ থেকে ভালো কাজ আদায় করে নিচ্ছেন।
লাঞ্চ ব্রেকের আগে আমাদের যেতে হলো শ্যুটিং ইউনিটের থাকার জায়গা আরণ্যক ইকো রিসোর্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নদীর ধারে।
শিল্পীদের অপূর্ব সুন্দর জায়গায় দৃশ্যগ্রহণ করলেন প্রবীর বাবু সহ পুরো ইউনিট। ওই গ্রামের বেশ কয়েকজন মেয়েকে ওই শ্যুটিং এ অংশগ্রহণ করতে দেখা গেল।
ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে কথোপকথন পরে জানাগেল এরা সবাই কলেজ ছাত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অন্যদিকে নদীর ধারে এক প্রেমিক যুগলের হাসি খুশি ভরা অন্তরঙ্গ দৃশ্যের শ্যুটিং এর সাথে সাথে অন্যান্য দৃশ্যগ্রহনের কাজ শেষ হতেই লাঞ্চ ব্রেক ঘোষণা করা হলো।
এই প্রতিবেদক ও এই সিনেমায় একটি বিশেষ ভূমিকায় অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেন। লাঞ্চ ব্রেকের পরে শেষ পর্বের দৃশ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
পুরোনো অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাথে অনেক নতুন ছেলে মেয়েদের এই সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যাবে। প্রযোজনা সংস্থার আশা সবকিছু ঠিক থাকলে এই বছরের শেষে “অগ্নিমন্থন” সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
ভাবনা ও পরিচালনা – প্রবীর রায়।
চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন – অশোক রায়।
চিত্রগ্রহণ – শান্তনু রায়।
শিল্প নির্দেশনা – গৌতম বসু।
সম্পাদনা – ঋতম ভট্টাচার্য।
সঙ্গীত পরিচালনা – বুদ্ধদেব গাঙ্গুলী।
রূপসজ্জা – বিদিশা বিশ্বাস।
নেপথ্য কণ্ঠ – তনুশ্রী দেব, বিশ্বজিৎ দাসগুপ্ত ও অমিত গাঙ্গুলী।
প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন :- মেঘনাদ ভট্টাচার্য, মৌমিতা গুপ্ত, অনিন্দ্য সরকার, মৈত্রেয়ী মিত্র, সোনালী ঘোষ, ঋক দে, সুবীর ভট্টাচার্য, অশোক রায়, রূপসা পাল, অশনি দাস, হৃদন চৌধুরী এবং নবাগতা বৈশালী মজুমদার।
এ ছাড়াও অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা মুখার্জী, সুকন্যা শীল, গোপাল দেবনাথ সহ অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ ।