হিডকোতে পার্টি অফিস, তমলুকে ১৫০ কোটির বেআইনী ফ্ল্যাট ভাঙতে বললো হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবারই দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামী আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করেছে। শুধু তাই নয় রাজ্যের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।ঠিক একই দিনে বে আইনী নির্মাণ নিয়ে ফের কড়া অবস্থান নিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। যে হিডকো-র কাঁধে শহরের উন্নয়নের দায়িত্ব, তাদের জমিতে কেন এভাবে একের পর এক নির্মাণ হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় অবিলম্বে শাসক দলের দলীয় কার্যালয় ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।বিভিন্ন জায়গাতে সরকারি সম্পত্তি দখল করে পার্টি অফিস গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে বারবার। এবার সেই একই অভিযোগ উঠেছে নিউটাউনের হিডকোতেও। অভিযোগ, হিডকোর জমি দখল করে একাধিক রাজনৈতিক কার্যালয় গড়ে উঠেছে। এবার সেই বেদখল করে গড়ে তোলা পার্টি অফিস সরিয়ে নেওয়া বা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।হিডকোর জমি দখল করে গড়ে তোলা পার্টি অফিস সরানো বা ভেঙে ফেলার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তাদের জমিতেই বেআইনি ভাবে পার্টি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু একটি পার্টি অফিস নয়, হিডকোর জমিতে এমন ৩৫ টি আরও রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছে, দাবি মামলকারীর।এই বিষয়ে এদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহা হিডকোর আইনজীবীকে বলেন, -‘ কেন নিজেদের সম্পত্তি রক্ষা করতে পারছেন না? দখল হয়ে যাচ্ছে ফুটপাত! নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে! আপনাদের কি কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই?’অন্য জায়গায় সরাতে হবে পার্টি অফিস।তাদের জমিতেই যে বেআইনিভাবে পার্টি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে, সেটা যাচাই করে রিপোর্ট দিয়েছিল হিডকো। শুধু একটি পার্টি অফিস নয়, হিডকো-র জমিতে এমন ৩৫ টি আরও রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছেন মামলকারী। নিউ টাউন ও রাজারহাট এলাকায় এই ধরনের নির্মাণ আছে বলে অভিযোগ ওঠে আগেই। হিডকো-র তরফে নোটিসও দেওয়া হয়েছিল ওই পার্টি অফিসগুলিকে। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে।উল্লেখ্য, কলকাতা পুরনিগমকেও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে হাইকোর্টে। বিশেষত গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে পড়ার পর এই প্রশ্ন আরও বেশি করে সামনে এসেছে। কেন কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট।ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বে আইনী নির্মাণ ভাঙতে কলকাতা পুরসভা কে পুলিশ কে সাথে নিয়ে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে কড়া নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এর অন্য বেঞ্চ। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বহুতল আগামী ৩ মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তমলুক পুরসভাকে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়।বেসমেন্ট ছাড়াই সাত তলা বিল্ডিং নির্মাণ হয়েছে বলে মামলাকারীর অভিযোগ। যেখানে বেসমেন্ট, একতলা সহ ৫ তলা বিল্ডিং তৈরির অনুমতি ছিল। এছাড়াও একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ফ্ল্যাটের জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া থাকলে তা সুদসহ ডেভেলপারদের মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বহুতলে ইতিমধ্যেই যাঁরা বসবাস করছেন,তাঁদের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য ফ্ল্যাট কিনেছেন তাঁদেরও সুদ সহ টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।জানা গেছে , তমলুক ডাউনটাউন এনক্লেভ। তা তিন মাসে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। ৭ ব্লকের ২০৮১৭ বর্গমিটার বহুতল ভেঙে দিতেই নির্দেশ। বেসমেন্ট ছাড়াই ৭ তলা বিল্ডিং। নির্ধারিত আয়তনের বেশি বহুতল নির্মাণ করা হয়েছে বলেই জানা যায়। আর এই নির্দেশ নিয়ে ঘোর বিপাকে আবাসিকরা। তমলুক শহরের এই বহুতলে বসবাস করে প্রায় ১৫২ টি পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতে এই আবাসন ভেঙে দেওয়ার নির্দেশের খবর পাওয়ার পর থেকেই আতঙ রয়েছে এলাকায়।