বেনাপোল চেকপোস্টে বর্ধিত ভ্রমণ কর কার্যকর
কাজী নূর।। চলতি ২০২৩- ২৪ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ ভ্রমণে ভ্রমণ কর দ্বিগুণ করার প্রস্তাব পেশ করেন এবং সেটি সংসদে পাশ হওয়ার পর ১লা জুলাই শনিবার সকাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের বর্ধিত ভ্রমণ কর বাবদ ১ হাজার টাকা করে প্রদান করতে হচ্ছে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক বুথে। সেই সঙ্গে রয়েছে আরো ৫২ টাকা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি। এ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ভারত গমনাগমনকারী সাধারণ ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে প্রতি ১ জন যাত্রীর ভ্রমণ কর বাবদ ৫০০ টাকা এবং ৫২ টাকা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি নেয়া হতো। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ১ জুলাই ২০২৩ সকাল থেকে ভ্রমণ কর বাবদ ১ হাজার টাকা এবং প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি ৫২ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
সূত্রটি আরো জানায়, বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি যাত্রী ভারতে চিকিৎসা, লেখাপড়া, ভ্রমণ, ব্যবসা সংক্রান্ত ও আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যান। ঈদের ছুটির চার দিনে মোট ১৬ হাজার মানুষ ভারতে গেছেন। এর মধ্যে ঈদের আগের দুই দিনে ৪ হাজার করে মোট ৮ হাজার, ঈদের দিনে ৩ হাজার ও ঈদের পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার ৫ হাজার ৯০ যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী রয়েছেন ৪ হাজার ৮০০ জন। ভারতীয় নাগরিকরাও কমবেশি একই ভাবে বাংলাদেশে আসেন।
বিশেষ করে ক্যান্সার, হার্ট, লিভার, কিডনি বা জটিল রোগে আক্রান্ত শত শত অসহায় রোগীরা প্রতিনিয়ত ভারতে যান চিকিৎসা নিতে।
বেনাপোল কাস্টমসের একটি সূত্র জানায়, ১২ বছর বয়স পর্যন্ত যাত্রীদের ভ্রমণ কর অর্ধেক করা হয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী যাত্রী, অন্ধ ব্যক্তি, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বা স্ট্রেচার ব্যবহারকারী অথবা পঙ্গু ব্যক্তিরা ভ্রমণ কর ছাড়াই ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন।
ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী শ্রী কৃষ্ণপদ বলেন, গত ২০ জুন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। আজ ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ভ্রমণ কর জমা দিতে গেলে ১ হাজার টাকা ভ্রমণ কর পরিশোধ করতে হয়েছে। সেই সাথে আরো ৫২ টাকা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি নিয়েছে। মোট ১ হাজার ৫২ টাকা দিতে হলো। একমাস আগে যখন এসেছিলাম তখন নিয়েছিল ৫৫২ টাকা। এ সময় ভারত গমনাগমনকারী অধিকাংশ যাত্রী সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি বর্ধিত ভ্রমণ কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বাংলাদেশি যাত্রী আহসানুল হক বলেন, পাসপোর্টে ভারত ও বাংলাদেশ চলাচলে বর্ধিত ভ্রমণ কর প্রত্যাহার করা দরকার। তাহলে দুই দেশের মধ্যে আরো মানুষজন চলাচল বাড়বে। তিনিও ভ্রমণ কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান হাবীব বলেন, ভ্রমণ করের বিষয়ে যাত্রীরা অফিসে এসে জানতে চাইলে বলেছি, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এটা সরকারের বিষয়। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি, এবার বাজেটে ভ্রমণ কর বর্ধিত করে ৫০০ টাকার স্থলে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে।
বেনাপোল স্থবন্দরের পরিচালক মোঃ আব্দুল জলিল বলেন, ২০২৩- ২৪ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্রমণ কর ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজ শনিবার থেকে বেনাপোল বন্দরে কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে যাত্রীরা ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর পরিশোধ করে ভারতে যেতে পারতেন।