৩০ এপ্রিলের আগেই রাজ্যের সব পুরসভায় ভোট, হাইকোর্ট কে জানালো রাজ্য
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
রাজ্যের শতাধিক মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভার ভোট পর্ব নিয়ে আশার আলো দেখালো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পুরভোট সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে ৩০ এপ্রিলের আগেই রাজ্যের সব পুরসভায় ভোট শেষ হবে,তা জানানো হয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে পুরভোট সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।এদিনই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের সব পুরসভায় কেন এক সঙ্গে ভোট না হয়ে পৃথক ভাবে কলকাতা পুরসভার জন্য নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হল? তা পুরভোট সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় হাইকোর্টে সে প্রশ্ন তোলে বিজেপি।সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে পুরভোট নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দাখিল মামলায় উল্লেখ রয়েছে যে, কেন রাজ্যের সব ক’টি পুরসভায় বকেয়া ভোট এক সঙ্গে করানো হচ্ছে না? এই মামলার শুনানিতে গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীকে প্রশ্ন করে- , ‘কেন সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করানো হচ্ছে না?’ এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী আদালত কে জানিয়েছিলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে হলফনামা জমা দেব’।গত ১৬ নভেম্বর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী হাইকোর্ট কে জানিয়েছিলেন, জনস্বার্থ মামলার শুনানি যত দিন চলবে, তত দিন পুরভোট সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না। বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতা প্রতাপের এবং পুরভোট সংক্রান্ত অন্য একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি-পর্বে বিজেপি-র আইনজীবি জানান, ”কমিশন জানিয়েছিল, কোভিড পরিস্থিতির জন্য তারা এক সঙ্গে ভোট করতে চাইছে না। ত্রিপুরায় ভোট হচ্ছে। ভোটে আপত্তি নেই। কিন্তু এমন কথা বলার পরেও বিজ্ঞপ্তি কেন প্রকাশিত হল?” এদিন এজলাসে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ জারিরও দাবি জানান তিনি। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সে সময় জানতে চান, হলফনামায় কি কবে বাকি পুরসভাগুলির ভোট হবে, তা বলা হয়েছিল? কবে বাকি পুরসভাগুলির ভোট হবে, তা জানতে চান তিনি। তখন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, -‘ কলকাতার চিকিত্সা ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় আগে ভোট হচ্ছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ধাপে ধাপে সব পুরসভায় ভোটগ্রহণ হবে’। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ছিল পুরভোট সংক্রান্ত মামলার, তবে সেই শুনানি হয়নি। গত সোমবার দু কলকাতা হাইকোর্টে পুরভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলেছ। সেখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশন হলফনামায় রাজ্য জানায়, -‘ প্রথম দফায় কলকাতা ও হাওড়া পুরসভা নির্বাচন হবে এবং ধাপে ধাপে পরবর্তী পুরসভার নির্বাচন হবে’। পুরসভা ভোট নিয়ে বিজেপির দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছিল রাজ্য। তাদের বক্তব্য, রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন আলোচনার ভিত্তিতে প্রথম দফায় এই দুই পুরসভার ভোট হোক। এর পর ধাপে ধাপে অন্য পুরসভায় ভোট গ্রহণ হবে।এদিকে এই বিষয়ে রাজ্য সরকার করোনা টিকাকরণের বিষয়টিও তুলে ধরে। তাতে জানানো হয়, দ্বিতীয় ডোজ কলকাতা ও হাওড়ায় বেশি হয়ে গিয়েছে, তাই সেই প্রেক্ষিতে এই দুই জায়গায় আগে পুরভোট হতেই পারে। অন্যদিকে, এই মুহূর্তে রাজ্যের কোন জেলায় কোথায় কোভিড পরিস্থিতি কী রকম, কোথায় কত শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে দাখিল হলফনামায়। গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে এই পুরভোট নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলার মূল বিষয়বস্তু ছিল, রাজ্যের সব পুরসভার ভোট কেন একসঙ্গে করানো হচ্ছে না।আগে মোটামুটি ঠিক হয়ে গিয়েছিল যে ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা এবং হাওড়ায় পুরভোট হবে। জানা গিয়েছিল যে, বিরোধীরা একসঙ্গে নির্বাচন এবং গণনা করার দাবি জানালেও আপাতত কলকাতার ১৪৪ টি ওয়ার্ড এবং হাওড়ার ৫০ টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হবে।গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পুরভোট নিয়ে মামলার শুনানি হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের তরফে এজি জানান – আগামী ৩০ এপ্রিলের আগেই রাজ্যের সব পুরসভায় ভোট ধাপে ধাপে শেষ করা হবে’।