হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হাইকোর্টে,
মুকুল বিশ্বাস ,
চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে উঠে ভারতীয় ক্রিকেট দলের বোলার মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে মামলা। এই মামলাটি দায়ের করেন হাসিন জাহানের বাবা মহম্মদ হোসেন এবং মা নাজমা খাতুন। তবে চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি শেষে এই মামলা খারিজ করে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয় -‘ নিম্ন আদালতে চলা মামলায় হাইকোর্ট কোনো হস্তক্ষেপ করবে না’। কেন হাসিন জাহানের বিরুদ্ধে তাঁরই বাবা মা মামলা করলেন? প্রশ্ন উঠাটা স্বাভাবিক। জানা গেছে, বীরভূমের সাঁইথিয়া গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হোসেন এবং নাজমা খাতুনের বড় মেয়ে হাসিন জাহান, ছোট ছেলে তারিক পারভেজ। হাসিনের ছোট ভাই বাবা মায়ের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকলেও তাদের সঙ্গে কোনও রকম সম্পর্ক রাখেননি। তবে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী জুহির সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল হাসিনের। পরিবারের আর্থিক সুরক্ষার জন্য স্ত্রী এবং একমাত্র পুত্র সন্তানের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বীমা করে রেখেছিলেন তারিক। গত ২০২১ সালে মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। নিয়ম অনুসারে তাঁর স্ত্রী জুহি জীবন বীমার একমাত্র দাবিদার ছিলেন। তবে তারিক মারা যাওয়ার পর তাঁর সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে শুরু হয় বিবাদ।ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার যাবতীয় চিকিত্সার খরচ বহন করেছিলেন হাসিন জাহান। ভাই মারা যাবার পর তাঁর স্ত্রী কিছুদিনের জন্য বাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে অভিযোগ ওঠে শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসার পর শ্বশুর তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি এবং সাঁইথিয়া পুলিশ স্টেশনে একের পর এক অভিযোগ দায়ের করেন জুহির বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র বৌমার জরিমানা নয়, মেয়ে হাসিন জাহানের বিরুদ্ধেও থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করে হাসিন জাহানের বাবা।ভাবির পাশে দাঁড়ানোর জন্য হাসিনের বাবা-মা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছেন বলে অভিযোগ হাসিন জাহানের।অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে স্থানীয় থানার পুলিশ। বর্তমানে বীরভূমের সিউড়ি জেলা আদালতে চলছে এই মামলা। এরপর হাসিন জাহানের বাবা সমস্ত তথ্য গোপন করে কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন বৌমা এবং তার মেয়ের বিরুদ্ধে। তবে চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাস উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নির্দেশ দেয়, -‘ তদন্তে পুলিশের কোনও গাফিলতি নেই। ভবিষ্যতে যদি কোনও অশান্তি বা সমস্যা তৈরি হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া নিম্ন আদালতের যে সমস্ত মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্ট তাতে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না’। এতে স্বস্তি পেলেন হাসিন জাহান ও তাঁর ভাবি।