২২ ডিসেম্বর আসানসোল সিবিআই এজলাসে বিকাশ মিশ্র কে পেশ করার নির্দেশ
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
সোমবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল সিবিআই এজলাসে বিকাশ মিশ্রের মামলার শুনানি হয়।এদিন বিকাশ মিশ্রের আইনজীবী তার মক্কেলের জামিন চাইলে বিচারক তা খারিজ করে দেন।আগামী ২২ ডিসেম্বর আদালরে সশরীর হাজিরার নির্দেশ দেয় আসানসোল সিবিআই এজলাস। এদিন আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে বিকাশ মিশ্রের মামলার শুনানি ছিল। যদিও আগেই অভিযুক্ত বিকাশ কলকাতায় চলে আসায় সশরীরে এজলাসে হাজির হতে পারেননি তিনি। উপস্থিত ছিলেন বিকাশ মিশ্রের আইনজীবী। কয়লা কান্ডে বিকাশের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করলে সিবিআইয়ের আইনজীবী তার বিরোধিতা করেন। সব শুনে বিচারক বিকাশ মিশ্রকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর ফের তাঁকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।গত শনিবার সিজেএম আদালতে বিকাশ মিশ্রের দু’দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো তাঁকে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করার কথা ছিল সোমবার। তবে বিকাশ মিশ্র গত রবিবার রাতে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই পরে স্থানান্তর করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সে কারণেই সোমবার তিনি সশরীরে আদালতে হাজির হতে পারেননি।আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে গত শুক্রবার কয়লা পাচারকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিকাশের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে বিচারক জানিয়েছেন আদালতে , বিকাশ মিশ্র যেদিন সুস্থ হবেন, সেদিন তাঁকে এজলাসে হাজির করতে হবে। তবে সেই নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার কলকাতার বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিত্সাধীন বিকাশ মিশ্রকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। যদিও এই সিবিআই দফতরের ভিতরে যাননি বিকাশ। বাইরে গাড়িতেই বসেছিলেন। এরপর সেখান থেকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে। নিয়মমতো শনিবার ও রবিবার সিবিআই আদালত বন্ধ থাকে। তাই শনিবার সন্ধ্যায় শুনানি হয়েছিল আসানসোল আদালতের সিজিএমের দায়িত্বে থাকা চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এজলাসে।কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে।লালার টাকা যিনি প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে দিতেন বলে অভিযোগ সেই বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ। সিবিআই প্রথম থেকেই বলে এসেছে, কয়লার কালো টাকা কলকাতার প্রভাবশালীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া কিংবা প্রভাবশালীদের একাংশের টাকা কীভাবে এই কয়লার ব্যবসায় ঢুকেছে তার পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতেন এরা। বিনয় ও বিকাশের একাধিক ভুয়ো ব্যবসা রয়েছে বলেও অভিযোগ। সেই ব্যবসাতেও এই কয়লার টাকা খাটানো হতো বলেই জানতে পেরেছে সিবিআই। সেই টাকার হদিশও গোয়েন্দারা পেয়েছেন। কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে।কার কাছে কোথায় কত টাকা পৌঁছেছে তার একটা স্পষ্ট তথ্য সিবিআই এবার পেতে পারে বলেই মনে করছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার কয়লা-মামলায় অন্যতম তাত্পর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতারি। কারণ, বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কয়লার অবৈধ টাকা লেনদেনের সিংহভাগটাই বিকাশ দেখতেন। বিকাশ মিশ্রকে এর আগে ইডির গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছিলেন দিল্লিতে। এক মাস তিনি জেলেও ছিলেন। এর পর সেখান থেকে জামিন পান। এবার সিবিআইয়ের হেফাজতে সেই বিকাশ। যদিও তাঁকে সোমবারও আদালতে হাজির করতে পারল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।আগামী ২২ ডিসেম্বর আসানসোল সিবিআই এজলাসে বিকাশ মিশ্র কে পেশ করার নির্দেশ রয়েছে। জানা গেছে, সিবিআই আধিকারিকরা বর্ধমান মেডিকেল এবং এসএসকেএম মেডিকেল হাসপাতালে বিকাশ মিশ্রের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র অত্যন্ত গুরত্ব সহকারে পর্যালোচনা করছেন।